
মোঃ মাসুদ রানা মনি, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিঃ চাঁনপুরী আমাকে জান্নাতে নিতে পারবে, মাওলাকে আপনারা চিনছেন নি, এই হলো মাওলা, আমার এই মাওলা ক্বাবা, মক্কা, আমার এই মাওলা মদিনা, আমার এই মাওলা ইবাদত, আমার এই মাওলা বন্দেগী আমার এই মাওলা জান্নাত, আমার এই মাওলা দুনিয়া, আখেরাত-হাশর-মিজান এবং পুলসিরাত, আমি মুখে বলবো সুবাহানা রাবি আল আলা অন্তরে বলবো চাঁনপুরী, চাঁনপুরী, রোজা নাই-নামাজ নাই-যাকাত নাই-আমল নাই-হজ নাই কিন্তু আওলাদে পাক কলবে আছে। তাই আওলাদে পাকের সদকায় আল্লাহপাক সব মাপ করে দিবেন। দোযখ থেকে চাঁনপুরী আমাকে জান্নাতে নিতে পারবে, চাঁনপুরীর গোলাম বলে ধর্ম অবমাননাকর বক্তব্য দিয়ে তিনি উপস্থিত সবাইকে সম্বোধন করেন।
একটি মাহফিলে বক্তব্য রাখার সময় লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ রাব্বানিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এ এইচ এম মোস্তাক আহাম্মেদ এসব কথা বলেন। সম্প্রতি তার দেয়া বক্তব্য ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হলে রামগঞ্জ উপজেলার আলেম সমাজের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
তার এই বক্তব্যের কারনে শিক্ষার্থীদের মাঝে দেখা দেয় চরম বিভাজন। এরই ধারাবাহিকতায় অধ্যক্ষ এ এইচ এম মোস্তাক আহাম্মেদের অপসারন দাবীতে রামগঞ্জ রাব্বানীয়া কামিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে মানববন্ধনের আয়োজন করে শিক্ষার্থীদের একাংশ।
মানববন্ধন চলাকালীন সময়ে একটি মহল সেখানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাইলে রামগঞ্জ থানা পুলিশ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীসহ উপজেলা প্রশাসন তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
এদিকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগ এনে বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত আমলী অঞ্চল লক্ষ্মীপুরে অধ্যক্ষ এ এইচ এম মোস্তাক আহাম্মেদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন রামগঞ্জ পৌর এলাকার রতনপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে মোঃ মাহবুব রাব্বানী। তিনি মামলার আর্জিতে উল্লেখ করেন তার এই বক্তব্যে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার বিষয়টির ব্যপারে অধ্যক্ষের সাথে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে মোবাইলে খারাপ আচরন করে প্রানে হত্যার হুমকি প্রদান করেন।
আরও পড়ুনঃ লক্ষ্মীপুরে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ ধরতে যাওয়ায় ৭জেলের কারাদণ্ড
মাদ্রাসার সাবেক শিক্ষার্থী আবদুল হান্নান জানান, ৫ আগষ্টের পর থেকে মাদ্রাসা অধ্যক্ষ পলাতক। বিভিন্নভাবে শিক্ষার্থীদের হয়রানি করতো, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের এনে তার বিভিন্ন অনিয়মের প্রতিবাদ করায় মারধর করে মাদ্রাসা থেকে বের করে দিতো। তিনি কোন ধরনের ছুটি ছাড়াই বেতনভাতা গ্রহণ করছেন বলেও জানান।
উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার শরিফুল্লাহ আস শামস জানান, গতকাল সকালে রামগঞ্জ থানার অফিসার, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মাদ্রাসা ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি (এডিসি-শিক্ষা ও আইসিটি) মহোদয়কে লিখিতভাবে জানিয়েছি। উনি যদি (অধ্যক্ষ) মনে করেন তিনি ভুল করেছেন তাহলে স্থানীয় লোকজন বসে বিষয়টি সমাধান করে দিবেন।
অধ্যক্ষ এ এইচ এম মোস্তাক আহাম্মেদ জানান, আমি মামলার বিষয়টি শুনেছি একজনের কাছে। ২০১৯ সালের একটা ঘটনা। একটা ঘরোয়া অনুষ্ঠানে বক্তব্য রেখেছি, যা আমার অজান্তে ভিডিওটি হয়েছে, তবে তিনি দাবী করেন বক্তব্য সত্য। আমি অসুস্থ্য অবস্থায় কুমিল্লায় আছি, সভাপতি মহোদয়ের কাছে ছুটির দরখাস্ত করবো।