
মোঃ মাসুদ রানা মনি, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিঃ লক্ষ্মীপুর জেলা শহরের আল-মুঈন ইসলামি একাডেমি মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের সাত বছর বয়সী ছাত্র সানিম হোসাইনের মৃত্যু ঘিরে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
পরিবারের অভিযোগ, শিক্ষক মাহমুদুর রহমানের বেধড়ক মারধরের কারণেই প্রাণ হারিয়েছে শিশু সানিম।
নিহতের মা জহুরা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমার সানিম ২০ পারা হেফজ করেছিল। কিছুদিন আগে শুনেছিলাম হুজুর নাকি বলছে সানিম কথা শোনে না। ওর ওপর রাগ করে ছিল। হঠাৎ আজকে দুপুরে খবর পাই—সানিম নাকি টয়লেটে ঢুকে গলায় ফাঁস দিয়েছে! কিন্তু আমরা যখন মাদ্রাসায় যাই, তখন টয়লেটে নয়, তার লাশ পাই নিচতলার একটি কক্ষে বিছানার উপর। আমি বলছি, আমার ছেলেকে মেরে ফেলা হয়েছে। আমরা এই হত্যার বিচার চাই।”
এদিকে, ঘটনার পরপরই মাদ্রাসার শিক্ষক মাহমুদুর রহমানকে আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৪ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে শহরের উত্তর তেমুহনী এলাকার ওই মাদ্রাসা থেকে সানিমের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা বশির আহমেদ জানান, “ক্লাস শেষে ছেলেদের নামাজ ও খাওয়ার জন্য বিরতি দেওয়া হয়। সবাই খাওয়ায় গেলেও সানিম যায়নি। পরে সিসিটিভিতে দেখা যায় সে গামছা নিয়ে টয়লেটে ঢুকেছে। আমরা সেখান থেকেই তার মরদেহ উদ্ধার করি।” তবে পুলিশ বলছে, মৃত্যুর বিষয়টি এখনো স্পষ্ট নয়।
আরও পড়ুনঃ যুদ্ধবিমানের পে-লোড ক্যাপাসিটি: আধুনিক আকাশযুদ্ধে ভারী অস্ত্রবহনের সক্ষমতা কার কতো?
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রেজাউল হক জানান, “শিশু সানিমের মৃত্যুর ঘটনায় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ প্রথমে আত্মহত্যা বললেও তার গলায় ও শরীরের বিভিন্ন অংশে কালশিটে দাগ পাওয়া গেছে। তাই আমরা একজন শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।”
এদিকে সানিমের মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না তার পরিবার। বাবা-মা মাদ্রাসার মেঝেতে বসে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। তাদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে পরিবেশ।
নিহত সানিম লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার কুচিয়ামারা গ্রামের মুদি দোকানি হুমায়ুন মাতব্বরের একমাত্র ছেলে।