সেন্টমার্টিন দ্বীপ। পর্যটকদের আগ্রহের তালিকায় থাকা শীর্ষস্থানীয় পর্যটন কেন্দ্র। পর্যটকদের জন্য টেকনাফ উপজেলার এই দ্বীপ ইউনিয়নে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা ও সুযোগ সুবিধা সৃষ্টি হলেও এখানকার স্থানীয়দের জন্য শিক্ষা ব্যবস্থা খুবই নাজুক, শিক্ষার হার ১৫ শতাংশ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থাকলেও নেই পর্যাপ্ত শিক্ষক। দারিদ্র্যতা ও যাতায়াতের সুব্যবস্থার অভাবে দ্বীপের শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর এমন প্রভাব ফেলেছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
জানা গেছে, দ্বীপে শিশুদের শিক্ষার হার ১৫.১৩% হলেও বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়ার হার ৩০ শতাংশের বেশি। তবে শিক্ষার এই অবস্থার উন্নতিতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নুর আহমেদ বলেন, দ্বীপে সাড়ে ১০ হাজার মানুষের বসবাস। এখানে একটি উচ্চ বিদ্যালয়সহ কলেজ, একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও আরও একটি এনজিও সংস্থা পরিচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। দ্বীপে আনুমানিক ১২০০ শিশুর প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়ার বয়স হয়েছে। কিন্তু বিদ্যালয়ের দূরত্ব, যাতায়াত খরচ, যোগাযোগ ব্যবস্থার সম্যসা, দারিদ্র্যতা ও সচেতনতার অভাবে এখানকার শিক্ষা ব্যবস্থার তেমন উন্নতি হচ্ছে না।
তিনি বলেন, সেন্টমার্টিনে শিক্ষার উপকরণসহ দ্বীপের যাবতীয় মালামাল আনতে হয় টেকনাফ থেকে। সবসময় সাগরপথে যা আনা কঠিন। এর মধ্যে বৈরী আবহাওয়ার সঙ্গে যোগ হয়েছে মিয়ানমার সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনা। এতে এক ধরনের ভয় ও আতঙ্ক বিরাজ করে।
আরও পড়ুনঃ অবৈধ ইটভাটা গুঁড়িয়ে দিল চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রশাসন
তিনি জানান, স্কুলগুলোতে শিক্ষক সংকটের কারণে শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক শেষ করে আর মাধ্যমিকে পড়ছে না। আবার কেউ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করলেও উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে না। কারণ এজন্য তাদেরকে টেকনাফ, কক্সবাজার কিংবা চট্টগ্রামে যেতে হচ্ছে। সেইসঙ্গে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষাও দিতে হচ্ছে টেকনাফে গিয়ে। অনেক পরিবার আছে হতদরিদ্র। টেকনাফে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা দিতে গেলে পরীক্ষা পর্যন্ত বাসা ভাড়া কিংবা হোটেল ভাড়া নিতে হচ্ছে। দ্বীপের অধিকাংশ মানুষের জীবন-জীবিকার উৎস যেখানে সাগরে মাছ ধরা এভাবে ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনা করানো তাদের জন্য বিলাসিতাই বটে। তবে দ্বীপেই এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার সেন্টার করা ও স্কুলে যাতায়াতে সরকারিভাবে গাড়ি দেওয়া গেলে শিক্ষার মান আরও বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।