
শেখ মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, সাভার প্রতিনিধিঃ ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সিএন্ডবি স্ট্যান্ড থেকে কলমা হয়ে আশুলিয়া পর্যন্ত রাস্তাটি গত তিন বছর ধরে চলাচলের অনুপযোগী অবস্থায় রয়েছে। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছায়। বর্তমানে রাস্তাটি সংস্কারের কাজ শুরু হলেও এই কাজের অর্থায়ন নিয়ে দেখা দিয়েছে বিভ্রান্তি ও বিতর্ক।
স্থানীয় প্রশাসনের দাবি অনুযায়ী, রাস্তাটির অর্থায়ন করছে সাভার উপজেলা পরিষদ। অপরদিকে বিএনপির নেতৃবৃন্দ বলছেন, এটি সম্পূর্ণভাবে তাদের নিজস্ব উদ্যোগ ও অর্থায়নে পরিচালিত হচ্ছে।
সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু বকর সরকার জানান, “উপজেলা ফান্ড থেকে ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে রাস্তাটির অর্থায়ন করা হয়েছে।” এ তথ্য তিনি নিজের প্রোফাইলে উন্নয়ন কাজের ছবিসহ প্রকাশ করেন।
অন্যদিকে, বিএনপি নেতা ও সাভার উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা দাবি করেন, “এই রাস্তায় ইউএনও কোনো ফান্ড দিয়েছেন— এমন তথ্য আমার জানা নেই। এটি আমাদের ব্যক্তি উদ্যোগে হচ্ছে।” তিনি জানান, এই কাজে সহযোগিতা করেছে স্থানীয় গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠান রিজভি ফ্যাশন, কাজী ফ্যাশন ও উইন্টার ড্রেস।
সাভার ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও যুবদল নেতা আরিফ হোসেন বলেন, “এই রাস্তায় ইউনো কোনো অর্থ দেয়নি। আমরা ইউনিয়ন পরিষদের সামান্য সহায়তা পেয়েছি মাত্র, বাকি ইট ও সামগ্রী স্থানীয় ফ্যাক্টরি থেকে সংগ্রহ করে এই সংস্কার কাজ করা হচ্ছে।”
এই দুই বিপরীতমুখী দাবির ফলে জনমনে তৈরি হয়েছে বিভ্রান্তি: যদি উপজেলা ফান্ড থেকেই অর্থায়ন হয়ে থাকে, তাহলে কার উদ্যোগে কাজটি বাস্তবায়িত হচ্ছে? আবার যদি ব্যক্তি বা রাজনৈতিক উদ্যোগেই এটি করা হয়, তাহলে উপজেলা প্রশাসনের দায়ভার বা অর্থ কোথায় ব্যয় হলো?
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, “জনগণের টাকা ব্যয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা থাকা অত্যন্ত জরুরি। যদি উপজেলা ফান্ড থেকে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়, তবে এর যথাযথ হিসাব ও প্রচার থাকা উচিত।”
আরও পড়ুনঃ সিপিবি দুর্গাপুর শহর শাখার দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত
একজন সচেতন নাগরিকের মন্তব্য, “উন্নয়ন কাজ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কৃতিত্ব নেওয়ার প্রতিযোগিতা থাকতেই পারে, তবে তাতে তথ্য গোপন বা বিভ্রান্তিকর প্রচার হলে জনগণই ঠকবে।”
একটি রাস্তা সংস্কারকে ঘিরে এমন বিতর্ক স্বচ্ছতা, সমন্বয়হীনতা ও জবাবদিহিতার অভাবকে সামনে এনে দিয়েছে। সচেতন মহল বিষয়টির নিরপেক্ষ তদন্ত ও তথ্য প্রকাশের দাবি জানিয়েছে। জনস্বার্থে প্রকৃত অর্থায়নকারী ও বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষের নাম স্পষ্টভাবে প্রকাশের আহ্বান জানানো হচ্ছে।