ওমর ফারুক জিলন, জবি প্রতিনিধিঃ দৈনিক সংবাদের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মাহমুদ তানজীদের একটি প্রতিবেদনকে কেন্দ্র করে তাকে সহ সংবাদপত্রটির সম্পাদক ও প্রধান প্রতিবেদক বিরুদ্ধে মানহানীর মামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে সাংবাদিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা প্যারিসভিত্তিক সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার (আরএসএফ)। ভয় দেখাতে এসব সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এইরকম নিন্দনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে মনে করে সংগঠনটি।
শনিবার রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার (আরএসএফ) এক টুইট বার্তায(এক্স পোস্ট) এই মামলা দায়েরের ঘটনায় তাদের অবস্থান তুলে ধরেন।
তারা বলেন, দৈনিক সংবাদ পত্রিকার আহমেদ কবির, জুবায়ের, তানজীদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন নিয়ে একটি প্রতিবেদনের জের ধরে মানহানীর মামলা দায়ের করা হয়। আরএসএফ এর নিন্দা জানাই এবং এই সাংবাদিকদের ভয় দেখাতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়, যা অগ্রহণযোগ্য।
এর আগে গত ১১ অক্টোবর ”জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় : গোপনেই সব দখলে নিতে মরিয়া শিবির” শিরোনামে দৈনিক সংবাদে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়।
প্রতিবেদন ছাপার পর সেখানে উল্লেখ থাকা বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন তাদের উপর অন্য কোন ছাত্রসংগঠনের প্রভাব নেই দাবি করে এই প্রতিবেদনের নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দেন। এমনকি এই প্রতিবেদনের জের ধরে সাংবাদিক সমিতির পক্ষ থেকে একটি দৈনিক সংবাদের জবি প্রতিনিধি, সম্পাদক ও প্রধান প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে একটি মানহানীর মামলাও দায়ের করা হয়।
পরবর্তীতে শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) রাত জবি শাখা শিবিরের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে জবি ছাত্রশিবিরের ১৪ সদস্যের কমিটি সংগঠনটির প্যাডে এ কমিটি প্রকাশ করা হয়। এতে দেখা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের অফিস সম্পাদক হিসেবে আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. রিয়াজুল ইসলাম। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আবৃত্তি সংসদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। স্কুল, বিতর্ক ও তথ্য প্রযুক্তি সম্পাদক হিসেবে সমাজকর্ম বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাহিদ হাসান রাসেল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় রোভার স্কাউট গ্রুপের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। আইন সম্পাদক হিসেবে ইসলামের ইতিহাস বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সোহাগ হোসেন। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় হিউম্যান রাইটস সোসাইটির সহসভাপতি।
আরও পড়ুনঃ জবি রিপোর্টার্স ইউনিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক উম্মে রাহনুমা রাদিয়া
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদ পত্রিকার প্রতিবেদক মাহমুদ তানজীদ বলেন, ”আমার বিরুদ্ধে আনিত মানহানি অভিযোগ রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও ভিত্তিহীন, যা মুক্তচিন্তা এবং স্বাধীন সংবাদ প্রকাশের জন্য হুমকি। এটি গণমাধ্যমের কন্ঠরোধ করার একটি অপপ্রয়াস।”
তিনি আরো বলেন, ” সাংবাদিক সমিতির দপ্তর সম্পাদক পরিচয়ে একজন আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। তবে সাংবাদিক সমিতির মেয়াদ শেষ হইছে ২৭ ফেব্রুয়ারী, মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ৬ আগস্ট প্রশাসনের সিলগালা আদেশ অমান্য করে অফিসের তালা ভেঙে কার্যালয় দখল করে। নতুন নির্বাচনের জন্য ১৮ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন গঠন হয়। কমিশন গঠন হওয়ার পর সকল ক্ষমতা থাকে নির্বাচন কমিশনের হাতে। অটোমেটিক পূর্বের কমিটি বিলুপ্ত হয়ে যায়। আর কারো নাম উল্লেখ্য না করেও সাংগঠনটির নাম প্রতিবেদনে উল্লেখ্য করায় নাকি তাদের মানহানী হয়েছে। অথচ এইসব ঘটনার সবগুলোই বিশ্ববিদ্যালয় জানে এবং সত্য। এইসব মামলা স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য বড় বাধা”