
মোঃ সাকিবুল ইসলাম স্বাধীন, রাজশাহী প্রতিনিধিঃ রাজশাহীতে যুবলীগের এক নেতাকে গ্রেপ্তার করানোর জেরে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় শুরু হওয়া এ সংঘর্ষ রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলে। সংঘর্ষ চলাকালে দেশি অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, গুলি ছোড়া, ককটেল বিস্ফোরণ এবং তিনটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়, যার মধ্যে একটি ছিল সংবাদ সংগ্রহে আসা এক সাংবাদিকের। ঘটনায় পুলিশের নগর বিশেষ শাখার (সিটিএসবি) এক সদস্যসহ পাঁচজন আহত হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সংঘর্ষের পর রাত সাড়ে ১১টায় নগরীর মিয়াপাড়া এলাকায় আত্মীয়ের বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন মহিলাদলের সহ-ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক লাভলী খাতুন। তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে তার বাড়িতে হামলা হয়েছে।
লাভলী খাতুন জানান, আওয়ামী লীগের অত্যাচারের কারণে আগে তিনি বাড়িতে থাকতে পারেননি। কিন্তু এখন বিএনপিরই একটি পক্ষ তার বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। তিনি দাবি করেন, বিএনপির মহানগর যুবদলের সাবেক সদস্য সচিব মারুফ হোসেন জীবন তাকে পাঁচ লাখ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেন, যাতে তিনি বিষয়টি নিয়ে ঝামেলা না করেন। তবে তিনি সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। এরপর সন্ধ্যায় তার বাড়িতে ইফতার নিয়ে গেলে তিনি তা ফিরিয়ে দেন, যা নিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এবং একপর্যায়ে তার বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়।
লাভলী অভিযোগ করেন, হামলার মূল নির্দেশদাতা ছিলেন বিএনপি নেতা ইয়াহিয়া মিলু এবং তার ভাতিজা জীবনসহ আরও কয়েকজন। তিনি বলেন, পুলিশের নীরব ভূমিকা তাকে অবাক করেছে। পুলিশ হামলার সময় ঘটনাস্থলে না এসে দূরে দাঁড়িয়ে ছিল। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা এসে তাকে উদ্ধার না করলে তিনি হয়তো বেঁচে থাকতেন না বলেও মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুনঃ হিযবুত তাহরীর সন্দেহে কুবি শিক্ষার্থীকে র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদ, পরে মুক্তি
সংঘর্ষের বিষয়ে জানতে ইয়াহিয়া মিলু ও মারুফ হোসেন জীবনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তারা ফোন ধরেননি। তবে বিএনপির আরেক নেতা সনি হোয়াটসঅ্যাপে জানান, লাভলীর ভাই তাঁতী লীগ ও ছেলে যুবলীগ করতেন, যা নিয়ে ছাত্রদলের সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি হয়।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন জানান, বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেছে। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি। মামলা হলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।