spot_img

― Advertisement ―

spot_img

উপাচার্যের আশ্বাসে অনশন ভাঙলেন বেরোবি শিক্ষার্থীরা

বেরোবি প্রতিনিধি: ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে আমরণ অনশন করা শিক্ষার্থীরা অবশেষে উপাচার্যের আশ্বাসে অনশন ভেঙেছেন।বুধবার (১৯ আগস্ট) রাত সাড়ে ১০টার দিকে রংপুরের বেগম...
প্রচ্ছদফিচারজানার স্মৃতিতে শিরোপা উৎসর্গ, হৃদয়ে গেঁথে থাকা বাবার নাম লুইস এনরিকে

জানার স্মৃতিতে শিরোপা উৎসর্গ, হৃদয়ে গেঁথে থাকা বাবার নাম লুইস এনরিকে

স্পোর্টস ডেস্ক: গতকাল রাতে মিউনিখে ইউরোপিয়ান ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে চ্যাম্পিয়নস লিগের মুকুট জিতে ইতিহাস গড়লেন লুইস এনরিকে। কিন্তু পিএসজিকে নিয়ে গৌরবের সেই মুহূর্তেও লুইস এনরিকের মনে ছিল তাঁর প্রয়াত কন্যা জানা মার্তিনেজ।

ম্যাচ শেষে তার পরনে থাকা টি-শার্টে ছাপা ছিল ছোট্ট জানার ছবি—হাতে পিএসজির পতাকা, পাশে লেখা “We are the Champ!”। গ্যালারিতেও ছিল একই টিফো। দর্শকসারিতে আলোকিত সেই ছবি দেখে স্মৃতিকাতর হয়ে মুখে মুচকি হাসলেন এনরিকে। বললেন—“জানাকে মনে রাখতে কোনও শিরোপা লাগে না, প্রতিদিনই সে আমার কল্পনায় বেঁচে থাকে। জয়-পরাজয়ের বাইরেও ও আমার আশেপাশেই থাকে।”

কি হয়েছিল ছোট্ট জানা মার্তিনেজের?

২০১৯ সালের শুরুতে মেয়ে জানা মার্তিনেজ আক্রান্ত হন বিরল এক হাড়ের ক্যান্সারের (Osteosarcoma) টানা পাঁচমাস বিরল এই অসুস্থতার সাথে লড়াই করেন জানা মার্তিনেজ। ২০১৯ সালের জুন মাসে তখন লুইস এনরিকে স্পেন জাতীয় দলের দায়িত্ব থেকে সাময়িকভাবে সরে দাঁড়ান মেয়ের চিকিৎসার প্রতি পূর্ণ মনোযোগ দেয়ার জন্য।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত রোগের কাছে হার মানতে হয় জানা মার্তিনেজের। ২০১৯ সালের ২৯ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন জানা মার্তিনেজ। সেই সময় লুইস এনরিকে এবং তার স্ত্রী এলেনা কুলেল সহ পুরো পরিবার শোকে প্রচন্ডভাবে ভেঙ্গে পড়েন।

২০১৫ সালে বার্সেলোনার কোচ হিসেবে এনরিকে চ্যাম্পিয়নস লিগ জয় করেন বার্লিনের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে। সেই বিজয়ের মুহূর্তে মাঠজুড়ে বাবার সঙ্গে দৌড়ে বেড়ানো, ৮ নাম্বার বার্সেলোনা জার্সি পরা জানার সেই হাসিমাখা মুখ আজও যেন ভেসে ওঠে এনরিকের চোখে। এবার আর সেই দৌড় নেই, নেই কণ্ঠে হাসি—তবুও মনের গভীরে জানাকে অনুভব করেছেন এনরিকে।

ম্যাচের পর আবেগঘন কণ্ঠে এনরিকে বলেন, “জানা আজ থাকলে হয়তো মাঠজুড়ে দৌড়াতো। আমি নিশ্চিত সে আজ খুব খুশি হয়েছে। তবে জয় নয়, ওর স্মৃতি আমাকে প্রতিদিন বাঁচার শক্তি দেয়। আমরা জানার সঙ্গে ছিলাম মাত্র নয় বছর, কিন্তু সেই নয় বছরেই সে আমাদের জীবনে অসংখ্য আনন্দ বয়ে এনেছে। আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি।”

আরও পড়ুনঃ বাফুফের অবহেলায় মাঠে অনিশ্চিত বাংলাদেশ ফুটবল আলট্রাসের আয়োজন

২০০৯ সালে জন্ম নেওয়া জানা ছিল লুইস এনরিকে ও এলেনা কুলেলের সর্বকনিষ্ঠ সন্তান। তার বড় দুই ভাইবোন প্যাচো ও সিরার সঙ্গেও জানার গভীর বন্ধন ছিল। জানার মৃত্যু নিয়ে একটি ডকুমেন্টারিতে এনরিকে বলেছিলেন, “আমার মেয়ে আমাদের জন্য একটি নক্ষত্র হয়ে আছে, যে প্রতিদিন আমাদের পথ দেখায়।”

চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে বহু বিজয়, বহু ট্রফি এসেছে, কিন্তু লুইস এনরিকে ও তার জানার গল্প এক অনন্য আবেগের অধ্যায় হয়ে থাকবে ফুটবলভক্তদের হৃদয়ে। কারণ ফুটবল কেবল খেলা নয়, তা জীবনের প্রতিচ্ছবিও বটে—যেখানে জয় আসে চোখের জলে, আর স্মৃতিতে বেঁচে থাকে প্রিয়জনের হাসি।

এডি/ মুহাম্মদ কাইউম