মোঃ বিপুল মিয়া, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতাধীন কর্মসৃজন কর্মসূচি (ইজিপিপি), টিআর, কাবিখা, ও কাবিটা প্রকল্পের বরাদ্দ না পাওয়ায় গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন থমকে গেছে। এর ফলে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন হতদরিদ্র পরিবারের মানুষ, বিশেষত যারা এসব প্রকল্পের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয় থেকে জানা গেছে, উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ২,৩৬০ জন অতিদরিদ্র শ্রমিক কর্মসৃজন কর্মসূচির আওতায় কাজ করতেন। তারা রাস্তা, সেতু, কালভার্ট, মসজিদ-মন্দিরে মাটি ভরাট, পুকুর সংস্কারসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে নিয়োজিত থাকতেন।
কর্মসৃজন কর্মসূচি বন্ধ থাকায় হতদরিদ্র শ্রমিকরা চরম বিপাকে পড়েছেন। এক শ্রমিক বলেন, “আমরা দৈনিক ৪০০ টাকা মজুরি পেতাম। প্রকল্প বন্ধ হওয়ায় কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। পরিবার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি।”
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এসব প্রকল্পে কাজের সুযোগ পেয়ে তারা যেমন উপকৃত হতেন, তেমনি গ্রামীণ অবকাঠামোতেও উন্নয়ন হতো। প্রকল্পগুলো পুনরায় চালুর দাবি জানিয়েছেন তারা।
শিমুলবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শরিফুল আলম সোহেল বলেন, “আমাদের ইউনিয়নের অনেক রাস্তা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত। এসব রাস্তা সংস্কারে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির শ্রমিকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতেন। প্রকল্পগুলো চালু না থাকলে দরিদ্র মানুষ এবং গ্রামীণ অবকাঠামোর অবস্থা আরও বেহাল হবে।”
ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ বলেন, “সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে হতদরিদ্র মানুষ কাজের সুযোগ পেত। এখন এসব প্রকল্প বন্ধ থাকায় কর্মহীনতা ও দারিদ্র্য বেড়েছে। আমরা আশা করছি, দ্রুত এই প্রকল্পগুলো পুনরায় চালু হবে।”
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সবুজ কুমার গুপ্ত বলেন, “কর্মসৃজন কর্মসূচির মেয়াদ শেষ হয়েছে। টিআর, কাবিখা, কাবিটা প্রকল্পে কোনো বাজেট বরাদ্দ নেই। তবে জাতীয়ভাবে প্রকল্পগুলো পুনরায় চালুর সম্ভাবনা রয়েছে।”
আরও পড়ুনঃ উন্নত ভবিষ্যৎ গড়তে শিশুদের হাতে এন্ড্রোয়েড নয়: অধ্যক্ষ হেলালী
গ্রামবাসীরা বলছেন, এই প্রকল্পগুলো চালু থাকলে তারা কাজের সুযোগ পেতেন এবং গ্রামের রাস্তা, সেতু, কালভার্ট সংস্কার হয়ে এলাকার দৃশ্যমান উন্নয়ন হতো। প্রকল্প বন্ধ থাকায় এসব উন্নয়ন থেমে গেছে এবং হতদরিদ্র মানুষ দারিদ্র্যের ফাঁদে পড়ছে।
সরকার দ্রুত সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতাধীন প্রকল্পগুলো চালু করবে বলে আশাবাদী স্থানীয় মানুষ। এতে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি দরিদ্র মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত হবে।