
মোঃ বিপুল মিয়া, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে টানা ভারী বৃষ্টিপাতে আগাম শীতকালীন সবজি চাষে নেমে আসা কৃষকদের মুখে নেমেছে হতাশার ছায়া। ভালো ফলন ও দামে লাভের স্বপ্ন দেখেছিলেন কৃষকরা, কিন্তু বৃষ্টির পানিতে ফসল ডুবে গিয়ে সেই স্বপ্ন এখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।
ফুলবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার প্রায় ১৫০ হেক্টর জমিতে কৃষকরা মুলা, লাউ, শসা, বেগুনসহ বিভিন্ন শীতকালীন শাকসবজির চাষ করেছিলেন। তবে ভারী বৃষ্টিতে এসব জমির ফসল মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের কাজ চলছে বলে জানায় কৃষি বিভাগ।
উপজেলার চন্দ্রখানা গ্রামের কৃষক হামিদুর রহমান খন্দকার বলেন, এক বিঘা জমিতে আগাম মুলা ও বেগুনের চাষ করেছিলাম। খেতের অবস্থা ভালোই ছিল। ভালো ফলনের আশা করেছিলাম। কিন্তু বৃষ্টিতে আমার স্বপ্ন ভেসে গেছে। ক্ষেত একেবারেই নষ্ট হয়ে গেছে। লাভের আশায় আবাদ করে এখন লোকসানের চিন্তা করছি।
একই এলাকার কৃষক হাফিজুর রহমান বলেন, তিন বিঘা জমিতে লালশাক ও মুলা আবাদ করেছি। এতে ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এর মধ্যে ১০ হাজার টাকার লালশাক বিক্রি করেছি। মুলা বিক্রি করে অন্তত ৭০–৮০ হাজার টাকা লাভের আশা করেছিলাম। কিন্তু বৃষ্টিতে খেত ডুবে গেছে। এখন খরচের টাকাও উঠবে কিনা সেই চিন্তায় আছি।
আরও পড়ুনঃ সাংবাদিকের ওপর হামলা: ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব ও সিএমইউজের
বড়ভিটা ইউনিয়নের পূর্ব ধনিরাম গ্রামের কৃষক আলমগীর হোসেন বলেন, আমি ১৬ শতাংশ জমিতে পটল, ২৪ শতাংশ জমিতে শসা এবং ৪৮ শতাংশ জমিতে বেগুন চাষ করেছি। বৃষ্টিতে পটল ও শসার অনেক ক্ষতি হয়েছে। এখন বেগুন খেত বাঁচবে কিনা চিন্তায় আছি।
জেলার রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ২৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় বিক্ষিপ্তভাবে হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
সোমবার দুপুরে উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের ধনিরাম এলাকা পরিদর্শনে যান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াসমিন, অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা রাফিকা আক্তার ও কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন।
এ সময় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াসমিন বলেন, ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে নিমজ্জিত ফসলের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি। কৃষকদের খেতের পরিচর্যা ও পুনরুদ্ধার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ চলছে।