spot_img

― Advertisement ―

spot_img

‘জুলাই আন্দোলনে নারী’ কর্মসূচিতে উপেক্ষিত জাবির আন্দোলনকারী নারীরা

মোঃ আবু বকর সিদ্দিক, জাবি প্রতিনিধিঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সংস্কৃতি সংগঠনগুলোর সমন্বিত প্ল্যাটফর্ম সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে ‘জুলাই আন্দোলনে নারী’ শীর্ষক চিত্র প্রদর্শনীতে উপেক্ষিতই রয়ে...
প্রচ্ছদশিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গনক্যাম্পাসজাবিতে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ সমাবেশে শিক্ষকদের সংহতি

জাবিতে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ সমাবেশে শিক্ষকদের সংহতি

মোঃ আবু বকর সিদ্দিক, জাবি প্রতিনিধিঃ সরকারি চাকুরিতে কোটা সংস্কারের এক দফা দাবি এবং সারাদেশে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা-মামলার বিচারের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষকরা।

১৪ জুলাই রবিবার বেলা সাড়ে ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রস্থাগার প্রাঙ্গণ থেকে ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’র ব্যানারে একটি মিছিল বের করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলরত শিক্ষার্থীরা।

এরপর মিছিলটি শহীদ মিনার ঘুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেইটের সামনে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক সোহেল আহমেদ, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড গোলাম রব্বানী এবং দর্শন বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, আজ একটি বিশেষ কারণে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় আন্দোলন করে আসছে। দেশ জাতির মঙ্গলের যৌক্তিক আন্দোলনের প্রতি আমরা সমর্থন জ্ঞাপন করছি। কোটা আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের প্রতি যে আচরণ করা হয়েছে, তাদের উপর হামলা করা হয়েছে; তা প্রহসনমূলক। এই রাষ্ট্রের প্রত্যাশা করে নির্বাহি বিভাগ ও বিচার বিচার তাদের প্রতি ন্যায় বিচার করবে।

তিনি আরও বলেন, সরকারের দায়িত্ব কোটা সংস্কার করে দ্রুত এই ব্যবস্থা নিরসন করা। শিক্ষার্থীরা ১০ দিনে রাস্তায় তাদের দাবির জন্য যে কঠোর পরিশ্রম করছে তা মূলত রাষ্ট্রের কল্যাণেই। স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরি করতে সকল স্তরেই দক্ষ জনবল প্রয়োজন। বর্তমান পরিস্থিতি বলে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের প্রতি সামাজিক ন্যায় বিচার করা হচ্ছে না। যার জন্য শিক্ষকরা প্রত্যয় স্কিম আন্দোলন এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনে আসছি, উভয়েই শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আহসান হাবিব বলেন, আমরা যৌক্তিক দাবি নিয়ে যৌক্তিক আন্দোলন সামিল হয়েছি৷ আমাদের দাবি বলে মেধাভিত্তিক বৈষম্যহীন কোটা সংস্কার করা। যারা প্রশ্নফাঁসের সাথে জড়িত অবিলম্বে তাদের খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। কোটা আন্দোলনে বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করা হয়েছে। এছাড়াও গতকাল শাহভাগে মামলা করেছে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানিরা বাঙ্গালিদের মিথ্যা মামলা দিয়ে দমিয়ে রাখতে চেয়েছিলো, কিন্তু তারা বাঙ্গালিদের দমায়ে রাখতে পারে নি ৷ ১৯৭১ সালে ছাত্র সমাজ রক্ত দিয়েছে। ছাত্র সমাজ দেশ স্বাধীন না হওয়া পর্যন্ত রাস্তা ছাড়ে নি। তেমনি আমাদেরকেও রাস্তা থেকে সরানো যাব না।

ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড গোলাম রব্বানী বলেন, যেকোন অন্যায়ের বিরুদ্ধে কিংবা যেকোন বৈষম্যে আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সব সময় জাবি শিক্ষার্থীরা এগিয়ে এসেছে। কোটা সংস্কারের ছাত্র আন্দোলন দেখে মনে হয় ১৯৫২, ১৯৭১ কিংবা ১৯৯০ সালের ছাত্রদের আন্দোলনেরই প্রতিফলন। ছাত্ররা সুচিন্তিত ভাবেই এগিয়ে এসেছে। বাংলাদেশের কোটার বৈষম্য মেধাবিদের পিছিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, কোটা যেভাবে মেধাবীদের বঞ্চিত করছে এর ফলশ্রুতিতে কোনভাবেই স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরি করা সম্ভব হবে না। কোটা আন্দোলন এই সংহতিমূলক আন্দোলন সরকার কোন প্রতিক্রিয়া জানায় নি। এছাড়াও বিভিন্ন পরিক্ষায় যারা প্রশ্নফাঁস করে আসছে, তাদের দ্রুত খুজে বের করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে ৷ বিগত ১০ দিন যাবত শিক্ষার্থীরা এবং শিক্ষকরা যে আন্দোলন করে আসছে, সরকারের মাথা ব্যথা নেই। এতে শিক্ষার্থীরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ। রাষ্ট্র নেতার উচিত দ্রুত কোটা সংস্কার করে তার বাস্তবায়ন করা।

আরও পড়ুনঃ বেরোবিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের গণপদযাত্রা

এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, আমরা কোন অযৌক্তিক আন্দোলনের পক্ষে যাচ্ছি না৷ আমাদের দেশে লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীরা প্রতি যে বৈষম্যকরণ এবং যে অযৌক্তিক কোটার যে ব্যবস্থা আছে তার জেরে বিগত কয়েকদিন যাবত লাগাতার আন্দোলন করে আসছি। আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে ছাত্রদের প্রতি যে হামলা হয়েছে এবং মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই আমাদের মিথ্য মামলা দিয়ে দাবায় রাখা যাবে না৷ আমাদের কোটা সংস্কারের আন্দোলনে একটি পক্ষ আমাদের বিরোধী হিসাবে পরিচয় করে দিচ্ছে। ২০১৮ সালে যে প্রহসন করা হয়েছিলো পুরোপুরি কোটা সংস্কার না করে। আমাদের এক দফা যৌক্তিক আন্দোলনে এভাবে আমাদের পিছু হাটাতে পারবে না৷ পুলিশ যাদের নামে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে, যাদের হামলা করা হয়েছে তার বিচার চাই।