spot_img

― Advertisement ―

spot_img
প্রচ্ছদসারা বাংলাস্মার্টফোনের ব্যবহার কমিয়ে গ্রামের খেলাধুলার ঐতিহ্য রক্ষায় তরুণদের উদ্যোগ

স্মার্টফোনের ব্যবহার কমিয়ে গ্রামের খেলাধুলার ঐতিহ্য রক্ষায় তরুণদের উদ্যোগ

মোঃ তরিকুল ইসলাম কলাপাড়া (উপজেলা) প্রতিনিধিঃ কলাপাড়া উপজেলার লতাচাপলি ইউনিয়নের দিয়ার আমখোলা গ্রামের একদল তরুণ হারিয়ে যেতে বসা গ্রামীণ খেলাধুলার ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছেন। আধুনিক প্রযুক্তির প্রসারে স্মার্টফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার এবং জনপ্রিয় অনলাইন গেমের প্রতি শিশু-কিশোরদের আসক্তি ক্রমেই বাড়ছে। মাঠের খেলাধুলা থেকে তাদের দূরে সরে যাওয়ার এই প্রবণতা বদলাতেই তারা এমন উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক আইন বিভাগের ছাত্র মো. ছগির এবং আরও কয়েকজন তরুণ মিলে কারীমিয়া কেরাতুল কুরআন মাদ্রাসা সংলগ্ন একটি খেলার মাঠ তৈরি করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা লক্ষ্য করেছি, এখনকার শিশুরা মাঠে খেলাধুলা ভুলে গেছে। বেশিরভাগ সময় তারা মোবাইলের স্ক্রিনে কাটায়। তাই আমরা চাই, তারা মাঠে ফিরে আসুক, খেলাধুলা করুক এবং শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকুক।”

তবে মাঠের অভাবও তাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অধিকাংশ জমি কৃষিকাজের জন্য ব্যবহৃত হওয়ায় খেলার জন্য উন্মুক্ত স্থান পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। তারপরও এই তরুণরা নিজেদের প্রচেষ্টায় একটি ফুটবল মাঠ নির্ধারণ করে সেখানে খেলাধুলার চর্চা শুরু করেছেন।

স্থানীয় যুবক রাব্বি বলেন, “আমরা ছোটবেলায় মাঠে খেলতাম, কিন্তু এখনকার শিশুরা সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আমরা চাই, সবাই মাঠে এসে খেলুক, নিজেদের সুস্থ রাখুক এবং প্রযুক্তির অতিরিক্ত আসক্তি থেকে দূরে থাকুক।”

আরেক যুবক মো. বাইজিত বলেন, “প্রথমদিকে আমরা কয়েকজন মিলে খেলতে শুরু করি, এরপর ধীরে ধীরে অনেকেই আমাদের সঙ্গে যোগ দেয়। এখন প্রতিদিন বিকেলে মাঠে খেলাধুলার প্রাণ ফিরে এসেছে।”

আরও পড়ুনঃ লক্ষ্মীপুরের আলতাফ মাস্টার ঘাটে ঈদ আনন্দে দর্শনার্থীদের ঢল

স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তি মো. সোলেমান এই উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, “তরুণদের এই প্রচেষ্টা সত্যিই অনুকরণীয়। খেলাধুলা শুধু শরীরের জন্য উপকারী নয়, মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত খেলাধুলার অভ্যাস গড়ে উঠলে নতুন প্রজন্ম আবার মাঠের গুরুত্ব বুঝতে পারবে।”

এই উদ্যোগের ফলে এখন প্রতিদিন বিকেলে শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে তরুণরা মাঠে ফুটবল খেলতে আসছে। মাঠে সময় কাটানোর ফলে তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যে ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে। শিক্ষার্থীরাও পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলার গুরুত্ব বুঝতে পারছে।

গ্রামের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়, যা নতুন প্রজন্মকে মাঠের খেলাধুলার প্রতি আকৃষ্ট করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।