
মোহাম্মদ ইসমাইল, চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ দেশের জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে আনার জন্য সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের গুরুত্ব তুলে ধরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “এখন আমাদের প্রথম কাজ হবে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা। গণতন্ত্র ফিরে আনতে হলে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকার গঠন করতে হবে। জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে।”
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকালে নগরীর কাজীর দেউরীস্থ আলমাস সিনেমার সামনে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির র্যালী পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, “নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের মালিকানার ভিত্তিতে আগামীর বাংলাদেশ হবে জনপ্রতিনিধিত্বমূলক। সেই সংসদের মাধ্যমে দেশের মানুষের চাওয়া-পাওয়ার কথা বলা যাবে, যা এখন কেউ বলতে পারছে না।”
এর আগে তার নেতৃত্বে আলমাস সিনেমার সামনে থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে কাজীর দেউরী, জুবলী রোড়, এনায়েত বাজার, তিন পুলের মাথা হয়ে নিউ মার্কেট মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ্ব এরশাদ উল্লাহর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব নাজিমুর রহমানের পরিচালনায় সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম।
বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর ও বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শামসুল আলম।
আমীর খসরু বলেন, “নির্বাচন প্রক্রিয়ায় গণতন্ত্র ফেরার পথে যদি কেউ বাধা দেয়, তবে তা মানে গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করা এবং মানুষের সংবিধানিক অধিকার কেড়ে নেওয়া। সুতরাং ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।”
তিনি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বের দৃষ্টান্ত তুলে ধরে বলেন, “তারেক রহমান দেশের মানুষের কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার উন্নয়নে বিশাল পরিকল্পনা নিয়েছেন। দায়িত্ব পেলে বিএনপি সরকার প্রথম ১৮ মাসে এক কোটি চাকরি সৃষ্টি করবে এবং প্রাথমিক চিকিৎসা বিনামূল্যে দেবে।”
তিনি আরও বলেন, “দেশের অর্থনীতিকে গণতন্ত্রায়ণ করতে হবে। যাতে প্রত্যেক মানুষ উন্নয়নের সহযোগী হতে পারে এবং নিজেদের জীবনমান উন্নত করতে পারে। আজকে ধানের শীষের জোয়ার শুরু হয়েছে, এই জোয়ার কেউ আটকাতে পারবে না।”
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “গ্রামে গঞ্জে গিয়ে তারেক রহমানের নির্দেশিত খালকাটা প্রকল্প হাতে নিতে হবে। খাল কেটে পানির নিষ্কাশন নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া ৩০ কোটি গাছ লাগানোর কর্মসূচিও বাস্তবায়ন করতে হবে।”
সমাবেশে মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, “আমরা এখন নির্বাচনের সড়কে ঢুকেছি। জনগণ ধানের শীষের অপেক্ষায় আছে। এই গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে কেউ যাতে বাধাগ্রস্ত করতে না পারে, সেদিকে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।”
ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, “১৬ বছর ধরে বিএনপির নেতৃত্বে মানুষ ভোটাধিকার রক্ষার সংগ্রাম করেছে। শেখ হাসিনামুক্ত বাংলাদেশে ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে গণতন্ত্রবিরোধী শক্তিকে আর জায়গা দেওয়া হবে না।”
আরও পড়ুনঃ রাবিতে ছাত্রদলের উপর গুপ্তরা হামলা করেছে, ইবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক
ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, “ঐক্যবদ্ধ থেকে আগামী নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। কোনো শক্তি যাতে নির্বাচনে বাধা দিতে না পারে, সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে।”
সভাপতির বক্তব্যে এরশাদ উল্লাহ বলেন, “একটি মহল জনগণকে বাইরে রেখে রাজনীতি করে। শেখ হাসিনার মতো তারা আবারও মানুষের অধিকার কেড়ে নিতে চায়। কিন্তু দেশের মানুষ তা মেনে নেবে না।”
আবুল হাশেম বক্কর বলেন, “প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই দিনে শপথ নিতে হবে—ঘরে ঘরে গিয়ে মানুষের কাছে বিএনপির গণতান্ত্রিক রূপরেখা পৌঁছে দিতে হবে।”
এতে আরও বক্তব্য রাখেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইদ্রিস মিয়া, সদস্য সচিব লায়ন হেলাল উদ্দিন, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ আজিজ, এডভোকেট আবদুস সাত্তার, এস এম সাইফুল আলম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মুজিবুর রহমান চেয়ারম্যান প্রমুখ।