মোঃ আব্দুল আলিম, রাজশাহী প্রতিনিধিঃ রাজশাহী নগরীর কাজলা এলাকার বাসিন্দা জাহিদুল ইসলাম পলাশের জীবনের প্রতিটি ধাপ যেনো সংগ্রাম ও জয়ের কাব্য। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও তিনি অদম্য ইচ্ছাশক্তি নিয়ে এগিয়ে চলেছেন নিজের স্বপ্নপথে। একটি পা না থাকা সত্ত্বেও আর্টিফিশিয়াল লিম্বের সহায়তায়, জীবনের প্রতিকূলতাকে জয় করার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে পলাশ হয়ে উঠেছেন আজকের তরুণদের জন্য এক মহান অনুপ্রেরণা।
২০১৯ সালে মহামারির কঠিন সময়ে ফুডপান্ডার রাইডার হিসেবে কাজ শুরু করে নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করেন তিনি। নিজের তৈরি ছোট ব্যাটারি চালিত গাড়ি নিয়ে প্রতিদিন ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা কাজ করে কাস্টমারদের দরজায় খাবার পৌঁছে দেন, এমনকি ৩ থেকে ৪ তলা পর্যন্ত উঠে ডেলিভারি করতে দ্বিধা করেন না। এই উপার্জনেই চলছে তার এবং তার পরিবারের খরচ। নিজের সংগ্রামের এই কঠিন পথেও তিনি সাহায্যের জন্য কারো দিকে হাত বাড়াননি।
পলাশ শুধু একজন রাইডারই নন; একসময় বাংলাদেশ হুইল চেয়ার স্পোর্টস ফাউন্ডেশনের নিবন্ধিত খেলোয়াড় এবং দলের ক্যাপ্টেন ছিলেন তিনি। ফুডপান্ডার সহায়তায় দেশের বাইরে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায়ও অংশগ্রহণ করেছেন। শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে কোনো সীমাবদ্ধতা নয়, বরং প্রেরণা হিসেবে নিয়ে তিনি জীবনের প্রতিটি বাধা পেরিয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ ইবি রোটার্যাক্ট ক্লাবের ‘উন্মুক্ত কুইজ’ প্রতিযোগিতা ১৭নভেম্বর
পলাশের মতে, বেকারত্বকে মেনে না নিয়ে নিজের উদ্যোগে কিছু করা উচিত। তিনি নতুন প্রজন্মকে আহ্বান জানিয়েছেন, পড়াশোনার পাশাপাশি প্রত্যেকেই নিজের অবস্থান থেকে উদ্যোক্তা হয়ে কিছু করতে পারে। ভবিষ্যতে নিজের ব্যবসা শুরু এবং আন্তর্জাতিক রাইডার হিসেবে কাজের স্বপ্ন দেখেন তিনি।
তার এই জীবনযুদ্ধের গল্প এক জীবন্ত উদাহরণ হয়ে উঠেছে। হতাশ তরুণদের তিনি বলছেন, “আমি যদি প্রতিবন্ধী হয়ে কাজ করতে পারি, তবে অন্যরাও পারবে। জীবন সুন্দর, সঠিকভাবে সাজানো গেলে অনেক কিছু অর্জন করা সম্ভব।”
পলাশের এই অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও সাহসিকতা প্রমাণ করে, প্রতিকূলতাকে জয় করা সম্ভব শুধু ইচ্ছাশক্তি ও প্রচেষ্টার জোরে।