
তানিম তানভীর, ইবি প্রতিনিধিঃ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রশিবির সভাপতি এইচ এম আবু মুসা বলেন, “এতোদিন আমরা প্রকাশ্যে সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনা করিনি এ কথাটি শতভাগ সত্য নয়। স্বৈরাচারী শাসনের কারণে চাপে ছিলাম বটে কিন্তু আমাদের সংগঠনের কার্যক্রম কখনোই বন্ধ ছিল না। তখন আপনারাও বিভিন্ন কারণে আমাদের কাছে আসার সুযোগ পাননি। প্রতিবছরই আমাদের নতুন কমিটি হয়েছে, আমার সবসময়ই কার্যক্রম পরিচালনা করেছি। আমরা কখনোই নিষ্করিয় বা গোপন ছিলাম না। এখনও হঠাৎ করে প্রকাশ হওয়ার মতো কোনো বিষয় দেখছি না।”
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
লেজুড়বৃত্তি ছাত্ররাজনীতি বন্ধের বিষয়ে তিনি বলেন, “সাধারণ শিক্ষার্থীরা যা চায় একটি দায়িত্বশীল ও ছাত্রসংগঠন হিসেবে আমরাও তাই চাই। বিগত সময়ে শিক্ষার্থীরা দেশে ও ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির যে রূপ দেখেছে তা মূলত ছাত্ররাজনীতি নয়। ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা, হল থেকে নামিয়ে দেওয়া ও শিবিরসহ বিরোধীমত হামলা-মামলা দিয়েছে। বিগত ১৬ বছর শিক্ষার্থীরা এসবই দেখছে আর এগুলোকেই ছাত্ররাজনীতি মনে করেছে; এগুলো ছাত্র-রাজনীতির অংশ হতে পারে না। আমরা কোনো লেজুড়বৃত্তি ছাত্রসংগঠন নই। জামায়াতের সাথে সাংবিধানিকভাবে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। ছাত্রশিবির একটি স্বতন্ত্র সংগঠন। শিবিবের নেতা নির্বাচন হয় সংগঠনের সদস্যের ভোটে। তবে আদর্শগত দিক থেকে তাদের সাথে আমাদের মিল রয়েছে।”
ক্যাম্পাসে ভিন্ন মতের সংস্কৃতি চর্চা নিয়ে ইবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি বলেন, “ছাত্রশিবির সুষ্ঠু সংস্কৃতি চর্চায় বিশ্বাস করে। এতে যেকোনো মতের সাংস্কৃতিক সংগঠন তাদের নিজস্ব মত অনুযায়ী এটা অবশ্যই বাস্তবায়ন করতে পারবে। এখানে ছাত্রসংগঠন হিসেবে আমাদের বাঁধা দেওয়ার কিছু নেই। এটা তাদের মৌলিক অধিকার।”
ছাত্রশিবিরে ছাত্রী না থাকা প্রসঙ্গে ইবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি বলেন, “অন্যান্য সংগঠনের চাইতে আমরা নারীদেকে বেশি স্পেস দিয়ে থাকি। ছাত্রীসংস্থা নামের তাদের আলাদা প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। নারীদের থেকেও যেন জাতীয় পর্যায়ে নেতৃত্ব তৈরি হয় সেজন্য তাদেরকে এই আলাদা স্পেস দিয়ে রাখা হয়েছে। সেখানে তাদের নিজস্ব কমিটি রয়েছে, তারা নিজেদের মতো করে কার্যক্রম পরিচালনা করে। তবে দাবি-দাওয়া ও বিভিন্ন অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রে আমরা একসাথেই আন্দোলন করে থাকি।”
আরও পড়ুনঃ ভোলায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ শিকারে ৫২জেলে আটক
বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগঠনের কার্যক্রম বিষয়ে তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস গড়তে আন্তর্জাতিকীকরণের দিকে ক্যাম্পাসকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই, তাই সকল সাধারণ শিক্ষার্থীকে একটি প্ল্যাটফর্মে এসে দাঁড়াতে হবে। দাবি দাওয়া আদায়ে দল-মত ভুলে সবাইকে একটি জায়গায় এসে দাঁড়াতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাখাতে উন্নয়নের জন্য উপাচার্য যে চিন্তাগুলো করছেন, আমরা সবাই মিলে যদি সহযোগিতা করি তাহলে প্রশাসন সেই কাজগুলো বাস্তবায়ন করতে পারবে। তিনি ক্যাম্পাসের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে সকলকে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানান।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ ৭ বছর পর প্রকাশ্যে এসেছেন সভাপতি ও সেক্রেটারি। ২৮ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্টের মাধ্যমে তাদেরকে পরিচয় প্রকাশ করেছে সংগঠনটি।