spot_img

― Advertisement ―

spot_img

ইবি জিয়া পরিষদের চালকদের মাঝে রেইনকোট বিতরণ

তানিম তানভীর, ইবি প্রতিনিধিঃ বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ৮১তম জন্মদিন উপলক্ষে তাঁর সুস্থতা কামনায় রেইনকোট বিতরণ করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) জিয়া পরিষদ।সোমবার...
প্রচ্ছদশিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গনক্যাম্পাসসংবিধান শিক্ষার্থীদের কল্যাণে গড়াঃ ইবিতে শিবির সভাপতি

সংবিধান শিক্ষার্থীদের কল্যাণে গড়াঃ ইবিতে শিবির সভাপতি

তানিম তানভীর, ইবি প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখার সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেছেন, “আমাদের সংবিধানের প্রতিটি অনুচ্ছেদ শিক্ষার্থীদের কল্যাণে গড়া। এটি নির্দিষ্ট কোনো ধর্মের শিক্ষার্থীদের জন্য নয়, বরং সবার জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করে।”

বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনের করিডোরে ছাত্রশিবিরের ৪৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

সভায় বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের উত্তরে মাহমুদুল হাসান বলেন, “আপনারা আপনাদের আদর্শ প্রচার করেন, আমরা আমাদের আদর্শ প্রচার করি। ইসলাম কখনোই অন্য ধর্মাবলম্বীদের জোর করতে বলে না। প্রত্যেকেরই নিজস্ব ধর্মীয় স্বাধীনতা রয়েছে। আমরা চাই, বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রত্যেক ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থী সমান সুযোগ পাক।”

তিনি আরও বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় ছুটির দিনগুলোর প্রতি প্রশাসনকে সম্মান দেখাতে হবে। ছাত্রশিবিরের অফিস শুধু মুসলিম শিক্ষার্থীদের জন্য নয়, বরং এটি সকল শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত। যে কোনো প্রয়োজনে শিক্ষার্থীরা এখানে আসতে পারেন।”

মতবিনিময় সভায় অংশ নেওয়া বিভিন্ন ধর্মের শিক্ষার্থীরা তাদের সুবিধা ও অসুবিধার কথা তুলে ধরেন।

খ্রিস্টান শিক্ষার্থীরা বলেন, “আমরা মেধার স্বাক্ষর রেখেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি। এই ক্যাম্পাস সকল ধর্মের মানুষের জন্য উন্মুক্ত। মাতৃভূমির টানে কেউ পিছু হটবো না। সততা ও মেধার মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।”

বৌদ্ধ শিক্ষার্থীরা বলেন, “আমাদের পাহাড়ি জনগোষ্ঠী যুগ যুগ ধরে বঞ্চিত হয়ে আসছে। আমাদের জীবনযাত্রার পার্থক্য থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়েও নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। অন্যান্য হলে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের জন্য আলাদা কক্ষ বরাদ্দ থাকলেও শেখ রাসেল হলে আমাদের জন্য কোনো কক্ষ বরাদ্দ নেই। আমরা এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।”

আরও পড়ুনঃ রাজশাহী কলেজে শেখ মুজিবের ম্যুরাল ও তিন ভবনের নামফলক ভেঙে শিক্ষার্থীদের নতুন নামকরণ

হিন্দু শিক্ষার্থীরা বলেন, “রমজান মাসে হলের ক্যান্টিনগুলোতে রান্না বন্ধ থাকে, ফলে খাবার পেতে সমস্যা হয়। বিশেষ করে শেখ রাসেল ও মুজিব হলে গরুর মাংস রান্না করা হয়, যেখানে একই উপকরণ ব্যবহৃত হয় মুরগি, মাছ বা সবজি রান্নার ক্ষেত্রেও। এটি আমাদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে। আমরা চাই, এই বিষয়গুলোতে প্রশাসন আরও সচেতন হবে।”

মতবিনিময় সভা শেষে অনেক শিক্ষার্থী জানান, এতদিন তারা ছাত্রশিবির সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করতেন। কিন্তু সরাসরি অংশগ্রহণ করে তাদের চিন্তাভাবনায় পরিবর্তন এসেছে।

এক শিক্ষার্থী বলেন, “আজকের আলোচনার পর বুঝতে পারলাম, ছাত্রশিবির সম্পর্কে অনেক গুজব ও প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হয়। আমাদের সুবিধা-অসুবিধাগুলো তারা মনোযোগ দিয়ে শুনেছে এবং সহানুভূতির সঙ্গে গ্রহণ করেছে। আশা করি, ভবিষ্যতে তারা আমাদের প্রতি আরও সহনশীল আচরণ করবে।”

সভায় উপস্থিত শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধর্মের শিক্ষার্থীদের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার দাবি জানান।