
মোঃ মাসুদ রানা মনি, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিঃ লক্ষ্মীপুরে বন্যায় ১৮ হাজারের বেশি ঘরবাড়ী বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জেলা ত্রাণ ও পুর্ণবাসন কার্যালয় সূত্রে জানানো হয়েছে। তবে বেসরকারি হিসাবে ক্ষতিগ্রস্থ ঘরবাড়ির পরিমান এর দ্বিগুণ হতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে। এখনো অনেক ঘরবাড়ি পানিতে নিমজ্জিত।
পানি পুরোপুরি নেমে গেলে সঠিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে। বন্যার পানি নেমে গেলে এ সব এলাকার খেঁটে খাওয়া মানুষকে আবার নতুন করে দুশ্চিন্তায় পড়তে হবে। বন্যার কবলে পড়ে কর্মহীন থাকায় এসব ঘর মালিকরা এখন রয়েছেন ব্যাপক অর্থসংকটে। তাই ক্ষতিগ্রস্ত ঘর মেরামত নিয়ে তারা এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা ভাঙাখাঁ ইউনিয়নের জাগিদার বাড়ি এলাকার গৃহবধূ রাবেয়া আক্তার বলেন, আমার ঘরের খুঁটি নড়বড়ে হয়ে গেছে। ঘরের কোমর পানি ছিল। আশ্রয়কেন্দ্রে আছি। বন্যার পানিতে ঘরের অবস্থা বসবাসের মতো নেই। মেরামত করা ছাড়া ঘরে ওঠা যাবে না। আমার স্বামী দিনমজুর। ঘর মেরামত করার কোনো উপায় আমাদের নেই। ঘরে তো যেতে হবে, আশ্রয়কেন্দ্রে আর কতদিন থাকব?
একই উপজেলা মান্দারী ইউনিয়নের যাদৈয়া গ্রামের নাছরিন ও সাবিনা ইয়াছমিন বলেন, ঘরের অবস্থা একেবারে জীর্ণ হয়ে গেছে। আশ্রয়কেন্দ্রে আছি। কিন্তু ঘরে যেতে হলে ঘর মেরামত করতে হবে। মেরামতের মতো অর্থ নেই আমাদের।
রামগঞ্জ উপজেলার ভোলাকোট ইউনিয়নের কুসুম বেগম জানান ধারদেনা করে গত বছর একটি ঘর করেছি কিন্তু এবছরের বন্যায় সম্পূর্ণ ঘর নষ্ট হয়ে গেছে। কি ভাবে এঘর মেরামত করবো ভেবে পাচ্ছি না।
এ উপজেলায় কুসুম বেগমের মতো অসংখ্য কুসুম বেগম আছে যারা আজ অসহায়।
ভুক্তভোগী মমিন উল্যা বলেন, বন্যার পানি ওঠা শুরু হলে শুরুতে ঘরে থাকার চেষ্টা করি। কিন্তু পানি বাড়তে বাড়তে খাটের ওপরও উঠে গেছে। তখন কিন্তু অবস্থা বেগতিক হওয়ায় ঘরে থাকতে পারিনি। অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে উঠেছি পাশের বেড়িবাঁধের ওপর। সেখানে ঝুপড়ি ঘরে ছিলাম, এখন ঘর থেকে পানি নেমেছে। ঘরের টানে স্ত্রী জরাজীর্ণ ঘরে চলে আসে। কিন্তু ঘরের যে অবস্থা থাকার মতো পরিবেশ নেই। শুধু খাটের ওপর বসে থাকা ছাড়া কোনো উপায় দেখছি না।
আরও পড়ুনঃ লালমনিরহাটে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংবাদ সম্মেলন
একই এলাকার নুর হোসেন, শিরিন আক্তার, জাহেদা বেগমসহ অনেকে তাদের ক্ষতিগ্রস্ত ঘরের চিত্র তুলে ধরেন। বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত এসব ঘর মেরামত নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। আবার ঘর মেরামত করে বসবাসের উপযোগী করতেও দীর্ঘ সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন তারা।
লক্ষ্মীপুর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয়ের হিসাব মতে, জেলাতে এবারের বন্যায় ১৮ হাজার ৩৬৫টি কাঁচাঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা মেরামত করতে ব্যয় হবে ১২৬ কোটি ১ লাখ ৪৮ হাজার টাকা।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ইউনুস মিয়া বলেন, আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠিয়েছি