spot_img

― Advertisement ―

spot_img

রাজশাহীতে সেনাবাহিনীর বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা

মোঃ আব্দুল আলিম, রাজশাহী প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মানবিক উদ্যোগের অংশ হিসেবে রাজশাহীতে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকাল ৯টা থেকে...
প্রচ্ছদশিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গনক্যাম্পাস'মামলায় নিরপরাধ কেউ অন্তর্ভুক্ত হবে না, অপরাধীরা ছাড় পাবে না'

‘মামলায় নিরপরাধ কেউ অন্তর্ভুক্ত হবে না, অপরাধীরা ছাড় পাবে না’

মোঃ আব্দুল আলিম, রাজশাহী কলেজ প্রতিনিধিঃ রাজশাহী মহানগর জামায়াতের আমির ড. কেরামত আলী জানিয়েছেন, আমরা প্রতিটি মামলা দাখিলের প্রক্রিয়া সঠিকভাবে অনুসরণ করছি। নিরপরাধ কাউকে মামলা দেওয়া হবে না, তবে যারা দোষী তারা আইনের আওতায় আসবেই। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

শনিবার (৩১ আগস্ট) রাজশাহী নগরীর এক মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় জামায়াতে ইসলামীর এই নেতা এসব কথা বলেন।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে জামায়াতের অবস্থান সম্পর্কে ড. কেরামত আলী বলেন, আমাদের অবস্থান অপরিবর্তিত রয়েছে এবং আমরা ঘটনাগুলি খতিয়ে দেখছি। জামায়াত দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবে, তবে পুরো দায়ভার আমাদের পক্ষে নেওয়া সম্ভব নয়। সত্য উদঘাটনের জন্য যা যা করা প্রয়োজন, আমরা তা করব। জামায়াতের সঙ্গে কোনো লুটপাট বা ভাঙচুরের সংশ্লিষ্টতা নেই।

জুলুমকারী পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে মহানগর আমির বলেন, অনেক পুলিশ সদস্য আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষে কাজ করেছে। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের সদস্যদের চিহ্নিত করা হচ্ছে এবং প্রমাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে। আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।

জামায়াতে ইসলামীতে অন্য দলের নেতাকর্মীদের প্রবেশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের সংগঠন ন্যায়ের পথে প্রতিষ্ঠিত। আমরা কোনো সন্ত্রাসী বা অপরাধীদের জায়গা দেব না। যাচাই-বাছাই ছাড়া কাউকে সদস্য করা হবে না। তবে যারা সৎ ও ন্যায়ের পথে কাজ করতে ইচ্ছুক, তারা আমাদের সঙ্গে যোগ দিতে পারবে।

শেষে আওয়ামী লীগ সরকার ও তার সমর্থকদের সমালোচনা করে ড. কেরামত আলী বলেন, তারা ব্যর্থ হয়েছে। এখন মুক্ত পরিবেশে, তাদের আত্মসমালোচনা করা উচিত। পুলিশ যে তথ্য দিয়েছে, তা মিডিয়ায় প্রচারিত হয়েছে। এখন থেকে সত্য উদঘাটনে সাংবাদিকদের আহ্বান জানানো হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা রাজনৈতিক সব মামলা পর্যালোচনা করা হবে এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রত্যাহার করা হবে। চলতি বছরের পহেলা জানুয়ারি থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত দায়ের হওয়া সব মামলা দ্রুত প্রত্যাহার করা হবে।

সভায় সভাপতিত্ব করেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রাজশাহী মহানগরের আমির ড. কেরামত আলী। এ সময় মহানগর নায়েবে আমির অধ্যাপক সিদ্দিক হোসেন, অ্যাডভোকেট আবু মোহাম্মদ সেলিম, সেক্রেটারি ইমাজ উদ্দীন মণ্ডল, প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক অধ্যাপক একেএম সারওয়ার জাহান প্রিন্স, মহানগর ছাত্রশিবির সভাপতি সিফাত আলমসহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় মূল বক্তব্য উপস্থাপনকালে মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি ইমাজ উদ্দীন মণ্ডল বলেন, ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন। নতুন বাংলাদেশ গঠনের জন্য আমাদের ৮৫০ জন শহীদের রক্তে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে এবং জামায়াতে ইসলামী শুরু থেকে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, গত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের দ্বারা আমরা চরম নির্যাতনের শিকার হয়েছি। এক হাজার জন শহীদ হয়েছেন, অসংখ্য নেতাকর্মী আহত ও আটক হয়েছেন। অনেক নেতাকর্মী গুম ও নিখোঁজ রয়েছেন। হাসিনা সরকারের আমলে আমিরে জামায়াতসহ ৬ জন শীর্ষ নেতাকে বিচারিক প্রক্রিয়ায় হত্যা করা হয়েছে। শত শত মামলা করে আমাদের ওপর জুলুম ও নির্যাতন চালানো হয়েছে। আমাদের অনেকের জানাজাও পড়তে দেয়া হয়নি, সমালোচনা করতে গেলে ডিজিটাল আইনে মামলা করা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ ফুলপুরে চাকরি নামে ৭লক্ষ টাকার প্রতারনার অভিযোগ 

তিনি আরও বলেন, এই ১৬ বছরে রাজশাহীতে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ এবং সরকারি বাহিনী কর্তৃক শহীদ নোমানিসহ অনেককে হত্যা করা হয়েছে, কিন্তু বিচার পাওয়া যায়নি। এখন সময় এসেছে দেশ গড়ার, নতুন সহিংসতার নয়। পুলিশ যে অত্যাচার করেছে, তা শুধুমাত্র দেশের স্বার্থে সহ্য করেছি।

সভায় বক্তারা বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে রাজশাহীতে জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে ৫৫টি মামলা হয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে ৪৬২টি মামলা হয়েছে। মহানগর আমিরসহ সাড়ে পাঁচশো নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। মামলাগুলোর ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেটি ১ জানুয়ারি থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত মামলাগুলোর ওপর কার্যকর হবে।

তারা আরও বলেন, পূর্বের রাজনৈতিক মামলাগুলোর ব্যাপারে কেন্দ্রীয়ভাবে তালিকা চাওয়া হয়েছে এবং পর্যালোচনা করে প্রত্যাহারের আদেশ আসবে। এই প্রক্রিয়ায় ৬ মাস থেকে এক বছর সময় লাগতে পারে। আমরা চাই না দুর্নীতির মামলাগুলো রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রত্যাহার করা হোক।