মোঃ তরিকুল ইসলাম, কলাপাড়া (উপজেলা) প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশের দক্ষিণ উপকূলের মুক্ত বাতাসে সাজানো কুয়াকাটা শীতের আগমনে যেন এক নতুন রূপে উদ্ভাসিত হয়েছে। শীতল হাওয়া, সাগরের গর্জন, আর ভোর-সন্ধ্যার অনন্য সূর্যের খেলা এই সৈকতকে করে তুলেছে আরও মোহনীয়। প্রতিদিনই হাজারো পর্যটক প্রকৃতির এই অপার সৌন্দর্যের টানে ছুটে আসছেন কুয়াকাটায়।
প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যঃ কুয়াকাটার পরিচয় তার সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের অপূর্ব দৃশ্য। শীতকালে সাগরের আকাশ আরও নির্মল থাকে, আর সেই সঙ্গে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যেন আরও জীবন্ত হয়ে ওঠে। ভোরে সূর্যের প্রথম আলোকচ্ছটায় সাগরের পানিতে তৈরি হয় সোনালি আভা, আর সন্ধ্যায় সূর্যাস্তের লালিমা যেন সমুদ্রতীরে এক শিল্পিত চিত্রকর্ম এঁকে দেয়।
পর্যটকদের ঢলঃ শীতের কুয়াকাটা মানেই পরিবার, বন্ধু-বান্ধব আর প্রিয়জনদের সঙ্গে একটি আনন্দময় সময় কাটানোর সুযোগ। সাপ্তাহিক ছুটি কিংবা বিশেষ দিনগুলোতে এখানে পর্যটকদের ভিড় থাকে চোখে পড়ার মতো। সৈকতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের পাশাপাশি নৌভ্রমণ, কাঁকড়া ও সামুদ্রিক মাছের স্বাদ নেওয়া এবং স্থানীয় হস্তশিল্প কেনার মজাই আলাদা।
সুবিধা ও নতুন উদ্যোগঃ পর্যটকদের জন্য স্থানীয় প্রশাসন বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। উন্নত সড়ক ব্যবস্থা, আধুনিক হোটেল এবং নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা হয়েছে। সৈকত পরিষ্কার রাখতে এবং পর্যটকদের প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহে সেবাকর্মীরাও নিয়োজিত আছেন।
পর্যটন ও স্থানীয় সংস্কৃতিঃ শীতকালে কুয়াকাটার আশপাশের এলাকায় স্থানীয় মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। এর মাধ্যমে পর্যটকরা স্থানীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পান। পাশাপাশি, সৈকতের পাড়ে ক্যাম্পফায়ার আর শীতের রাতের গরম চায়ের আড্ডা ভ্রমণকে করে তোলে আরও আনন্দময়।
আরও পড়ুনঃ নিখোঁজের ৪ দিন পর পুকুর থেকে শিশুর লা’শ উদ্ধার
পরামর্শ ও বার্তাঃ কুয়াকাটায় ভ্রমণ মানে শুধু প্রকৃতি উপভোগ করা নয়, বরং পরিবেশের যত্ন নেওয়ারও দায়িত্ব। প্লাস্টিক বর্জ্য ফেলা বা প্রকৃতির ক্ষতি হয় এমন কাজ থেকে বিরত থেকে এই সৌন্দর্যকে ধরে রাখতে হবে আমাদের।
এই শীতে যদি প্রকৃতির সান্নিধ্যে নিজেকে হারিয়ে ফেলতে চান, তবে কুয়াকাটা হতে পারে আপনার স্বপ্নময় গন্তব্য। সমুদ্রের ঢেউ আর শীতের হিমেল বাতাসের সঙ্গে এই স্থান আপনাকে দেবে এক নতুন জীবনের অনুভূতি।