তথ্য ও প্রযুক্তি ডেস্কঃ প্রযুক্তি খাতে বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় পারদর্শী মেধাবীদের দলে ভেড়ানোর প্রতিযোগিতা চলছে। এই প্রতিযোগিতায় গুগল তাদের সাবেক কর্মী নোয়াম শাজিরকে পুনরায় ফিরিয়ে এনে অন্যদের থেকে অনেকটা এগিয়ে গেছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শাজিরকে গুগলে ফিরিয়ে আনতে ২৭০ কোটি মার্কিন ডলার খরচ করতে হচ্ছে গুগলকে।
নতুন এ চুক্তির মাধ্যমে শাজির গুগলের প্রধান কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রকল্প ‘জেমিনি’তে নতুন টেকনিক্যাল হেড হিসেবে যোগ দিচ্ছেন। তিনি জেফ ডিন ও অরিওল ভিন্যালসের সাথে কো-লিডার হিসেবে কাজ করবেন। ২০০০ সালে গুগলে যোগ দেওয়ার সময় শাজির ছিলেন গুগলের প্রথম কর্মীদের মধ্যে একজন। গুগলে তার প্রথম বড় প্রকল্প ছিল বানান সংশোধন ব্যবস্থা উন্নয়ন। ২০১৭ সালে ‘অ্যাটেনশন ইজ অল ইউ নিড’ নামে একটি গবেষণা পত্র প্রকাশ করে তিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ পরিবর্তন করেন।
গুগলে থাকার সময় শাজির তার সহকর্মী ড্যানিয়েল ডি ফ্রেইটাসের সাথে ‘মীনা’ নামে একটি চ্যাটবট তৈরি করেন, যা বিভিন্ন বিষয়ে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলতে সক্ষম ছিল। তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে, এটি গুগলের সার্চ ইঞ্জিনকে প্রতিস্থাপন করতে সক্ষম হবে এবং গুগলকে ট্রিলিয়ন ডলারের মুনাফা এনে দেবে। কিন্তু নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচারের উদ্বেগের কারণে গুগল তখন মীনা প্রকাশ করতে রাজি হয়নি, ফলে তিনি দীর্ঘ ২১ বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করে গুগল ছাড়েন।
২০২১ সালে শাজির গুগল ছেড়ে ‘ক্যারেক্টার ডট এআই’ নামে একটি চ্যাটবট প্ল্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠা করেন এবং গুগলে পুনরায় যোগ দেওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি ক্যারেক্টার এআই-এর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কিছু সময় পর ক্যারেক্টার সমস্যার সম্মুখীন হলে গুগল শাজিরকে পুনরায় নিয়োগ দিতে আগ্রহী হয়ে ওঠে এবং ২ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে ‘ক্যারেক্টার’ এর প্রযুক্তির লাইসেন্স কিনে নেয়।
আরও পড়ুনঃ ইসরায়েল-লেবানন উত্তেজনা বৃদ্ধি: সীমান্তে সহিংসতা
গুগলে শাজিরের প্রত্যাবর্তনকে মূলত এই মাল্টিবিলিয়ন ডলারের লাইসেন্স ফি পরিশোধের কারণে দেখা হচ্ছে। শাজিরের পে আউট ছাড়াও, ক্যারেক্টারের বিনিয়োগকারী এবং কর্মচারীদের শেয়ার কেনার জন্য এবং স্টার্টআপটির কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার জন্য গুগলের অর্থ খরচ করতে হয়েছে। শাজির এবং ডি ফ্রেইটাসের সাথে ক্যারেক্টারের আরও ৩০ জন সহকর্মী গুগলে যোগ দিয়েছেন।
গুগলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা সার্জি ব্রিন জানিয়েছেন, কোম্পানিটি আগে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহারে আত্মবিশ্বাসী ছিল না, কিন্তু এখন দ্রুত প্রযুক্তি বিকাশ করছে। “নোয়াম আবার গুগলে ফিরে এসেছেন, যা সত্যিই চমৎকার,” তিনি যোগ করেন।
মাইক্রোসফট এবং অ্যামাজনও এই বছর একই ধরনের চুক্তি করেছে। এই ধরনের চুক্তির মাধ্যমে তারা সহজেই অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিভাবান এআই গবেষকদের নিজেদের প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দিতে পারে, এবং এর জন্য অধিগ্রহণ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদনের প্রয়োজন পড়ে না।