
টিউলিপ সিদ্দিকের মন্ত্রিত্ব ছাড়ার ঘটনায় যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) জোরালো আলোচনা হয়। শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তির কাছ থেকে ফ্ল্যাট উপহার নেওয়া এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে পদত্যাগের পরও তার বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় থামেনি।
বিরোধী দলীয় নেত্রী কেমি বাডোনেচ বলেন, “দুর্নীতির অভিযোগে পদত্যাগ করলেও প্রধানমন্ত্রী তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুর (টিউলিপ) পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। টিউলিপ দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী হয়েও নিজেই দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন। বাংলাদেশের উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, টিউলিপের লন্ডনে উপহারের ফ্ল্যাট ডাকাতি করা অর্থের মাধ্যমে কেনা হতে পারে। বাংলাদেশকে এই অভিযোগ তদন্তে সহযোগিতা করার প্রস্তাব দেওয়া হবে কি না?”
প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার উত্তপ্ত পরিবেশে জবাব দেন, “টিউলিপ তার বিরুদ্ধে তদন্তের আহ্বান করেছিলেন এবং তদন্তে তিনি নীতিভঙ্গের প্রমাণ পাননি। তিনি সম্পূর্ণ সহযোগিতা করেছেন এবং গত সোমবার নিজেই তদন্ত চেয়েছিলেন। এ বিষয়ে কোনো অসঙ্গতি পাওয়া যায়নি।”
তিনি আরও বলেন, “ব্রিটিশ জনগণকে ধন্যবাদ তারা সাবেক সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিয়েছে। টিউলিপের পদত্যাগের বিষয়টি নিয়ে অতিরঞ্জিত প্রতিক্রিয়া দেখানো হচ্ছে, অথচ আগে ক্ষমতাসীনদের অনেক বড় অসঙ্গতি চুপচাপ মেনে নেওয়া হয়েছে।”
কেমি বাডোনেচ কেয়ার স্টারমারের জবাবে বলেন, “বাংলাদেশকে তদন্তে সহায়তা করার প্রশ্নের উত্তর তিনি এড়িয়ে গেছেন। তদুপরি, তিনি দুর্নীতিতে অভিযুক্তদের প্রতিরক্ষা করছেন, যা লজ্জাজনক।”
আরও পড়ুনঃ আরও ১৪ সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাব তলব করল বিএফআইইউ
তিনি আরও বলেন, “টিউলিপের ওপর পূর্ণ আস্থা প্রকাশ করেছিলেন স্টারমার, অথচ দুর্নীতির কারণে তাকেও পদত্যাগ করতে হলো। এটি প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের ওপর প্রশ্ন তুলছে।”
টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এবং তার পদত্যাগের ফলে ব্রিটেনের রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশের রূপপুর প্রকল্প এবং লন্ডনের সম্পত্তি কেনার আর্থিক উৎস নিয়ে আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি উঠেছে। ব্রিটিশ সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টি রাজনৈতিক ও আইনি দৃষ্টিকোণ থেকে জটিল আকার ধারণ করেছে।