চাকরি বা কাজ দেয়ার কথা বলে কিশোরীর ও তরুণীদের কৌশলে ডেকে আটকে রেখে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করা হয়। এমনকি পাচার করে দেয়া হয় বিভিন্ন পতিতালয়েও। সাভারে এমন এক চক্রের নারীসহ ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের জিম্মা থেকে কিশোরীসহ ৩ নারীকে উদ্ধার করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সকালে গ্রেপ্তারকৃতদের সাভার মডেল থানা থেকে ঢাকার আদালতে পাঠানো হয়। এর আগে বুধবার রাতে সাভারের ভরারী নতুন পাড়া এলাকার পোড়া বাবুলের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, মাদারীপুর থানার শিবচর থানার গুয়াতলা এলাকার খলিল ব্যাপারী (৪২), তাঁর স্ত্রী লাইলী বেগম (৩৫), টাঙ্গাইলের কালিহাতী থানার নজরুল ইসলাম (৩৯), তাঁর স্ত্রী মিথিলা (২০) ও তাদের আরেক সহযোগী বরিশাল জেলার উজিরপুর থানার তানজিলা আক্তার ফাতেমা (২৫)।
আরও পড়ুনঃ লক্ষ্য যখন স্বপ্নের ক্যারিয়ার, সারথি তখন জবি ক্যারিয়ার ক্লাব
পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খলিল, তাঁর স্ত্রী লাইলী ও তাদের সহযোগী ফাতেমাকে ভরারী এলাকার পোড়া বাবুলের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে ঝিনাইদহ এলাকার ১৪ বছরের এক কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়।
পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পার্শ্ববর্তী জোরপুল বটতলা এলাকায় জনৈক জাহাঙ্গীরের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে নজরুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী মিথিলাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের হেফাজত থেকে ঝিনাইদহ ও ফরিদপুর এলাকার দুই নারীকে উদ্ধার করে পুলিশ।
তিনি আরও বলেন, মুলত চাকরির কথা বলে ও বিভিন্ন কৌশলে শিশু-কিশোরীসহ নারীদের ডেকে নিয়ে আটকে রেখে তাদের দিয়ে জোর করে পতিতাবৃত্তি করায় এই চক্রের সদস্যরা। পরে দৌলতদিয়া পতিতাপল্লী, টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহের পতিতালয়ে বিক্রি করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে তারা স্বীকার করেছেন যে, এরআগে তারা এমন কাজ করেছে।
সাভার মডেল থানার আমিনবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) হারুন অর রশিদ বলেন, ভুক্তভোগীদের উদ্ধার করে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, এই চক্র প্রায় দেড়শত নারীদের পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করেছে। এছাড়া অনেকে সামীন্তবর্তী এলাকায় বিক্রির করার তথ্যও রয়েছে।
এ বিষয়ে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) আব্দুল্লাহিল কাফী বলেন, এই চক্রটি অসহায়ত্ব ও সরলতার সুযোগ নিয়ে কিশোরী-নারীদের পতিতাবৃত্তিসহ বিক্রি করে দেয়। এমনকি তারা ভুক্তভোগী নারীদের ছবি তুলে বিভিন্ন দালাল চক্রের কাছে পাঠায় ও দেড় থেকে ২ লাখ টাকার বিনিময়ে তাদের বিক্রি করে দেয়।আসামীদের বিরুদ্ধে এরআগে মানব পাচারের মামলা রয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। বাকীদেরও গ্রেপ্তারের অভিযান চলছে।