মোঃ আসিফুজ্জামান আসিফ, ঢাকা ব্যুরো প্রধানঃ জুলাই গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিচারসহ তিন দফা দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার সংলগ্ন সড়কে ‘জুলাই গণহত্যা নিশ্চিত পরিষদ’ ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।
সমাবেশ শেষে সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল সড়ক হয়ে প্রধান ফটক (ডেইরি গেইট) সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে গিয়ে শেষ হয়। পরে বিকেল ৪টা ৬ মিনিট হতে ৪টা ২০মিনিট পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা।
এসময় শিক্ষার্থীরা অবিলম্বে জুলাই গণহত্যার সঙ্গে জড়িত খুনি ও দোসরদের চিহ্নিত করে গঠনমূলক সরকারি মামলা, সারাদেশে যত খুনি ও খুনিদের দোসর রয়েছে আগামী ৭ দিনের মধ্যে তাদের গ্রেফতার ও আগামী ৩ মাসের মধ্যে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সবার বিচার নিশ্চিতের দাবি জানায়।
বিক্ষোভ সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী নজরুল ইসলাম নাইমের সঞ্চালনায় নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষার্থী শোয়েব হোসেন বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের প্রায় দেড় মাস পার হয়ে গেলেও জুলাই গণহত্যায় জড়িত খুনিদের বিচারের দাবিতে আজকে আমাদের এখানে দাঁড়াতে হচ্ছে । গত ১৫ জুলাই আমাদের ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উপর যে হামলা করা হলো সেই ঘটনায় জড়িত কাউকে আমরা বিচারের আওতায় আনতে পারিনি, তারা ক্যাম্পাসে অবাধে ঘোরাফেরা করছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটা মব জাস্টিস হয়ে গেলো। এই দায় অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের ওপরেও বর্তায়।
আরও পড়ুনঃ বেতন ২৫ হাজারের দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল সাভার আশুলিয়া; ৫১ কারখানা বন্ধ
তিনি আরও বলেন, শামীম মোল্লা তার জবানবন্দিতে একজনের নাম বলেছে কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আমরা কোনো ধরনের গোষ্ঠীপ্রীতি মেনে নেব না। ১৫ জুলাই হামলায় যারা জড়িত ছিলো অনতিবিলম্বে তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং একই সাথে পুরো জুলাই মাস ধরে বাংলাদেশে যে গণহত্যা চালানো হয়েছে সেই গণহত্যায় জড়তি সকল খুনি ও দোসরদের বিচার করতে হবে। যদি আমরা এই বিচার করতে না পারি তাহলে আমাদের জুলাই বিপ্লবের যে স্পিরিট সেটা নষ্ট হয়ে যাবে।
মহাসড়ক অবরোধ চলাকালে নিহত আলিফ আহমেদ সিয়ামের বাবা বুলবুল কবির বলেন, ‘আমার ছেলে মারা যাওয়ার দেড় মাস পার হলেও এখন পর্যন্ত বিচার পাইনি। যারা এই গণহত্যায় জড়িত ছিলো তারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে কিন্তু তাদের বিচার করা হচ্ছে না। বাংলাদেশের প্রশাসন আমাদের সাথে প্রহসন করছে। আমাদের সাভার অঞ্চলে অনেকে শহীদ হয়েছে এই আন্দোলনে কিন্তু এই অঞ্চলে কাউকে এখনও গ্রেফতার করা হয় নাই। আমাদের ছেলে হারানোর দুঃখ তো আছেই সাথে যুক্ত হয়েছে বিচার না পাওয়ার দুঃখ। আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই শেখ হাসিনাসহ এই গণহত্যায় যারা জড়িত ছিলো তাদের সকলকে অতি দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে৷