
ঈদ সালামি পেতে কার না ভালো লাগে। হোক ছোট কিংবা বড় উপহার মানুষকে সব সময় আনন্দিত করে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ঈদ আনন্দের ধরনে পরিবর্তন এলেও পাল্টায়নি ঈদ সালামির রীতি।
শুধু পরিবর্তন হয়েছে দেওয়া-নেওয়ার। ছোটবেলা থেকে বড়বেলা, ঈদের আমেজে পরিবর্তন টের পান সরল শৈশব এবং দুরন্ত কৈশোর পার করা সবাই। অধিকাংশই ঈদের আনন্দ বলতে গেলে শুরু করেন ছোটবেলার ঈদের স্মৃতিকাতরতা দিয়ে।
কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ঈদ আনন্দের ধরনে পরিবর্তন এলেও পাল্টায়নি ঈদ সালামির রীতি। শুধু পরিবর্তন হয়েছে দেওয়া-নেওয়ার প্রথায়।
ছোটবেলায় ঈদের সালামি পাওয়ার সুযোগ বেশি থাকলেও, বড় হতে হতে ঈদের সালামি দেওয়ার হার বাড়ে। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সালামি পাওয়ার চেয়ে দেওয়ার অঙ্কটাও বাড়তে থাকে।
ছোট বেলায় ঈদুল ফিতরের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ ঈদি বা সালামি। নতুন পোশাকে নামাজ শেষে কোলাকুলির পরই শুরু হয় বড়দের থেকে ঈদি বা সালামি নেওয়ার পর্ব।
যুগ পরিবর্তন হলেও যেন চির প্রথা এই সালামি দেওয়াটা পরিবর্তন হয়নি, ছোটরা বড়দের কাছ থেকে আশা করে নতুন চকচকে নোটের সালামি বয়স যাই হোক সম্পর্কে বড় হলেই যেন সালামি দেওয়ার অলিখিত নিয়ম।
আরও পড়ুনঃ ঈদ হোক সবার জন্য
নব্বইয়ের দশকের ছেলে মেয়েরা স্মার্টফোন এতটা সহজলভ্য হওয়ার আগের ঈদ সালামির কথা। কে কত টাকা ঈদ সালামি পেল, তা নিয়ে চলত নীরব প্রতিযোগিতা। কিছু টাকা জমলেই দোকানে গিয়ে পছন্দের খাবার কিনে খাওয়ার এক অকৃত্রিম আনন্দ ছিল। এখন হয়তো সালামি নেওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে আছে সালামি পাওয়ার সেই প্রশান্তি। ঈদের পরে অনলাইনে বিভিন্ন পণ্যে ঈদ সালামি অফারের প্রচলনই বলে দেয় এখনো এই যুগেও সালামি কতটা জনপ্রিয়।
আগে দুই বা পাঁচ টাকার সালামিই ছিল সাধারণ বিষয়। এখন আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে সালামির অঙ্ক। এখন সর্বনিম্ন ১০ টাকার চকচকে নোটে শুরু সালামির অঙ্ক। আর সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতায় টাকার অঙ্ক বেড়ে পাঁচশ, হাজার বা আরও বেশি হয়। তবে, সালামির অঙ্ক যাই হোক, এতেই লুকিয়ে থাকে ঈদের হাজার আনন্দ।
বর্তমানের ডিজিটাল যুগে সালামি প্রদানেও এসেছে নতুনত্ব। এখন অনলাইনের মাধ্যমেও ঈদ সালামি আদান-প্রদান হয়। ঈদ সালামির আনন্দকে ছড়িয়ে দিতে সুযোগ দিচ্ছে মোবাইল ব্যাংকিং। তাই দূরে থাকলেও এখন সালামি প্রিয়জন বন্ধু-বান্ধবদের এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই, মোবাইলের মাধ্যমেই ঈদ সালামি পৌঁছে যাচ্ছে দূর-দূরান্তে। তবে অনলাইন যুগ এসে সালামি নেওয়ার দেওয়ার পরিমাণটা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে আমরা অনলাইনে অনেক বন্ধু-বান্ধবের সাথে দুই একবার কথা বলে থাকলেও ঈদের সময় তারা ঠিকই ঈদ সালামি চাইতে ভুল করে না। যেন এই ঈদ সালামি বন্ধুত্ব বৃদ্ধি করে।
অফিসের বস কিংবা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঈদ সালামি দেন বয়সে ছোট সহকর্মীদের। ঈদ উৎসবে যা একইসঙ্গে আনন্দের এবং আন্তরিকতার। এই সালামি জানো আমাদের ভাতৃত্ব পারস্পরিক সহমর্মিতা বৃদ্ধি করে।
লেখকঃ
আব্দুল আলিম
রাজশাহী কলেজ।