spot_img

― Advertisement ―

spot_img

পাঁচবিবিতে ঈদে অনন্য দৃষ্টান্ত: ২ হাজার পরিবারে মাংস বিতরণ ছাত্রনেতা শামীমের

আল আমিন, জয়পুরহাট প্রতিনিধি: ঈদুল আজহার ত্যাগ ও মানবিকতার চেতনা বাস্তবে রূপ দিতে জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে ব্যতিক্রমী এক উদাহরণ স্থাপন করেছেন ছাত্রদলের সাবেক নেতা শামীম...
প্রচ্ছদসারা বাংলানরসিংদী শিবপুরের মাফিয়া ডন সাবেক এমপি ডলার সিরাজ এন্ড ব্রাদার্স এখনো রয়েছে...

নরসিংদী শিবপুরের মাফিয়া ডন সাবেক এমপি ডলার সিরাজ এন্ড ব্রাদার্স এখনো রয়েছে বিহঙ্গে

মোঃ তালাত মাহামুদ, বিশেষ প্রতিনিধিঃ নরসিংদী শিবপুর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোঃ সিরাজুল ইসলাম মোল্লা এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ উঠেছে যে তারা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী এবং এক ধরনের মাফিয়া কার্যকলাপে লিপ্ত।

সিরাজুল ইসলাম মোল্লা ছাড়াও তার স্ত্রী ফেরদৌসী ইসলাম এবং শিবপুর উপজেলা চেয়ারম্যান , তার তিন ভাই বিভিন্ন ধরনের রাজনৈতিক ও আর্থিক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন, যা তাদের পরিবারকে শিবপুর এলাকার একটি অপ্রতিরোধ্য রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তাদের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর অভিযোগ, এই পরিবারের সদস্যরা রাজনৈতিক ক্ষমতা এবং প্রভাব কাজে লাগিয়ে স্থানীয় জনগণকে শোষণ, নিপীড়ন, এবং প্রতারণা করে আসছে।

সিরাজ মোল্লার জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি, শামসুল মোল্লা জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি, তাজুল মোল্লা শিবপুর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি, ফেরদৌসী ইসলাম পুর উপজেলা মহিলা লীগের সভাপতি, ভাগিনার হুমায়ুন শিবপুর পৌরসভার মেয়র প্রার্থী । এক ছাদের নিচে সকল সেবা, এমপি, মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যান ।

সিরাজুল ইসলাম মোল্লার প্রভাবশালী ভূমিকা

সিরাজুল ইসলাম মোল্লা ছিলেন নরসিংদী জেলার একজন প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি আওয়ামী লীগের সিনিয়র সভাপতি হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় ছিলেন। তার স্ত্রী ফেরদৌসী ইসলাম ছিলেন মহিলা লীগের সভাপতি, এবং তার ভাইরা যুবলীগের বিভিন্ন পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন, যা তাদের পরিবারকে রাজনৈতিক ক্ষমতায় প্রভাবশালী করে তুলেছে। তাদের রাজনৈতিক অবস্থানকে ব্যবহার করে তারা বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে নিজেদের আধিপত্য বজায় রেখেছেন, এবং তাদের কার্যকলাপকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে শিবপুরের সাধারণ মানুষ।

ডলার সিরাজ এবং তার ভাইদের প্রভাব

সিরাজুল ইসলাম মোল্লার পরিবারের একজন অন্যতম বিতর্কিত সদস্য হলেন মাফিয়া ডন ডলার সিরাজ সিরাজুল , যিনি স্থানীয়ভাবে ‘ডলার সিরাজ’ নামে পরিচিত। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ডলার সিরাজ এবং তার ভাইরা একটি মাফিয়া চক্র গড়ে তুলেছেন, যারা স্থানীয় ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে প্রশাসনিক কার্যক্রম পর্যন্ত সবখানে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করে রেখেছেন। তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি প্রদর্শন, চাঁদাবাজি, জমি দখল এবং অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে।

পিএস কালামের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন

অভিযোগ উঠেছে যে, সিরাজুল ইসলাম মোল্লা এবং তার পরিবারের সদস্যরা রাজনৈতিক প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে পিএস কালামের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা লেনদেন করেছেন। তারা ছাত্র আন্দোলন দমন করার জন্য এই অর্থ ব্যবহার করে নিজেদের রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থানকে শক্তিশালী করেছেন। এসব অর্থ সাধারণ জনগণের কাছ থেকে বিভিন্নভাবে আদায় করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। সিরাজ মোল্লার পরিবার স্বৈরাচারিনী ফ্যাসিস্ট হাসিনার ধূসর।

আরও পড়ুনঃ দেবীনগর এর নাজমুল মরিচার্সে মৃত্যু পরিবারের শোকের মাতাম

সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার

শিবপুরের সাধারণ জনগণকে এই পরিবার দীর্ঘদিন ধরে শোষণ করে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে। আন্দোলন-সংগ্রামে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা লোকদের ওপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালানোর অভিযোগও রয়েছে। শতাধিক লোক এই প্রক্রিয়ায় আহত হয়েছেন। কিন্তু এত অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও সিরাজুল ইসলাম মোল্লার পরিবারের বিরুদ্ধে কোন ধরনের প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

অনিয়ম এবং দুর্নীতি

সিরাজুল ইসলাম মোল্লার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো নিরবচ্ছিন্নভাবে চলমান আছে, এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে কোন মামলা হয়নি। তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম, এবং জনগণের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ থাকলেও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। স্থানীয় প্রশাসন ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক এমন পর্যায়ে আছে যে, তারা নিজেদের অপরাধমূলক কার্যকলাপ নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাচ্ছেন।

প্রতিবাদ ও প্রতিক্রিয়া

শিবপুরের সাধারণ মানুষ একাধিকবার এই পরিবারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও আন্দোলন করেছে। কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে এসব আন্দোলন সফলভাবে দমন করা হয়েছে। আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারীদের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার, এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করার অভিযোগও রয়েছে। তবুও, শিবপুরবাসী আশা করে যে, একদিন তাদের বিরুদ্ধে সঠিক তদন্ত এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সিরাজ মোল্লা পরিবারের বিরুদ্ধে আদালতে একাধিক মামলা হলেও এখনো তারা রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে, তারা মুক্ত বিহঙ্গ। গুঞ্জন উঠেছে মামলা হলেও একাধিক নেতাদেরকে ২০ কোটি টাকা দিয়ে মামলাগুলো ধামাচাপা দিয়েছে এবং প্রত্যাহার করেছে । বর্তমানে তার বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চলছে বীর দাপটে, সিরামিক কোম্পানি, পেট্রোল পাম্প, বিভিন্ন প্রজেক্ট চলছে বীর দাপটে ।

এই ঘটনাপ্রবাহ শিবপুরের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি জ্বলন্ত উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যেখানে ক্ষমতাসীন পরিবারের প্রভাব ও ক্ষমতা সাধারণ মানুষের অধিকার এবং স্বাধীনতাকে অবদমিত করেছে।