spot_img

― Advertisement ―

spot_img
প্রচ্ছদরাজনীতিআশুলিয়ায় শহীদ পরিবারের সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগ, মির্জা ফখরুলের ক্ষোভ

আশুলিয়ায় শহীদ পরিবারের সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগ, মির্জা ফখরুলের ক্ষোভ

মোঃ আসিফুজ্জামান আসিফ, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টারঃ জুলাই গণঅভ্যুত্থনে শহীদ পরিবারের সদস্যদের অভিযোগে সরকার ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শহীদ পরিবারের একজন সদস্য অভিযোগ করেন, তার স্বামীকে পুড়িয়ে হত্যার পর সরকার কিংবা কোনো প্রশাসনিক সংস্থা তাদের পাশে দাঁড়ায়নি। এ প্রসঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমি নিজে ঢাকা ডিসিকে ফোন করেছিলাম। সরকার অঙ্গীকার করেছিল শহীদ পরিবারকে ১০ লাখ টাকা এবং আহতদের চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয়ভার বহনের। কিন্তু এখানে মাত্র দু’জনকে পেয়েছি যারা এই অর্থ পেয়েছেন।”

বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেল ৪টায় নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের আশুলিয়ার শ্রীপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন দারুল ইহসান ট্রাস্ট পরিচালিত তাহফিযুল কোরআনিল কারিম ফাজিল (স্নাতক) মাদ্রাসা মাঠে ঢাকা জেলা বিএনপির আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘নারকীয় জুলাই’ শীর্ষক জনসভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, “যাদের পুড়িয়ে মারা হয়েছে, তাদের মধ্যে একজন তখনও জীবিত ছিলেন। তারপরও তাকেও পুড়িয়ে ফেলা হয়। শহীদ পরিবারের সদস্য অভিযোগ করেছেন, তার স্বামীকে হত্যার পর কেউ খোঁজ নেয়নি, কোনো সাহায্য করেনি। এটা রাষ্ট্র ও প্রশাসনের ভয়াবহ ব্যর্থতা।”

সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “মূল কথা হলো— হাসিনা এবং তার দোসরদের বিচার এখনো দৃশ্যমান নয়। শহীদ পরিবারগুলো ন্যূনতম সহযোগিতাও পায়নি। আহতদের চিকিৎসাও এখনো সম্পূর্ণ হয়নি। আমরা সরকারকে আহ্বান জানাই— তাদের প্রশাসনিক মেশিনারিকে ব্যবহার করে অন্তত সহযোগিতার হাত বাড়ান।”

ব্যর্থ রাষ্ট্রের অভিযোগ এনে তিনি বলেন, “আমার নিজেরই ধিক্কার লাগে— আমরা এমন একটা জাতি যারা নিজেদের ছেলেমেয়েদের পুড়িয়ে হত্যা করি। রাষ্ট্রের কর্মচারীরা নিজের সন্তানসম যুবকদের মেরে ফেলেন। এই সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে মানুষ হত্যা করেছে। গুলি করে, পুড়িয়ে, অত্যাচার করে— যেটা করেছে শেখ হাসিনা।”

আরও পড়ুনঃ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের ওপর বর্বরতা কারবালাকেও হার মানিয়েছে: তারেক রহমান

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে তিনি বলেন, “দেশবাসী আজ তার (হাসিনার) বিচার চায়। তিনি ভারতে পালিয়ে গিয়ে বিভিন্ন অডিও-ভিডিও বার্তায় বাংলাদেশে নতুন করে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। ইতোমধ্যে গোপালগঞ্জে তারা সেই পরিস্থিতি তৈরি করেছে।”

মির্জা ফখরুল রাজনৈতিক দলগুলোকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “গণতন্ত্রে মতপার্থক্য থাকবে, সেটা স্বাভাবিক। তবে এমন কিছু করা যাবে না যাতে আবার ফ্যাসিস্ট হাসিনা দেশে ফিরে এসে সুযোগ পেয়ে যায়। তাই রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আমাদের আহ্বান— আসুন, একসঙ্গে সমস্যাগুলো সমাধান করে নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করি।”

সভায় ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হকসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।

সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক নিপুন রায় চৌধুরী। সভার শুরুতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সাভারে শহীদদের পরিবারের সদস্যরা বক্তব্য দেন, যেখানে তাদের পাশে কেউ না থাকার কষ্টগাঁথা উঠে আসে।