মাহমুদুল হাসান, স্পোর্টস ডেস্কঃ শ্রীলঙ্কার সাথে নিজেদের ১ম ম্যাচে কষ্টার্জিত জয়ে শুরু হলো বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন। বাংলাদেশের খেলা মানেই হতে হবে শেষ মুহূর্ত অব্দি অপেক্ষা। দেখার জন্য থাকতে হবে অঢেল ধৈর্য ও হতে হবে দৃঢ় হার্ট এর অধিকারী।
টস জিতে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। শ্রীলঙ্কা দাপুটে ব্যাটিং করতে থাকলেও বাংলাদেশের বোলাররা আবহ পাল্টে দিতে সময় নিলেন না। বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে দুর্বার বোলিং করলেন লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন। আগুনে বোলিং করলেন মুস্তাফিজুর রহমান, দাপট দেখালেন তাসকিন আহমেদও।
প্রথম ৬ ওভারে শ্রীলঙ্কার রান ২ উইকেটে ৫৩। রিশাদ-তাসকিন-মুস্তাফিজের দুর্দান্ত বোলিংয়ে কামব্যাক করে বাংলাদেশ। পরের ১৪ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৭১ রান তুলতে পেরেছে লঙ্কানরা। এদিন দুর্দান্ত বোলিংয়ের সঙ্গে দারুণ ফিল্ডিং করতেও দেখা যায় টাইগারদের, তাতে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে অল্প রানেই আটকাতে পারলো বাংলাদেশ।
আরও পড়ুনঃ আমরা তো মায়ের দোয়া টিম হয়ে গেছি: সাকিব
ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে আগে ব্যাটিং করে ৯ উইকেটে ১২৪ রান তুলেছে শ্রীলঙ্কা প্রথম ম্যাচে জয় পেতে বাংলাদেশের টার্গেট ১২৫ রান। লঙ্কানদের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৭ রান করেন নিশাঙ্কা। রিশাদ-মুস্তাফিজ নেন ৩টি করে উইকেট নিলেও মুস্তাফিজের ছিলেন বেশ ইকোনমিকাল। তার কৃপণ বোলিংয়ে ৪ ওভারে মাত্র ১৭ রান দেন বাঁহাতি এই পেসার। তাসকিন ২ ও তানজিম শেষ ওভারে নেন ১টি উইকেট।
চোট কাটিয়ে ফেরা তাসকিন শুরুতে ভালো না করতে পারলেও দ্রুতই ছন্দ খুঁজে নেন। ডানহাতি এই পেসার ৪ ওভারে ২৫ রানে ২টি উইকেট নেন। রিশাদের মতো তানজিম হাসান সাকিবেরও আজ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অভিষেক হলো। ঝলমলে না হলেও অভিষেক পর্বটা মনে রাখার মতোই হয়েছে তার।
ডানহাতি তরুণ এই পেসার ৪ ওভারে ২৪ রানে একটি উইকেট পান। খরুচে সাকিব আল হাসান ৩ ওভারে ৩০ রান দিয়ে উইকেট পাননি। এক ওভার করা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের খরচা ৪ রান।
১২৫ রানের লক্ষ্যে বাংলাদেশের শুরুটা হওয়ার কথা ছিল আত্মবিশ্বাসী। কিন্তু প্রথম ওভারেই নেই সৌম্য। নুয়ান তুষারার বলটি বুঝতেই পারেননি বাংলাদেশ ওপেনার। দ্বিতীয় ওভারে দ্বিতীয় উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ।বাংলাদেশ তখন ২ ওভারে ৮/২। কচ্ছপ এর গতিতে ছুটে চলা শুরু, প্রথম চার পঞ্চম ওভারে এসে।
পাওয়ারপ্লের যখন ৪ বল বাকি, বাংলাদেশ হারিয়ে ফেলেছে ৩ উইকেট। এ যেন উইকেট হারিয়ে ফেলার ছন্দপতনের ধারাবাহিকতা বজায়। নবম ওভারে ৫০ ছুঁয়েছে বাংলাদেশ। এর পর?? যেন পুরো সিনেমাটা দেখিয়েছেন হৃদয় ।
হাসারাঙ্গার বলে পর পর ৩টি ৬ মারার পরে লেগবিফর এর ফাদে পড়েন হৃদয়। ততক্ষণে তার কাজ প্রায় শেষ, থামলেন ২০ বলে ৪০ রান করে। সে মূহুর্ত বাংলাদেশ কে দিলেন এক জয়ের প্রলোভন।
শেষ দিকে ২৪ বল, ১৭ রান দরকার ঠিক তখনই রিশাদের যেন ‘মতিভ্রম’,জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়ে বোল্ড রিশাদ। প্রথম বলেই লেগবিফর তাসকিন। হারের শঙ্কা ঘুরপাক কাচ্ছে কিন্তু অপর প্রান্তে ভরসায় ছিলেন মাহমুদুল্লাহ।
অবশেষে বুড়ো মাহমুদুল্লাহ দলের ত্রাতা হয়ে ম্যাচ জেতালেন বাংলাদেশকে, ৬ বল ও ২ উইকেট হাতে রেখে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:বাংলাদেশ ১৯ ওভার ১২৫/৮ লক্ষ্য; ১২৫ (মাহমুদউল্লাহ ১৬, তানজিম ১; সৌম্য ০, তানজিদ ৩, শান্ত ৫, হৃদয় ৪০, লিটন ৩৬, সাকিব ৮, রিশাদ ১, তাসকিন ০)
শ্রীলঙ্কা ২০ ওভারে ১২৪/৯ (থুশারা ০, পাথিরানা ০, মেন্ডিস ৮, কামিন্দু ৪, নিসাঙ্কা ৪৭, আসালাঙ্কা ১৯, হাসারাঙ্গা ০, ধনাঞ্জয়া ২১, শানাকা ৩, থিকশানা ০, ম্যাথুস ১৬)
ফল: বাংলাদেশ ২ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা: রিশাদ হোসেন।