নরসিংদীর রায়পুরায় ৬ দিনের নবজাতককে চিকিৎসা করাতে গিয়ে সিএনজি নসিমন মুখোমুখি সংঘর্ষে সিএনজিতে থাকা যাত্রী শেফালী আক্তার মিম (১৯) নামে এক নবজাতকের মায়ের মৃত্যু হয়েছে। এতে নিহতের শিশুসহ দুই বীর মুক্তিযোদ্ধা ও আরও চার যাত্রী গুরুতর আহত। আহতরা হলেন, নিহতের মা ফরিদা খাতুন(৪৫) বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম(৭৫) বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হুসেন(৭৫)। দুইজন বীর মুক্তিযোদ্ধা উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় চিকিৎসাধীন।
আজ শুক্রবার বেলা ২ টায় উপজেলার পৌর শ্রীরামপুর জনতা ব্যাংকের সামনের সড়কে এ দূর্ঘটনাটি ঘটে।
নিহত শেফালী উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের চর মেঘনা গ্রামের মস্তোফার স্ত্রী। একই এলাকার মির্জারচরের কাউসার মিয়ার মেয়ে।
পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানান, নরসিংদী থেকে চেড়ে আসা যাত্রীসহ সিএনজি রায়পুরা বাজার বাসস্ট্যান্ডে যাচ্ছিন শ্রীরামপুর বাজার জনতা ব্যাংকের সামনের সড়কে আসা মাত্রই বিপরীত দিখ থেকে রড বুঝাই নসিমন মুখোমুখি সংঘর্ষ বাঁধে। এ সময় সিএনজিতে থাকা যাত্রীদের গায়ে নসিমনের থাকা রড সজোরে আঘাত করে। এ সময় সিএনজির পিছনের ডান পাশে বসা শেফালীর শরীরের বিভিন্ন অংশে বিঁধে গিয়ে গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যায়। আহত দুই বীর মুক্তিযোদ্ধার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নয়ন চিকিৎসার জন্য চিকিৎসক নরসিংদী রেফার্ড করেন। শেফালীকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক অবস্থার অবনতি দেখে ঢাকায় পাঠানোর প্রস্তুতি নেয়ার আগেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুনঃ সাভারের জামসিং থেকে ২ কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার
নিহতের নানী জায়েদা খাতুন বলেন, আমার নাতী গত সাতদিন আগে ছেলে বাবু জন্ম দেন। শিশুটি জন্মের পর থেকে নিউমোনিয়াসহ নানা রোগে অসুস্থ ছিল। শিশুটিকে চিকিৎসা করাতে নরসিংদী যায়। ফেরার পথে রড বুঝাই নসিমনের থাকা রড ডুকে নাতীর মৃত্যু হয়। নাতী হত্যার বিচার চাই।
আহত নিহতের মা ফরিদা খাতুন বলেন, ৬ দিনের নাতি ও মেয়েকে নরসিংদীতে চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরার পথে সড়ক দূর্ঘটনায় মেয়ে নিহত হন। শ্রীরামপুরে আসা মাত্রই দূর্ঘটনাটায় শিকার হই। এতে আমি ও নাতি বেঁচে থাকলেও মেয়ের শরীরে রড ডুকে নিহত হন। মেয়ে হত্যার বিচার চাই।
রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তব্যরত চিকিৎসক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, শেফালী নামে ওই নারীকে শরীরের বিভিন্ন অংশে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে। অবস্থার অবনতি দেখে ঢাকায় পাঠানোর প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছিল। পরীক্ষা নিরিক্ষা করে তার মৃত্যু নিশ্চিত হই। ধারণা করা হচ্ছে তার শরীরের গরুতর জখম ক্ষত হয় শরীরের ভিতরে অধিক রক্তক্ষরণে মৃত্যু হয়েছে।
রায়পুরা থানার উপপরিদর্শক আরিফ রাব্বানী বলেন, দূর্ঘটনার পর পর-ই ঘটনাস্থল উপস্থিত হয়ে সিএনজি ও রড বুঝাই নসিমন এবং চালককে আটক করি। চালকসহ গাড়ি দুটো থানা হেফাজতে রয়েছে। নিহতের লাশ হাসপাতালে রয়েছে। সিএনজি চলাচল পলাতক রয়েছে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত দুইজন বীরমুক্তিযোদ্ধা অন্যত্র চিকিৎসাধীন। লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করি। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।