
মো: আলিফ হোসাইন, মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ সরকারি চাকরিতে বৈষম্যমূলক কোটা প্রথা প্রত্যাহারের দাবিতে উত্তাল মাভাবিপ্রবি। মহা-সড়কে অবস্থান কর্মসূচীতে অংশগ্রহন করে এবং শান্তিপূর্ণভাবে সাধারণ মিছিল, মানববন্ধন অনুষ্ঠিত।
৬ জুলাই (শনিবার) সকাল ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সাধারণ শিক্ষার্থীরা ঢাকা -টাঙ্গাইল মহা-সড়কে (আশেকপুর বাইপাসে) এই অবস্থান কর্মসূচী পালন করা হয়।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের অক্টোবরে হাইকোর্ট কর্তৃক রায়প্রাপ্ত সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা চালুর বিষয়ে সে সময় সমগ্র দেশব্যপী ব্যাপক আন্দোলন চরম আকার ধারণ করার ফলশ্রুতিতে, এ রায় বহাল রাখা থেকে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে হাইকোর্ট এবং সরকার পরিপত্র জারি করে সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
বিপরীতে,উক্ত পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি জনাব অহিদুল ইসলামসহ সাত শিক্ষার্থী। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৫ (জুন) পরিপত্রটি বাতিল করে দেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ এবং চলতি বছরের ৬(জুন) নিষিদ্ধ কোটা প্রথা পুনরায় বহাল রাখার রায় দেন হাইকোর্ট।
এরপর আবারো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আন্দোলন ঝড়ের বেগে ছড়িয়ে পড়ে।আজকের অবস্থান কর্মসূচীর ফলে ঢাকা-টাঙ্গাইল হাইওয়ে রোডের দুপাশে প্রায় ৫৫ কি.মি পর্যন্ত (আশেকপুর বাইপাস থেকে বঙ্গবন্ধু সেঁতু ১৯ কি.মি এবং আশেকপুর বাইপাস থেকে মির্জাপুর ৩৬ কি.মি) যানজটের সৃষ্টি হয়। এমন পরিস্থিতিতে অসংখ্য যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী যানবাহন আটকা পড়ে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রী ও সংশ্লিষ্টরা।ফলে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যাহত হয় ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের সাধারণ পরিবহন ব্যবস্থা।
আরও পড়ুনঃ কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে পবিপ্রবিতে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ
প্রায় ২ ঘন্টার অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা, “জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’ ‘কোটা না মেধা-মেধা মেধা’, আপোষ না সংগ্রাম-সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘আঠারোর পরিপত্র-পুনর্বহাল করতে হবে’, ‘কোটাপ্রথা নিপাত যাক-মেধাবীরা মুক্তি পাক’, ‘সারা বাংলায় খবর দে-কোটাপ্রথার কবর দে’, ‘আমার সোনার বাংলায়-বৈষম্যের ঠাঁই নাই” ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেনশিক্ষার্থীরা। এবার অন্যদের সাথে সংহতি প্রকাশ করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
তাদের সাধারণ দাবিগুলো হলো:
১. ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখা।
২. পরিপত্র বহালসাপেক্ষে কমিশন গঠনপূর্বক দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরির সমস্ত গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেওয়া (উপজাতি এবং প্রতিবন্ধী ব্যাতীত)।
৩. সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্যপদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া।
৪. দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।