শেরপুরের নকলা উপজেলায় তথ্য অধিকার আইনে আবেদনের পর ভ্রাম্যমাণ আদালতে দণ্ডিত সাংবাদিক শফিউজ্জামান রানাকে জামিন দিয়েছে আপিল বিভাগ।
মঙ্গলবার বিকাল ৫টায় আপিল আদালতের বিচারক অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জেবুন নাহার উভয়পক্ষের শুনানি শেষে তার অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের আদেশ দেন। আপিলকারী সাংবাদিক রানার পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রফিকুল ইসলাম আধার। রাষ্ট্রপক্ষে অংশ নেন এপিপি আরিফুর রহমান সুমন।
জামিন আদেশের পর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় জেলা কারাগার থেকে সাংবাদিক শফিউজ্জামান রানা মুক্তি পেয়েছেন বলে জানান জেল সুপার হুমায়ুন কবীর খান।
সাংবাদিক শফিউজ্জামান রানা তথ্য চেয়ে তথ্য অধিকার আইনে নকলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সাদিয়া উম্মুল বানিনের কাছে আবেদন করেছিলেন।
নকলা উপজেলা প্রশাসন দাবি করেছে, ৫ মার্চ ইউএনওর দপ্তরে গিয়ে সরকারি কাজে বাধা, বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি, অসদাচরণ এবং একজন নারী কর্মচারীকে উত্ত্যক্তের দায়ে নকলা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী হাকিম মো. শিহাবুল আরিফ ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাংবাদিক শফিউজ্জামান রানাকে (৪৫) দুটি ধারায় ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন।
রানা দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকার উপজেলা সংবাদদাতা হিসেবে কাজ করেন।
আইনজীবীরা জানান, দুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজার বিষয়ে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল খায়রুমের কাছে সাজা বাতিল ও জামিনের জন্য আপিল দায়ের করা হয়। তিনি তা গ্রহণ করে শুনানির জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জেবুন নাহারের আদালতে পাঠান।
আদেশের নকলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রোববার রাতে নকলা থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নথি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের বিচারিক মুন্সিখানায় এসে পৌঁছায়। সোমবার সন্ধ্যায় আসামি পক্ষ সেটি পায়।
সংবাদমাধ্যমে শফিউজ্জামান রানার কারাদণ্ডের খবর প্রকাশিত হলে তথ্য অধিকার কমিশন বিষয়টি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়। এর অংশ হিসেবে তথ্য কমিশনার শহীদুল আলম ঝিনুক দুদিনের তদন্তে শেরপুরে আসেন।
তিনি কারাগারে আটক সাংবাদিক রানা, নকলার বাসায় গিয়ে রানার স্ত্রী বন্যা আক্তার ও দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে শাহরিয়ার জামান মাহিম, নকলার ইউএনও সাদিয়া উম্মুল বানিন ও ইউএনওর সিএ শিলা আক্তার, শেরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি রফিকুল ইসলাম আধার, সাধারণ সম্পাদক আদিল মাহমুদ উজ্জল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মানিক দত্তের সঙ্গে কথা বলেন।