
মোঃ বিপুল মিয়া, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে গত চারদিন ধরে সূর্যের দেখা মেলেনি। ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা জনপদে মাঘের শীত ও কনকনে ঠান্ডায় জনজীবন চরম বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষ, শিশু ও বয়স্করা শীতের তীব্রতায় বেশি কাহিল হয়ে পড়েছেন।
ঠান্ডার প্রকোপে ফুলবাড়ীসহ পুরো জেলা জুড়ে স্বাভাবিক জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। দিনমজুর, কৃষক, এবং চরাঞ্চলের বাসিন্দারা সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। অনেকে শীত নিবারণের জন্য খড়কুটো জ্বালিয়ে গরমের ব্যবস্থা করছেন।
আজ বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় কুড়িগ্রামে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের কৃষক সিদ্দিক খন্দকার বলেন, “চার পাঁচ দিন ধরে এমন ঠান্ডা। শীতের কারণে আলু ক্ষেত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। হাত-পা বরফ হয়ে যাচ্ছে তবুও ক্ষেত বাঁচাতে কীটনাশক স্প্রে করছি। জানি না, সূর্যের দেখা কবে মিলবে।”
একই এলাকার দিনমজুর কাশেম আলী বলেন, “আমাদের মতো গরিব মানুষদের শীতে বসে থাকলে পেট চলবে না। তাই যতই ঠান্ডা হোক, কাজে যেতে হয়। কাজ না করলে সংসার চলবে না।”
কম্বল পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “কে আমাদের কম্বল দেবে? শুনি অনেকেই কম্বল পেয়েছে, কিন্তু আমরা এখনও পাইনি।”
আরও পড়ুনঃ তৃতীয়বারের মতো আন্তর্জাতিক কনফারেন্স হবে বুটেক্সে
কুড়িগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার জানান, জেলার ৯ উপজেলায় ৩৪ হাজার ৭২২টি কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। চাহিদার ভিত্তিতে এই বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, “আজ সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল ছিল ১২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে তাপমাত্রা আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে।”
কুড়িগ্রামের মানুষের জন্য শীত একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারি সহায়তার পাশাপাশি স্থানীয় ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ এবং শীত নিবারণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছেন এলাকাবাসী।