
স্পোর্টস ডেস্কঃ দক্ষিণ আমেরিকার বিশ্বকাপ বাছাইয়ের উত্তপ্ত মঞ্চে সাও পাওলোয় মঙ্গলবার রাতে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে মাঠে নামে ব্রাজিল। ম্যাচটিতে দর্শকেরা চেয়েছিল একটি বার্তা—আনচেলত্তির ব্রাজিল কী পারবে তাদের পুরোনো ছন্দে ফিরতে? আর ম্যাচ শেষে জবাবটা এল মাঠ থেকেই—হ্যাঁ, তারা প্রস্তুত।
কার্লো আনচেলত্তির অধীনে এটিই ছিল ব্রাজিলের প্রথম জয়। আর এই একমাত্র গোলেই নিশ্চিত হয়ে গেল ২০২৬ বিশ্বকাপে তাদের অংশগ্রহণ। এই জয় শুধু পরিসংখ্যান নয়, বরং মনস্তাত্ত্বিকভাবে দারুণ গুরুত্বপূর্ণ ছিল দলের জন্য।
ম্যাচের সবচেয়ে উজ্জ্বল মুহূর্তটি আসে প্রথমার্ধের শেষদিকে। ম্যাচের ৪৪তম মিনিটে রাফিনিয়ার দারুণ এক পাস থেকে বল পেয়ে ভিনিসিয়ুস জুনিয়র বুদ্ধিদীপ্ত ফিনিশিংয়ে বল জালে পাঠান। এই গোলটাই শেষ পর্যন্ত পার্থক্য গড়ে দেয়। গোলটি শুধু স্কোরবোর্ডে নয়, দলের আত্মবিশ্বাসেও গভীর ছাপ রেখে যায়।
ম্যাচের শুরু থেকেই ব্রাজিল ছিল বলের দখলে এগিয়ে। মিডফিল্ডে নিয়ন্ত্রণ, উইং থেকে দারুণ সব আক্রমণ—সবকিছুতেই ছাপ ছিল আনচেলত্তির পরিকল্পনার। প্যারাগুয়ে কিছু সময় প্রতিরোধ গড়ে তুললেও ব্রাজিলের রক্ষণ তাদের খুব বেশি জায়গা দেয়নি। পুরো ম্যাচে প্রতিপক্ষের তেমন বড় কোনো সুযোগ তৈরি হয়নি, যা থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, রক্ষণভাগেও দলটি যথেষ্ট পরিপক্ব।
এদিন গোল না পেলেও ব্রাজিলের আক্রমণভাগে থাকা গ্যাব্রিয়েল জেসুস, মার্টিনেল্লি এবং ব্রুনো গিমারায়েসদের মধ্যে বোঝাপড়া চোখে পড়ার মতো ছিল। বিশেষ করে ভিনিসিয়ুস ছিলেন ফর্মের শিখরে—প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের বারবার বিপদে ফেলেছেন, তার গতিময় দৌড় এবং ড্রিবলিংয়ে অনেকবার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ সিঙ্গাপুরের কাছে হেরে এশিয়ান কাপে কঠিন পথে বাংলাদেশ
বাছাইপর্বে এই জয় ব্রাজিলের মোট পয়েন্ট ২৫-এ নিয়ে গেছে, আর এ নিয়েই তারা নিশ্চিত করেছে আগামী বিশ্বকাপে জায়গা। এমনিতেই ব্রাজিল একমাত্র দল হিসেবে প্রতিটি বিশ্বকাপে অংশগ্রহণের রেকর্ড ধরে রেখেছে। এই ম্যাচ সেই ধারাবাহিকতাকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিল।
যদিও জয় এসেছে মাত্র এক গোলের ব্যবধানে, তবে এটি ছিল নিয়ন্ত্রিত এবং পরিকল্পিত ফুটবলের এক নিখুঁত নিদর্শন। মাঠে কোনো বাড়াবাড়ি না করে, সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার এই কৌশল—যেটিকে বলা যায় ক্লাসিক আনচেলত্তি ছোঁয়া—সেটাই হয়তো এই দলের আগামী দিনের সাফল্যের চাবিকাঠি হয়ে উঠবে।
এখন বাছাইপর্বে তাদের আরও দুটি ম্যাচ বাকি রয়েছে। সেই ম্যাচগুলোতে বড় পরীক্ষা হবে উরুগুয়ে ও চিলির বিপক্ষে। তবে ব্রাজিল যে তাদের আত্মবিশ্বাস পুনরুদ্ধার করেছে, তা এই ম্যাচই প্রমাণ করে দিল।