মহিউছ ছাইয়েদ, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ স্কুল গেটে দাঁড়িয়ে মেয়েদের ইভটিজিং করে কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা। ইভটিজিংয়ে বাধা দিয়ে তাদের এমন কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে বলার জেরে পরিচালনা কমিটির সদস্য আব্দুর রাজ্জাক এবং তার ভাই আব্দুল মজিদকে চাকু দিয়ে আঘাত করে তানভির হোসেন, মোত্তাকিম, রেজা, ফরহাদসহ কিশোর গ্যাংয়ের অন্য সদস্যরা।
এ ঘটনায় এলাকাবাসী তানভির হোসেনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে। ঘটনাটি মঙ্গলবার সন্ধ্যারাতে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার বেজোড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে ঘটেছে।
একই সময় কিশোর গ্যাংয়ের অপর আরেক দল রানা, সুজন, রুহুল আমিনের নেতৃত্বে বেজোড়া দক্ষিণপাড়ায় রায়হান নামে অপর আরেক যুবককে রাম দা দিয়ে মাথায় আঘাত করে।
আরও পড়ুনঃ সাভারে ইউনিয়ন যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে নারীকে হত্যার অভিযোগ
দুই ঘটনায় আহত তিনজনকে এলাকাবাসী উদ্ধার করে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছে। আহতদের মধ্যে আব্দুল মজিদ এবং রায়হানের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে হাসপাতাল সূত্রে।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে আহত আব্দুর রাজ্জাক গণমাধ্যম কে বলেন, বেজোড়া এলাকার কিশোর গ্যাং এবং ত্রাস বলে পরিচিত বাদশা মিয়ার ছেলে রানা (২৪), আলমের ছেলে মোত্তাকিম (২১), বগুড়া শহরের মালতি নগরের রবিউল ইসলামের ছেলে তানভির (২০), বেজোড়ার কিনুর ছেলে সুজন (২০) ও রুহুল আমিন (২১)সহ ১০/১২ জনের একটি দল প্রতিদিন বেজোড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের গেটে দাঁড়িয়ে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।
তিনি আরও বলেন, স্কুল গেটে তাদের এমন কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার জন্য একাধিক বার বলা হয়। তাদের নিষেধ করার কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে মঙ্গলবার রাতে আমার ছেলে আল আমিন ওরফে রনিকে বাড়ির পাশে একা পেয়ে কিশোর গ্যাংয়ের দল আটকায়। আমার ছেলে আমাকে ফোন দিলে আমি দ্রুত ঘটনাস্থলে আসি।
তিনি বলেন, এ সময় তানভির, ফরহাদ, রেজাসহ আরও কয়েকজন আমাকে পেছন থেকে চাকু মারে। আমাকে বাঁচানোর জন্য আমার ভাই আব্দুল মজিদ ছুটে আসলে তার পেটেও চাকু বসিয়ে দেয়। পরে আশপাশের লোকজন এসে তানভিরকে আটক করে এবং আমাদের দুই ভাইকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। আমার পেছনে চারটি সেলাই দেয়া হয়েছে আর আমার ভাইয়ের অবস্থা ভালো নয়।
অপরদিকে রাতের ঠিক একই সময় বেজোড়া দক্ষিণ পাড়া এলাকায় রানা, সুজন, রুহুল আমিনের নেতৃত্বে রায়হান (২৫) নামক অপর এক যুবকের মাথায় রাম দা দিয়ে আঘাত করে। এতে রায়হান মাটিতে পড়ে গেলে পুরো শরীরে আঘাত করে। রায়হান জ্ঞান হারিয়ে ফেললে কিশোর গ্যাংয়ের দল পালিয়ে যায়। রায়হান বেজোড়া দক্ষিণ পাড়ার মৃত মফিজুলের ছেলে।
এ বিষয়ে রায়হানের বড় ভাই আবু হুরায়রা গণমাধ্যমকে বলেন, আমার ছোট ভাই মাঝে মধ্যে অটোরিকশা, সিএনজি চালায়। দুই মাস আগে রানাদের সাথে রাস্তায় অটো চালানো নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়েছিল। ওইদিন রানা বলেছিল তোকে দেখে নেবো। সেই দিনের হুমকি বাস্তাবায়ন করেছে মঙ্গলবার রাতে। আমার ভাইকে তারা রাম দা দিয়ে মাথায় আঘাত করেছে। ডাক্তার বলেছে অবস্থা খুব বেশি ভালো নয়। ওই ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
ওদিকে আব্দুর রাজ্জাক এবং আব্দুল মজিদকে চাকু মারার ঘটনায় আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে আল আমিন ওরফে রনি বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাত তিনজনের নাম মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে তিনি জানান, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রায়হান।
শাজাহানপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শহিদুল ইসলাম বলেন, দুই ঘটনার একটিতে মামলা হয়েছে। অপর ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। পুলিশের পক্ষ থেকে আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে।