
মোঃ রেজাউল করিম, লালমনিরহাট (জেলা) প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, “বাংলাদেশের মানুষ মনে করে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সব একতরফা, অসম ও অন্যায্য চুক্তি পুনর্বিবেচনা করা দরকার।”
তিনি বলেন, “বিশ্বজুড়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সমস্যা সমাধানের জন্য কূটনৈতিক সম্পর্কের ভারসাম্য রক্ষা করা হয়। কিন্তু স্বৈরাচার, পলাতক হাসিনা ক্ষমতার লোভে দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়েছে।”
তিস্তা চুক্তি ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে উত্তরের পাঁচ জেলার ১১টি পয়েন্টে টানা ৪৮ ঘণ্টার কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সোয়া ৫টায় তিস্তা রেলসেতু লালমনিরহাট পয়েন্টে অনলাইনে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, “স্বৈরাচার হাসিনা জোর করে ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য নিজেকে ভারতের দেবদাসী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। বাংলাদেশ-ভারত যৌথ নদী কমিশন ও জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে সম্পূর্ণ অকার্যকর করে রেখেছিল। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বিদ্যমান ফারাক্কার সমস্যা সমাধান হয়নি, তিস্তা চুক্তিও বাস্তবায়ন হয়নি। অথচ সাংবিধানিক রীতিনীতি ভঙ্গ করে হাসিনা একতরফাভাবে প্রতিবেশী দেশকে ট্রানজিট শিপমেন্ট সুবিধা দিয়ে গেছে।”
তারেক রহমান বলেন, “বন্ধুত্বের দোহাই দিয়ে বাংলাদেশের জনগণ কাটাতারের বেড়ায় ফেলানীর ঝুলন্ত লাশ দেখতে চায় না। সীমান্তে নিরীহ বাংলাদেশিদের রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে চায় না।”
তিনি আরও বলেন, “প্রতিবেশী দেশগুলোর সম্পর্ক পারস্পরিক স্বার্থের ভিত্তিতে হওয়া উচিত। পানি বণ্টন নিয়ে ভারত অপ্রতিবেশীমূলক আচরণ করছে। ৫০ বছর ধরে আমরা ফারাক্কার অভিশাপ থেকে মুক্তি পাইনি, এখন আবার তিস্তার অভিশাপ ভোগ করছি। তারা যখন খুশি পানি ছেড়ে দেয়, আবার যখন খুশি পানি আটকে রাখে।”
তারেক রহমান বলেন, “আপনাদের প্রিয় দল বিএনপি, যদি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পায়, তাহলে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি বর্ষাকালে অতিরিক্ত পানি সংরক্ষণ ও শুকনো মৌসুমে ব্যবহারের জন্য তিস্তার ডান পাশের সাতটি নদী এবং বাঁ পাশের পাঁচটি শাখা ও উপনদী খনন করা হবে।”
আরও পড়ুনঃ ৪৮ঘণ্টার মধ্যে এটিএম আজহারকে মুক্তি দিতে হবে– হামিদুর রহমান আযাদ
তিনি আরও বলেন, “খাল খনন কার্যক্রম পুনরায় চালু করা হবে এবং নদী ও পানি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন স্থানে জলাধার নির্মাণ করা হবে।”
তারেক রহমান বলেন, “স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সময় ‘খাল কাটা হলে সারা, দূর হবে বন্যা খরা’—এই স্লোগান জনপ্রিয় হয়েছিল। বিএনপি ক্ষমতায় এলে আবারও সেই উদ্যোগ নেওয়া হবে।”
বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটির সমন্বয়কারী অধ্যক্ষ আসাদুল হালুর সভাপতিত্বে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে আরও বক্তব্য রাখেন, বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক, বিএনপির স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও আন্দোলনকারী বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরাপ
বিএনপির পক্ষ থেকে তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়ন ও অসম চুক্তি পুনর্বিবেচনার দাবিতে সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে। দেশবাসী এখন এই দাবির বাস্তবায়ন দেখতে চায়।