নিউজ ডেস্কঃ শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ নিয়ে শুক্রবার রাতে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদারের পাঠানো প্রতিবাদপত্রে ইঙ্গিত মিলেছে যে, শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের প্রথম শ্রেণির নেতারা আজীবন নির্বাচনে নিষিদ্ধ হতে পারেন।
ড. মজুমদারের বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) আইনের অধীনে দায়ের করা মামলাগুলোর রায় এসব নেতাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে মুখ্য ভূমিকা পালন করবে। এ আইনে অপরাধী সাব্যস্ত হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়বেন এবং কোনো নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
আইসিটি প্রসিকিউটররা জানান, “নিউক্লিয়াস এবং সুপ্রিম কমান্ডারদের বিচারকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।” এর মানে, শেখ হাসিনাসহ শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলোর সুরাহা আগে হবে।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২-এর ১২ অনুচ্ছেদ এবং সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, আইসিটি আইনের অধীনে কোনো অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলে ওই ব্যক্তি সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। একই সঙ্গে ভোটার তালিকা আইন ১৩(ঘ) ধারা অনুযায়ী, ভোটার তালিকা থেকেও তাঁদের নাম বাদ পড়বে।
নির্বাচনী এবং ফৌজদারি অপরাধে দণ্ডিত ব্যক্তি নির্দিষ্ট সময় পরে প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা পুনরায় অর্জন করতে পারেন। তবে আইসিটি আইনের ক্ষেত্রে এই বিধান প্রযোজ্য নয়।
আরও পড়ুনঃ টঙ্গীতে বেইলি ব্রিজ ভেঙে ট্রাক নদীতে, বিকল্প পথে চলাচলের নির্দেশ
গত বৃহস্পতিবার রংপুরে ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছিলেন, “তাদের জন্য কোনো বাধা সৃষ্টি হয়েছে বলে আমি দেখছি না।” তবে ওই দিন রাতের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি স্পষ্ট করেন, আইসিটি আইনের মামলাগুলোর ওপর নির্ভর করছে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণের ভবিষ্যৎ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ব্যাপক প্রাণহানি, গুম এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এসব মামলার ভিত্তি। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, এসব অভিযোগ আইনের মাধ্যমে প্রমাণিত হলে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কার্যক্রম চিরতরে বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতি আওয়ামী লীগের জন্য এক বড় রাজনৈতিক সংকট তৈরি করেছে। দলটির ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে আইসিটি আইনের মামলাগুলোর রায় এবং নির্বাচন কমিশনের পদক্ষেপের ওপর।