মোঃ আব্দুল আলিম, রাজশাহী প্রতিনিধিঃ নতুন বছরকে সামনে রেখে নবায়নযোগ্য জ্বালানির পক্ষে সচেতনতা তৈরি করতে তৃণমূলের নারীরা রাজশাহীতে বিশেষ প্রচারণা চালিয়েছেন।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) সকালে নগরীর বড়কুঠি এলাকায় এই প্রচারণা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা নবায়নযোগ্য শক্তির পথে সব বাধা দূর করার আহ্বান জানান।
প্রচারণায় বক্তব্য রাখেন নারী নেত্রী পিয়া খাতুন, শাপলা খাতুন, নুপুর সুলতানা, পরিবর্তনের পরিচালক রাশেদ রিপন, এবং প্রোগ্রাম অফিসার সোমা হাসান।
“পরিবর্তন রাজশাহী,” “ক্লিন,” এবং “বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ইকোলজি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিডব্লিউজিইডি)” এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই প্রচারাভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং চলমান বাধাগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের দাবি উত্থাপন।
বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য শক্তি গ্রহণের পথে দীর্ঘদিন ধরে বেশ কিছু বাধা বিদ্যমান। এর মধ্যে রয়েছে জটিল অনুমোদন প্রক্রিয়া, আর্থিক সীমাবদ্ধতা, অবকাঠামোগত দুর্বলতা এবং নীতিমালার ঘাটতি। রাজশাহীর এই উদ্যোগ শুধুমাত্র সমস্যা চিহ্নিত করেই ক্ষান্ত হয়নি, বরং এর সমাধানে নির্দিষ্ট দাবিও তুলেছে।
- কেন্দ্রীয় অনুমোদন প্রক্রিয়া: নবায়নযোগ্য শক্তি প্রকল্পের অনুমোদন দ্রুত এবং সহজ করতে একটি কেন্দ্রীয় ব্যবস্থার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
- স্মার্ট গ্রিড ও নেট এনার্জি মিটারিং (NEM): নবায়নযোগ্য শক্তিকে জাতীয় গ্রিডে আরও কার্যকরভাবে সংযুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
- “নো ইলেক্ট্রিসিটি নো পে” নীতি: বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকলে বিল পরিশোধ করতে হবে না—এই নীতি দ্রুত চালুর দাবি করা হয়েছে।
- বাজেট বরাদ্দ: জাতীয় বিদ্যুৎ বাজেটের অন্তত ২০% নবায়নযোগ্য শক্তির জন্য বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
- অর্থায়ন ও শুল্ক: দেশীয় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্য নবায়নযোগ্য শক্তিতে ২৫% অর্থায়নের লক্ষ্যমাত্রা এবং সরঞ্জাম আমদানিতে শুল্ক কমানোর দাবি জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ স্বল্পমূল্যে সেবার প্রতিশ্রুতি, অতিরিক্ত ব্যয়ে জনরোষ
প্রচারণার নেতৃত্বে থাকা নারীরা নবায়নযোগ্য শক্তির জন্য স্থানীয় জনগণের ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তারা জানান, এই প্রচারণা শুধু রাজশাহীর জন্য নয়, বরং পুরো বাংলাদেশের পরিবেশবান্ধব ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার একটি প্রচেষ্টা।
একটি পরিচ্ছন্ন ভবিষ্যতের অঙ্গীকার
২০২৫ সাল নাগাদ রাজশাহী এবং বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য শক্তির সম্প্রসারণের মাধ্যমে একটি পরিচ্ছন্ন এবং টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন আয়োজকরা। এই প্রচারণা শুধু পরিবেশ সুরক্ষার আহ্বান নয়, বরং সকলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টা।