মোহাম্মদ ইসমাইল, চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃচট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা এবং ফজলে করিমের ঘনিষ্ঠ সহযোগী দিদারুল আলম প্রতারণা মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) কোতোয়ালী থানার ইন্সপেক্টর আব্দুল করিম এবং সাব-ইন্সপেক্টর রবিউল হক গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করেন।
জানা যায়, দিদারুল আলম বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ফজলে করিমের সহযোগী হিসেবে পরিচয় দিয়ে নিজেকে প্রভাবশালী হিসেবে তুলে ধরতেন। তিনি চট্টগ্রাম শহরের বায়েজিদ এলাকায় একটি গার্মেন্টস কারখানার এমডি ছিলেন। কারখানার চেয়ারম্যান ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সিটি মেয়র আজম নাসির।
এই পরিচয়ের সুযোগ নিয়ে দিদারুল আলম বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, তিনি প্রতারণার মাধ্যমে টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। পাওনাদাররা টাকা ফেরত চাইতে গেলে দিদার ফজলে করিমের লেলিয়ে দেওয়া সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে হুমকি-ধমকি দিতেন। অনেককে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়িক অংশীদার বলেন, “দিদার আমার কাছ থেকে ঢাকায় একটি গার্মেন্টস দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রায় তিন কোটি টাকা নিয়েছিলেন। কিন্তু কয়েক মাস পর গার্মেন্টসের কোনো কার্যক্রম দৃশ্যমান না হওয়ায় আমি টাকা চাইতে গেলে তিনি আজম নাসিরের সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমাকে এবং আমার পরিবারকে হত্যার হুমকি দেন।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, দিদার তার এলাকায় অনেকের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। পাওনাদাররা টাকা চাইতে গেলে ফজলে করিমের সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে তাদের বাড়ি-ঘরে হামলা করতেন।
আরও পড়ুনঃ লক্ষ্মীপুরে রাস্তা কেটে সবজি চাষ, প্রতিবাদ করায় তাঁতীদল নেতাকে পিটিয়ে আহত
দিদারের এলাকার বাসিন্দারা তাকে “বিশ্ববাটপার” আখ্যা দিয়ে বলেন, “ফজলে করিম এবং আজম নাসিরের নাম ব্যবহার করে দিদার এমন কোনো খারাপ কাজ নেই যা করেনি। আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।”
কোতোয়ালী থানার পুলিশ দিদারুল আলমকে প্রতারণা, সম্পত্তি আত্মসাৎ, বিশ্বাসভঙ্গ এবং প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা এবং ভুক্তভোগীরা তার শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন।
দিদারুল আলমের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোর সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।