spot_img

― Advertisement ―

spot_img

সাজিদের খুনিদের বের করতে না পারা ইন্টেরিমের ব্যর্থতা: ইবি ছাত্রশিবির সভাপতি

তানিম তানভীর, ইবি প্রতিনিধিঃ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেছেন,ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাজিদকে হত্যার ৯৩ দিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত খুনিদের...
প্রচ্ছদবিশেষ প্রতিবেদন'জঙ্গি কারখানা' ট্যাগে মক্তব বন্ধের হোতা সাবেক প্রক্টর; বরখাস্ত ও বিচার দাবি...

‘জঙ্গি কারখানা’ ট্যাগে মক্তব বন্ধের হোতা সাবেক প্রক্টর; বরখাস্ত ও বিচার দাবি শিক্ষার্থীদের

তানিম তানভীর, ইবি প্রতিনিধিঃ ইসলামী শিক্ষা ও আধুনিক শিক্ষার সমন্বয় সাধনে প্রতিষ্ঠিত কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)। এতে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সন্তানদের ধর্মীয় শিক্ষার জন্য কেন্দ্রীয় মসজিদে নূরানী মক্তব চালু করা হয়েছিলো। কিন্তু পরিচালিত নূরানী মক্তবকে ‘জঙ্গি কারখানা’ আখ্যা দিয়ে ২০১৭ সালে বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে সাবেক প্রক্টর ড. মাহবুবর রহমানের বিরুদ্ধে।

তারই উপস্থিতিতে ঐ বছরের ৮ এপ্রিল পরিচালনা পর্ষদের মিটিংয়ে মক্তব বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানা গেছে। সেসময় ভয়ে কেউ মুখ না খুললেও গণ-অভ্যুত্থানের পরে মুখ খুলতে শুরু করেছেন শিক্ষক-কর্মকর্তারা। এবিষয়ে ক্ষোভ জানিয়ে মক্তবটি আবারো চালু করার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এছাড়া শিক্ষার্থীদের ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে ‘সন্ত্রাসী’ সাজানোর চেষ্টা, ভুয়া জঙ্গি ট্যাগে হেনস্তা, নিয়োগ বাণিজ্যে দুর্নীতি ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আন্দোলনকারীদের হুমকি-ধামকি, ভীতি প্রদর্শন, মারমুখী আচরণ, গালাগালি, মিছিলে উসকানিমূলক শ্লোগান প্রদান এবং পুলিশি হয়রানির সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের অবস্থান জেলা শহর থেকে দূরে হওয়ায় ক্যাম্পাসে অবস্থানরত শিক্ষক কর্মকর্তাদের সন্তানদের মানসম্মত ধর্মীয় শিক্ষার ব্যবস্থা ছিলো না। ফলে শিশুদের ধর্মীয় শিক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবরেটরি স্কুলে মক্তব পরিচালিত হতো। ২০১২ সাল থেকে শিশুদের মানসম্মত ধর্মীয় শিক্ষা নিশ্চিতের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় মসজিদে নূরানী মক্তবটি স্থানান্তর করা হয়। মসজিদের স্থানান্তরের পর থেকে বিভিন্ন অনুদান দিয়ে ভালোভাবে এর কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

সংশ্লিষ্টরা জানান, মক্তবটি বন্ধের জন্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আতঙ্কিত করতে ‘জঙ্গি কারখানা’ আখ্যা দিয়ে দুই দফায় পুলিশ নিয়ে এসে তল্লাশী চালায় তৎকালীন প্রক্টর ড. মাহবুব। পরবর্তীতে ২০১৭ সালের ৮ই এপ্রিল উপাচার্যের কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় মসজিদ পরিচালনা পর্ষদের মিটিংয় হয়। এতে মক্তব পরিচালনা কমিটির সদস্য ও মসজিদের ইমামকেও রাখা হয়নি।

এসময় ড. মাহবুব সহ তৎকালীন কোষাধ্যক্ষ, রেজিস্ট্রার, অধ্যাপক দেবাশীষ শর্মা, অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণসহ নয় শিক্ষকের উপস্থিতিতে মক্তবটি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পক্ষান্তরে স্কুলের শিশু শ্রেণী এবং প্রথম-দ্বিতীয় শ্রেণীতে আরবী পাঠদানের জন্য স্কুলে অস্থায়ীভাবে দুজন শিক্ষকও রাখা হয়। কিন্তু করোনার সুযোগে দুজন আরবী শিক্ষককে বাদ দিয়ে আরবী শিক্ষার পথ রুদ্ধ করে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এর পরে মক্তবটি আবারো চালু করতে গেলে ড. মাহবুব কর্তৃক হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তৎকালীন মক্তবের শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সদস্যরা।

আরও পড়ুনঃ বন্দর এলাকায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জোরপূর্বক ভবন নির্মাণের অভিযোগ

তৎকালীন মক্তবের শিক্ষক খুরশিদ আলম বলেন, মক্তব বন্ধের পর তৎকালীন প্রক্টর আমাদেরকে হুকমি দিয়েছিলো যাতে পুনরায় মক্তব চালুর বিষয়ে কাজ না করি। এছাড়া ক্যাম্পাসের বাইরে কেউ মক্তবটি চালুর চেষ্টা করলে ভয়ে কেউ আমাদের কক্ষ ভাড়া দেয়নি।

মক্তব পরিচালনা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. আব্দুল হান্নান শেখ বলেন, মক্তব বন্ধ করার জন্য তৎকালীন প্রক্টর ড. মাহবুব মক্তবকে জঙ্গী কারখানা আখ্যা দিয়ে দুই দফায় পুলিশ নিয়ে এসে তল্লাশী করেন। ২০১৭ সালে জঙ্গী কারখানা ট্যাগ দিয়ে মক্তব বন্ধ করে এর পরিবর্তে স্কুলে একটা আরবী ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়। পরবর্তীতে করোনার সময়ে সেটাও বন্ধ করে দেয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে ড. মাহবুব রহমানকে একাধিকবার ফোন করেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।

এদিকে, রবিবার ( ২৪ আগস্ট) আওয়ামী শাসনামলে সাজানো ক্রসফায়ার, তথাকথিত জঙ্গি নাটক, বিরোধী মতের দমন-পীড়ন এবং শিক্ষার্থীদের হয়রানির মূল হোতা প্রক্টর মাহবুবের বরখাস্ত ও বিচারের দাবিতে শাখা ছাত্রশিবিরের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থীরা।

সমাবেশে শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘আমরা জানি শিক্ষকরা পিতার সমতুল্য। কিন্তু, আমাদের বোনদের পর্দা করার কারণে জঙ্গি নাটক সাজিয়ে হেনস্তা করেছে অনেক শিক্ষকরা। দ্বীনি শিক্ষার জন্য মসজিদে একটা মক্তব ছিল সেটাও ‘জঙ্গির প্রশিক্ষণ’ নাটক সাজিয়ে বন্ধ করে দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রক্টর ড. মাহবুব। এ ধরনের সন্ত্রাসীদের কারণে ক্যাম্পাস অনিরাপদ। আমরা সন্ত্রাসীদের ক্যাম্পাসে চাই না। ড. মাহবুব ১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের হুমকি দিয়েছিলেন। তাকে অতিদ্রুত বরখাস্ত করা লাগবে।’