
দেশে ভোটারদের ভোট প্রদানের সময় নিয়ে বিভক্ত মতামত, এক জরিপে দেশের ভোটারদের মধ্যে ভোট প্রদানের সময় নিয়ে ভিন্নমত দেখা গেছে। ৩২ শতাংশ ভোটার চান চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক চাইলেও ৬৮ শতাংশ মানুষ চায় না। এদের মধ্যে, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি ও জুন মাসের মধ্যে নির্বাচন চায় যথাক্রমে ১২ শতাংশ ও ১১ শতাংশ ভোটার। ২৫ শতাংশ ভোটার আবার আগামী বছরের ডিসেম্বর বা তার পরের সময় নির্বাচন আশা করেন।
এই ফলাফল প্রকাশ করেছে ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভার্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি), ভয়েস ফর রিফর্মের সহযোগিতায় পরিচালিত ‘জনগণের মতামত, অভিজ্ঞতা ও প্রত্যাশা জুলাই-২০২৫’ শীর্ষক একটি জনমত জরিপ। সোমবার (১১ আগস্ট) বাংলাদেশ জাতীয় আর্কাইভ মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই জরিপের ফলাফল তুলে ধরেন বিআইজিডির ফেলো সৈয়দা সেলিনা আজিজ।
জরিপে অংশগ্রহণকারী প্রায় ৫ হাজার ৪৮৯ জনের মধ্যে ৪৮ দশমিক ৫ শতাংশ এখনও ভোট দেওয়ার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেননি। ভোট দেবেন না বলে জানিয়েছেন ১ দশমিক ৭ শতাংশ।
সৈয়দা সেলিনা আজিজ জানান, দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে নাগরিকদের আশাবাদ আগের তুলনায় কমে এসেছে। ২০২৪ সালের আগস্টে ৭১ শতাংশ মানুষ মনে করতেন দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ সঠিক পথে এগুচ্ছে, যা এখন কমে ৪২ শতাংশে নেমে এসেছে। অর্থনৈতিক অবস্থার ওপর বিশ্বাসও ৬০ শতাংশ থেকে কমে ৪৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
জরিপে দেশের প্রধান সমস্যার মধ্যে ১৫ শতাংশ মানুষ অর্থনীতি ও ব্যবসায় মন্দাকে সবচেয়ে বড় সমস্যা মনে করেন। অন্যদিকে ১৪ শতাংশ আইনশৃঙ্খলা অবনতি, ১৩ শতাংশ রাজনৈতিক অস্থিরতা, ৯ শতাংশ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং ১৮ শতাংশ নির্বাচিত সরকার না থাকার বিষয়টিকে সমস্যার মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
আরও পড়ুনঃ দেশের ৪৮ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ সিদ্ধান্ত নেননি ভোট কাকে দেবেন, বিআইজিডি জরিপ
সার্বিকভাবে, ভোটারদের ৭০ শতাংশ আশাবাদী যে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হবে, যেখানে ১৫ শতাংশ মনে করেন নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না।
নির্বাচনের পূর্বে সংস্কার প্রক্রিয়ার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে ৫১ শতাংশ ভোটার বলেন, ভালো সংস্কার করা হোক তারপর নির্বাচন হোক। ১৭ শতাংশ জরুরি কিছু সংস্কার চায়, আর ১৪ শতাংশ নির্বাচন থেকে সংস্কার বাদ দিতে চান।
এছাড়া, মব সহিংসতা নিয়ে দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ উদ্বিগ্ন। মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ৫৬ শতাংশ এবং রাতে চলাচলের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ ব্যক্ত করেছেন ৬১ শতাংশ মানুষ।
এ বিষয়ে আলোচনায় বিআইজিডির ফেলো সৈয়দা সেলিনা আজিজ বলেন, “আমরা তৃতীয়বারের মতো এ ধরনের জনমত জরিপ পরিচালনা করেছি, যার মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি, অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম এবং তরুণদের রাজনৈতিক ধারণা সম্পর্কে মূল্যবান তথ্য পাওয়া গেছে।”



