spot_img

― Advertisement ―

spot_img
প্রচ্ছদবিশেষ প্রতিবেদনঢাকা-১৯ আসনে নির্বাচনী হালচাল: বিএনপি-জামায়াতের আলোচনায় চার নেতা

ঢাকা-১৯ আসনে নির্বাচনী হালচাল: বিএনপি-জামায়াতের আলোচনায় চার নেতা

শেখ মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, সাভার প্রতিনিধিঃ ঢাকা জেলার সাভার ও আশুলিয়া নিয়ে গঠিত ঢাকা-১৯ সংসদীয় আসনকে ঘিরে শুরু হয়েছে জমজমাট নির্বাচনী প্রস্তুতি। ২০২৪ সালের রাজনৈতিক পালাবদলের পর বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থীরা সরব হয়েছেন মাঠে। নানা কর্মসূচি, সামাজিক যোগাযোগ, গণসংযোগ আর তৃণমূলের সঙ্গে নিয়মিত সম্পৃক্ততার মাধ্যমে নিজেদের জনপ্রিয়তা ধরে রাখার চেষ্টা করছেন তাঁরা। দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের দখলে থাকা এই আসনে এবার বিএনপি ও জামায়াতের নেতাদের মধ্যে চরম প্রতিযোগিতা চলছে দলীয় মনোনয়নকে ঘিরে।

ডা. দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বাবুঃ বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য ডা. দেওয়ান সালাউদ্দিন বাবু একসময় জেলা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করলেও পরে সাংগঠনিক প্রতিদ্বন্দ্বিতায় হারিয়ে যান। তবে সাভার-আশুলিয়ার মাঠ পর্যায়ে তাঁর জনপ্রিয়তা এখনো শক্ত। ‘বাবু ভাই’ নামে পরিচিত এই নেতা ক্যাডেট কলেজ ও সরকারি মেডিকেল কলেজ থেকে শিক্ষা গ্রহণের পর রাজনীতিতে যুক্ত হন। তিনি বর্তমানে স্কুল-কলেজের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, সামাজিক-ধর্মীয় অনুষ্ঠানে নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন। যদিও কিছু ইউনিয়ন কমিটি তাঁর বিপক্ষে, তবে যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের বড় অংশ তাঁর পাশে আছে।

মাওলানা আফজাল হোসাইনঃ জামায়াতে ইসলামী থেকে মনোনয়নপ্রাপ্ত মাওলানা আফজাল হোসাইন শিমুলিয়া ইউনিয়নের নাল্লাবোল্লা গ্রামের বাসিন্দা। ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা জেলা উত্তরের সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে অবিভক্ত ঢাকা জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি পদে থাকা এই নেতা এলাকার অলিগলিতে সুপরিচিত। রাজনৈতিক দূরদর্শিতা, সাদাসিধে জীবনযাপন ও ধর্মীয় ভাবধারা তাঁকে জামায়াতের একক প্রার্থী হিসেবে এগিয়ে রেখেছে। তাঁর মনোনয়ন ঘোষণার পর দলের নেতাকর্মীরা একযোগে মাঠে নেমেছেন এবং ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন এলাকায়।

মোহাম্মদ আইয়ুব খানঃ ঢাকা জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আইয়ুব খান ধামসোনা ইউনিয়নের ডেন্ডাবর এলাকার কৃতিসন্তান। দলে ত্যাগী, কর্মীবান্ধব ও সৎ নেতা হিসেবে পরিচিত আইয়ুব খান সাভার-আশুলিয়ার রাজপথে দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয়। সামাজিক কর্মকাণ্ড, মানবিক সহায়তা ও দরিদ্র পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করেছেন তিনি। সুশিক্ষিত এই নেতা বিএনপির সম্ভাব্য মনোনয়নপ্রাপ্তদের তালিকায় অন্যতম হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন।

আরও পড়ুনঃ নালিতাবাড়ীতে কলেজে তুচ্ছ ঘটনায় সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগে উত্তপ্ত পরিস্থিতি—আটক ১৮

আলহাজ্ব কফিল উদ্দিনঃ তিনবারের ইউপি চেয়ারম্যান, সাভার উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এবং হানিফ এন্টারপ্রাইজের মালিক কফিল উদ্দিন বিএনপির আরেক অভিজ্ঞ নেতা। গাবতলী বাস টার্মিনাল নিয়ন্ত্রণ, পরিবহন শ্রমিকদের সমন্বয় এবং দলীয় কর্মসূচি বাস্তবায়নে তাঁর সক্রিয় ভূমিকা রয়েছে। তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ বলয়ে থেকেও তিনি কেন্দ্রীয় মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন।

আলোচনায় আরও যারাঃ এছাড়া সাবেক চেয়ারম্যান ও থানা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দদের মধ্যেও রয়েছেন একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী। তাদের মধ্যে আছেন ধামসোনার সাবেক চেয়ারম্যান গফুর চেয়ারম্যান, তেতুলঝোড়ার জামালউদ্দিন সরকারসহ আরও একাধিক নেতা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ঢাকা-১৯ এখন বিরোধী দলের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। তবে দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে কে হবেন ভোটারদের আস্থার প্রতীক। বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান কাকে বেছে নেন, সেটাই এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
ভোটারদের চোখ এখন নতুন নেতৃত্বে—যে নেতৃত্বে সাভার-আশুলিয়ার মানুষ খুঁজে পাবেন বাস্তব পরিবর্তনের আশ্বাস।