মোঃ তরিকুল ইসলাম কলাপাড়া (উপজেলা) প্রতিনিধিঃ কলাপাড়া উপজেলার কৃষকদের দীর্ঘদিনের একটি সমস্যা সমাধানে ধান সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রবিউল ইসলাম কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, কৃষকদের ধানের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে হবে এবং ধানের মন ৪০ কেজিতে বিক্রি করতে হবে।
ইউএনও’র বক্তব্য: মো. রবিউল ইসলাম তার পোস্টে বলেন, “যেকোনো পণ্যের ‘মন’ সাধারণত ৪০ কেজির হয়। তাই কৃষকদের ধান ৪০ কেজিতেই বিক্রি করতে হবে। যদি কেউ সিন্ডিকেট করে অতিরিক্ত ওজনে ধান কিনতে চায়, তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ প্রতারণার শিকার হলে আমাকে জানান, আমি ব্যবস্থা গ্রহণ করব, ইনশাআল্লাহ।”
কৃষকদের অভিযোগ: স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট প্রতি ‘মন’ ধান ৪৮ কেজি হিসেবে কিনে, কিন্তু বাজারে তা ৪০ কেজি হিসেবে বিক্রি করে। ফলে প্রতি ‘মন’ ধানে কৃষকদের ৮ কেজি ধান বিনা মূল্যে দিতে হয়। এই অবিচার যুগের পর যুগ ধরে চলে আসছে বলে জানান তারা।
সিন্ডিকেটের প্রভাব: এমন কর্মকাণ্ডের ফলে কৃষকরা আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন এবং উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। প্রতি মৌসুমে তারা অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়েন।
প্রশাসনের পদক্ষেপ: ইউএনও মো. রবিউল ইসলাম কৃষকদের আহ্বান জানান, কেউ যদি অতিরিক্ত ওজনে ধান ক্রয়ের চেষ্টা করে, তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করতে হবে। তিনি আশ্বাস দেন, সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কৃষকদের প্রত্যাশা: কৃষকরা আশাবাদী যে, প্রশাসনের এই কঠোর পদক্ষেপ সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত হবে এবং দীর্ঘদিনের অনিয়মের অবসান ঘটবে বলে তারা মনে করছেন।
আরও পড়ুনঃ বগুড়ায় কনসার্ট চলাকালে মেহেদী হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি গ্রেপ্তার
কৃষকদের দায়িত্ব: কৃষকদের অনুরোধ, কোনো ধান ব্যবসায়ী যদি ৪০ কেজিতে ধানের ‘মন’ মাপতে অস্বীকৃতি জানায়, তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে ইউএনও মহোদয়কে জানান। অভিযোগ করার জন্য ইউএনও’র অফিসিয়াল নম্বর 01733-334155-এ যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। তবে অনুরোধ, কোনো কারণ ছাড়া এই নম্বরে বিরক্ত না করার জন্য।
কলাপাড়া উপজেলার কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় প্রশাসনের এই উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়। ইউএনও’র কঠোর অবস্থান এবং কৃষকদের সচেতনতা একত্রে কাজ করলে সিন্ডিকেটের প্রতারণা বন্ধ করা সম্ভব। প্রশাসনের সক্রিয় তদারকি এবং দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণই কৃষকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে পারে।