
তানিম তানভীর, ইবি প্রতিনিধিঃ দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেছেন, একসময় বাংলাদেশে সামরিক বাহিনী নিয়ে কোনো খবর প্রকাশ করতে সংবাদ মাধ্যম দ্বিধাগ্রস্ত হতো। আমি মনে করি পিরিয়ডটা আমরা পার হয়ে গেছে। দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ভারতীয় দালাল ও ‘র’ এর অনুপ্রবেশ ঘটেছে, তাদের ব্যাপারে আমার দেশ পত্রিকা ক্রমাগতভাবে খবর প্রকাশ করে যাচ্ছে। কারণ আমরা যদি এই ‘র’ কিংবা ভারতের দালালদের মুখোশ উন্মোচন না করি, তাহলে দীর্ঘমেয়াদী লড়াইয়ে আমরা জয় লাভ করতে পারব না। কারণ ঘরের ভিতরে শত্রু রেখে আপনি বিদেশীদের সাথে যুদ্ধে জয়লাভ করতে পারবেন না।
মঙ্গলবার(৫ জুলাই) ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) জুলাই বিপ্লবের প্রথম বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম। এছাড়াও শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরাসহ রাজনৈতিক ছাত্র-শিক্ষক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘বিপ্লবের বিপদ দুই দিক থেকে আসতে পারে, অভ্যন্তরীণ ও বহিঃশত্রু। অভ্যন্তরীণভাবে সমাজে ফ্যাসিবাদের দোসর ও ভারতীয় দালালদের অনুপ্রবেশ ঘটেছে, যারা বিপ্লব ব্যর্থ করতে চায়। এক্সটারনাল থ্রেট হলো দেশের ভৌগলিক প্রতিবেশী বা অন্য কোনো রাষ্ট্রের যেকোনো থ্রেট। একটা রাষ্ট্রের ইমিডিয়েট থ্রেট তার প্রতিবেশীদের কাছ থেকে আসে। সকল রাষ্ট্রের প্রতিবেশী তার পোটেনশিয়াল ও কম্পিটিটর এনিমি। সেই ক্ষেত্রে আমাদের অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
আরও পড়ুনঃ নানা আয়োজনে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস পালিত
তিনি আরও বলেন, ‘বিপ্লবে ছাত্ররা নেতৃত্ব দিলেও সকল শ্রেণির মানুষ এতে অংশগ্রহণ করেছে। তাই কেউ যেন এমন কিছু না করে যাতে এই বিপ্লব প্রশ্নবিদ্ধ হয়। কেবল এ বিশ্ববিদ্যালয়ই নয়, বাংলাদেশের প্রতিটি রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে যে সমস্ত ফ্যাসিবাদের দোসর কিংবা ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদের দালালরা আছেন, তাদেরকে খুঁজে বের করে তাদের চিহ্নিত করা আমাদের সকলের কর্তব্য।’
মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘এই সরকারের পক্ষে সকল মৌলিক পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়। নির্বাচিত সরকারের প্রতি আহ্বান তারা যেন তরুণদের জন্য বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে। বিপদের সময় তারুণ্যের প্রশিক্ষিত শক্তিই হবে আমাদের প্রতিরক্ষা। তরুণদের মধ্যে আমি অসাধারণ পরিবর্তন দেখেছি। বিশেষ করে ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে এবং ইসলামী মূল্যবোধে তাদের দৃঢ়তা আমাকে আশাবাদী করেছে।’
এর আগে বেলা সাড়ে ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন চত্বর থেকে বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে এসে আলোচনা সভায় মিলিত হয়। পরে অনুষ্ঠানে জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের শহীদদের স্মরণে দোয়া, নিরবতা পালন ও বিপ্লবের ডকুমেন্টারী প্রদর্শন করা হয়। পরে জুলাই আন্দোলনের স্মৃতি নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের লেখা সংবলিত বই ‘জুলাই স্মৃতিকথা’ এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এছাড়াও জুলাই উপলক্ষে আয়োজিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার দেওয়া হয়। সবশেষে ‘জুলাই স্মৃতি সংগ্রহশালা’ উদ্বোধন করা হয়।



