
তানিম তানভীর, ইবি প্রতিনিধিঃ গাজায় চলমান হত্যাযজ্ঞ ও মানবিক বিপর্যয়ের বিরুদ্ধে এক শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ হিসেবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ‘শোক বই’ প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছে মানবিক সংগঠন “মোরাল প্যারেন্টিং পরিবার”। ফিলিস্তিনের নির্যাতিত মানুষের প্রতি সহমর্মিতা ও মানবতার বার্তা ছড়িয়ে দিতে এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সংগঠনটি, যা ভবিষ্যতের জন্য হয়ে উঠবে এক অনন্য প্রতিবাদী স্মারক।
রবিবার (২৯ জুন) সকাল থেকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ডায়না চত্বরে লেখা সংগ্রহ কার্যক্রম চালিয়েছে মোরাল প্যারেন্টিং পরিবারের সদস্যরা।
এ সময় শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন এবং তাদের নাম, ঠিকানা ও স্বাক্ষরসহ হাতে লেখা শোকবার্তা প্রদান করেন। এসব বার্তা একত্রিত করে প্রস্তুত করা হবে বিশ্বের বৃহত্তম শোক বই।
সংগঠন সূত্রে জানা যায়, শিশু ও নারীদের ওপর অব্যাহত সহিংসতা, নির্বিচার বোমাবর্ষণ ও মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে একটি শান্তিপূর্ণ ও নৈতিক প্রতিবাদ হিসেবেই এই উদ্যোগ। সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা সংগঠনের শিক্ষার্থী ও স্বেচ্ছাসেবকরা সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছ থেকে হাতে লেখা বার্তা সংগ্রহ করছেন, যা সংকলিত হয়ে রূপ নেবে একটি বিশাল ‘শোক বই’-তে।
শোক বইটি প্রথমে সংকলন আকারে প্রকাশ করা হবে, পরবর্তীতে এতে যুক্ত হবেন দেশের খ্যাতনামা বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, সেলিব্রেটি ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মীরা। পরিণত বইটি সংরক্ষণের জন্য রাখা হবে ঢাকার একটি জাতীয় পাবলিক লাইব্রেরিতে, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম জানাতে পারে—এই সময়ের অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমরা নীরব ছিলাম না।
আরও পড়ুনঃ “৭১ ও ২০০৯’র পর রাষ্ট্রের মালিকানা এক গোষ্ঠীর হয়ে যায়” — ইবি উপাচার্য
সংগঠনটির ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার প্রতিনিধি মিশুক শাহরিয়ার বলেন, “মানবতা কখনো হার মানে না। আমাদের প্রতিবাদ অস্ত্র নয়—মানবিকতা, বিবেক ও শান্তির ভাষায়। আমরা বিশ্বাস করি, এই ‘শোক বই’ বিশ্বের বিবেককে নাড়া দেবে।”
তিনি আরও জানান, এ পর্যন্ত প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তার লেখা সংগ্রহ করা হয়েছে এবং আগামীকালও লেখা সংগ্রহ কার্যক্রম চলবে।
এ উদ্যোগকে অনেকেই সময়ের দাবিকেই মানবিক ভাষায় বলার প্রয়াস হিসেবে দেখছেন। একইসঙ্গে এটিকে বিশ্বমানের একটি মানবিক রেকর্ড হিসেবেও বিবেচনা করছেন সংশ্লিষ্টরা।