মোঃ আব্দুল আলিম, রাজশাহী প্রতিনিধিঃ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে মঙ্গলবার রাত থেকে সারা দেশে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। এর প্রভাব পড়েছে নিত্যসামগ্রীর বাজারে। অপ্রত্যাশিত ভাবে বাড়তেছে চালের দাম। রাজশাহীর সাহেব বাজার এলাকায় গত সপ্তাহের চেয়ে সব ধরনের চালের দাম কেজি প্রতি ৬-৭ টাকা বেড়েছে। বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম; আগের চেয়ে মরিচের দাম কেজিতে সর্বোচ্চ ৪০ টাকা বেড়েছে। বেড়েছে আদার দামও। বিভিন্ন প্রকার সবজি, পেঁয়াজ ও আলুর দাম অপরিবর্তিত আছে।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, মিনিকেট চাল কেজি প্রতি ৭৫ টাকা, আটাশ ৬৮ টাকা, বাশমতি চাল ৯০ টাকা, শর্ণা চাল ৬০ টাকা, চিনিগুড়া ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহের তুলনায় আটাশ, মিনিকেট, চিনিগুড়া, বাশমতিসহ, কাটারিভোগ, নাজিরশাইল, পাইজাম চাল কেজি প্রতি ৬-৭ টাকা বেড়েছে। রাজশাহীর সাহেব বাজার সহ কয়েকটি এলাকা ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
চাল ব্যবসায়ী আলতাফ হোসেন জানান, রাজশাহীর সাহেব বাজার এলাকায় সব ধরনের রান্না ও পোলাও এর চালের দাম কেজি প্রতি সর্বোচ্চ ৭ টাকা বেড়েছে।
বাজারে ব্রয়লার মুরগি ও ফার্মের মুরগির ডিমের দাম আগের সপ্তাহের তুলনায় কমেনি। এ দাম সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে কিছুটা বেশি। গতকাল বাজারভেদে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮০-১৯০ টাকায় বিক্রি হয়। আর ফার্মের মুরগির প্রতি ডজন বাদামি ডিম ১৬০-১৬৫ টাকা ও সাদা ডিম ১৫৫-১৬০ টাকায় বিক্রি হয়। সাদা ডিম ৪৮ টাকা হালি, লাল ডিম ৫৪ টাকা হালি, হাসের ডিম ৭০ টাকা হালি এবং দেশি মুরগীর ডিম ৬০-৬২ টাকা হালি প্রতি বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগী ৪৭০ টাকা কেজি, হাস ৪০০ টাকা কেজি। তবে সোনালি মুরগির দাম কেজিতে ১০-২০ টাকা কমেছে। প্রতি কেজি সোনালি মুরগি আজ ২৬০-২৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর হাইব্রিড ধরনের সোনালি মুরগি কেজিতে আরও ২০ টাকা কমে পাওয়া যায়।
সম্প্রতি ডিম এবং ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির ‘যৌক্তিক দাম’ নির্ধারণ করে দেয় সরকারি সংস্থা কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। এতে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি সর্বোচ্চ ১৮০ টাকা, সোনালি মুরগি সর্বোচ্চ ২৭০ টাকা ও ডিমের দাম সর্বোচ্চ ডজন প্রতি ১৪২ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
আরও পড়ুনঃ আশুলিয়ার কাঠগড়া থেকে মাথাবিহীন খন্ডিত নারীর মরদেহ উদ্ধার
আগের তুলনায় বাজারে কোনো ধরনের সবজির দাম কমেনি। গতকাল খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি বেগুন ও বরবটি ৮০-১০০ টাকা এবং করলা, ঝিঙে, চিচিঙ্গা, ধুন্দুল, ঢ্যাঁড়স, কচুমুখি, শসা প্রভৃতি ৬০-৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এসব সবজির দাম দুই-তিন সপ্তাহ ধরেই এ দামে রয়েছে।
অন্যদিকে আলু, পেঁয়াজ ও রসুনের দাম আগের মতোই আছে। বাজারে প্রতি কেজি আলু ৫০-৬০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ১০০-১১০ টাকা, আমদানি করা পেঁয়াজ ৯০-১১০ টাকা ও রসুন ২২০-২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সাধারণ সময়ের চেয়ে চিংড়ি, পাঙাশ ও রুই মাছ কেজিতে ১৫-৪০ টাকায় বেশি বিক্রি হচ্ছে। এই দাম গত সপ্তাহেই বেড়েছিল, এরপর সেভাবে কমেনি। আর ইলিশ মাছের দোকানে ভিড় বেশি থাকলেও বিক্রি কম। রাজশাহীতে সাহেব বাজার এলাকায় ইলিশ ১২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে আর বড় সাইজের ইলিশ ১৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে মাংসের দাম আগের মতোই রয়েছে। গরুর মাংস ৭০০ ও খাসির মাংস ৯০০-১০০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
সাহেব বাজার থেকে আজ সকালে সবজি, ডিম ও ব্রয়লার মুরগি কেনেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী সরোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘সরকার দাম কমাতে কোনো উদ্যোগ নিয়েছে কি না জানি না। কিন্তু এভাবে বাড়তি দামে জিনিসপত্র কিনতে গিয়ে আমাদের কষ্টের শেষ নেই।’