spot_img

― Advertisement ―

spot_img

মানুষের দোয়ার কারণেই গুম থেকে জীবিত ফিরেছি: হুম্মাম কাদের চৌধুরী

মোহাম্মদ ইসমাইল, চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেছেন, “২০১৬ সালে আমি সাত মাসের জন্য গুম হয়েছিলাম।...
প্রচ্ছদজাতীয়মানুষের দোয়ার কারণেই গুম থেকে জীবিত ফিরেছি: হুম্মাম কাদের চৌধুরী

মানুষের দোয়ার কারণেই গুম থেকে জীবিত ফিরেছি: হুম্মাম কাদের চৌধুরী

মোহাম্মদ ইসমাইল, চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেছেন, “২০১৬ সালে আমি সাত মাসের জন্য গুম হয়েছিলাম। অনেকেই ভেবেছিলেন হয়তো লাইন ঘাট করে আমি ফিরে এসেছি। কিন্তু বাংলাদেশে এরকম কোনো নজির নেই যে, লাইন ঘাটের কারণে আওয়ামী লীগের জুলুম থেকে কেউ বেঁচেছে। শুধুমাত্র মানুষের দোয়ার কারণেই গুম থেকে জীবিত ফিরে আসতে পেরেছি।”

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার শিলক ইউনিয়ন বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে শিলক এম শাহ আলম চৌধুরী স্কুল মাঠে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, “আমার ভরসা ছিল রাঙ্গুনিয়ার মানুষ, যারা আমার বাবার জন্য লড়াই করেছিলেন। বাবাকে হারানোর পরও আমি দেখেছি আপনারা মাঠে ছিলেন, দলকে ধরে রেখেছিলেন এবং সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর জন্য লড়াই করেছেন। গুম থেকে ফেরার পর ছবিতে দেখেছি, প্রতি সপ্তাহে আপনারা আমার জন্য মসজিদ-মাদ্রাসায় দোয়া করেছেন। আমি আপনাদের কাছে ঋণী, আর এই ঋণ শোধ করতেই আপনাদের কাছে এসেছি। আমার ভোট লাগবে না, দোয়া লাগবে, কারণ এর কারণেই আমি এখনো জীবিত আছি।”

তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেন, “তারেক রহমান সাহেব এই বাংলাদেশ মেরামতের জন্য ৩১ দফা পাঠিয়েছেন। এটি শুধু মঞ্চে দাঁড়ানো নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। জনগণের সম্পৃক্ততা, মতামত, পরিশ্রম, সহযোগিতা ও দোয়া ছাড়া এর একটি দফাও বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।”

এ সময় শিলক ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক মোকাররম হোসেন বান্টুর সভাপতিত্বে এবং আবুল হোসেন চৌধুরী ও মহসিন তালুকদারের যৌথ সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা শওকত আলী নূর, এডভোকেট কামাল হোসেন চৌধুরী, জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, নিজামুল হক তপন, হাজী মোহাম্মদ ইলিয়াছ সিকদার, হেলাল উদ্দিন শাহ, ইউসুফ চৌধুরী, ভিপি আনছুর উদ্দিন, আবদুল করিম চৌধুরী, আবদুল গফুর খান, মাকসুদুল হক, পারভেজ মোশাররফ, ফারুকুল ইসলাম, জহিরুল ইসলাম বাবর, শওকত তালুকদার, জামশেদ মেম্বার, নাজিম চেয়ারম্যান, বাবর আলম তালুকদার, আবু বক্কর, হেলাল উদ্দিন আহমেদ, তাহনিয়াজ মোরশেদ তোহা, নিশাত সিকদার, খায়েজ আহমেদ বাচা, মহসিন তালুকদার প্রমুখ।

এমপি হওয়া প্রসঙ্গে হুম্মাম কাদের বলেন, “অনেকে অপেক্ষায় আছেন কে এমপি হবে। তবে আমি সেই অপেক্ষায় নেই। মাঠে নেমেছি জনগণের সেবা করার জন্য। এমপি হবো কি না, তা রাব্বুল আলামিন ঠিক করবেন।”

আরও পড়ুনঃ রাজবাড়ীতে নিখোঁজ গৃহবধূর সন্ধানে পরিবারের সাংবাদিক সম্মেলন

বিএনপিতে গ্রুপিং প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “অনেকে বলেন রাঙ্গুনিয়ায় বিএনপির অনেক গ্রুপ আছে। কিন্তু সত্যিকার অর্থে এখানে কোনো গ্রুপিং নেই। যারা বিএনপিকে ভালোবাসেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে, বেগম খালেদা জিয়াকে ও তারেক রহমান সাহেবকে ভালোবাসেন—তারা সবাই একই পরিবারের সদস্য। নির্বাচনের সময় দল যাকে প্রার্থী ঘোষণা করবে, আমরা সবাই তার জন্য কাজ করবো।”

‘রাউজান না রাঙ্গুনিয়া’ প্রসঙ্গে হুম্মাম কাদের বলেন, “আমার বাবা বহু আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন রাঙ্গুনিয়া মানেই রাঙ্গুনিয়া। সেই সিদ্ধান্ত আমি পরিবর্তন করতে পারি না। রাঙ্গুনিয়ার মানুষ যখন বলে আমি তাদের সন্তান, তখন তাদের পিঠ দেখানো আমার পক্ষে সম্ভব নয়।”

এ ছাড়া নারায়েতকবির স্লোগান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এখানে হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী অনেক ভাই এসেছেন। আমি যে তকবির দিই, তা সবার জন্যই। কারণ আমার ঈমান শক্তিশালী—এটা প্রমাণ করতেই আমি এই তকবির উচ্চারণ করি। এ বিশ্বাস অন্য ধর্মাবলম্বীরাও রাখেন, কারণ মঞ্চে দাঁড়িয়ে আমি সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসের কথাই বলি।”

তিনি আরও বলেন, “গত ১৬ বছরে রাঙ্গুনিয়ার অনেক সড়ক মেরামত করা হয়নি। এগুলোর তালিকা দিলে চেষ্টা করবো আগামী নির্বাচনের আগেই যেন এগুলো মেরামত করা যায়।”

এদিকে জনসভাকে কেন্দ্র করে এলাকাজুড়ে উৎসবের আমেজ দেখা দেয়। ইউনিয়নের প্রতিটি সড়কের মোড়ে মোড়ে ব্যানার-ফেস্টুনে স্বাগত জানানো হয় হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে। ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে পৃথক মিছিল নিয়ে আসেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা। উপজেলার অন্যান্য এলাকা থেকেও মিছিল নিয়ে যোগ দেন তারা। নির্ধারিত সময়ের আগেই পুরো মাঠে জনসমাগম ঘটে, যা আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ যোগাবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।