spot_img

― Advertisement ―

spot_img

ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর নেতৃত্বে ন্যাশনস লিগ শিরোপা পর্তুগালের হাতে

স্পোর্টস ডেস্ক: ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে যুক্ত হলো আরও একটি গৌরবময় অধ্যায়। ইউরোপীয় শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চ উয়েফা ন্যাশনস লিগে স্পেনকে রুদ্ধশ্বাস এক ফাইনালে হারিয়ে শিরোপা...
প্রচ্ছদকলামভিন্নমত" ইবির ৪৫পেরিয়ে ৪৬-এ পদার্পণ"

” ইবির ৪৫পেরিয়ে ৪৬-এ পদার্পণ”

“তুমি চির যৌবনাই রয়ে যাও
তোমার হরিৎ পল্লব সমাহার
ঐ রৌদ্রাভাব চমকিত আঁখি,
মিলেমিশে হোক একাকার।”

স্বাধীন বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত প্রথম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ।একুশ শতকের উপযোগী বিশ্বমানের গ্র‌্যাজুয়েট ও দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির ভিশন নিয়ে ছুটে চলছে দেশের দক্ষিণ – পশ্চিমাঞ্চলের সর্বোচ্চ এই বিদ্যাপীঠ।

২২ নভেম্বর (শুক্রবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৬ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পেছনে রয়েছে বৃহৎ ইতিহাস। ১৯৭৯ সালের ২২ নভেম্বর কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ শহর থেকে যথাক্রমে ২৪ ও ২২ কিলোমিটার দূরে শান্তিডাঙ্গা-দুলালপুর নামক স্থানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। কিন্তু প্রতিষ্ঠার পর স্থানান্তর জটিলতায় পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি।

১৯৮৩ সালের ১৮ জুলাই এক অধ্যাদেশে শান্তিডাঙ্গা-দুলালপুর থেকে গাজীপুরের বোর্ড বাজারে স্থানান্তর করা হয়। পরে ১৯৯০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়টি গাজীপুর থেকে আবার শান্তিডাঙ্গা-দুলালপুরে ফিরে আসে। জাতীয় সংসদে ১৯৮০ সালের ২৭ ডিসেম্বর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় আইন ১৯৮০ (৩৭) পাস হলে শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যাবলি পরিচালনায় স্বায়ত্ত্বশাসন প্রদান করা হয়।

পরে ১৯৮১ সালে ১ জানুয়ারি প্রথম উপাচার্য হিসেবে ড. এ এন এম মমতাজ উদ্দিন চৌধুরীকে নিযুক্ত করা হয়। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৮৬ সালের ২৮ জুন তাদের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করে এবং ১৯৮৫-৮৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে ৪টি বিভাগে ৮ জন শিক্ষক ও ৩০০ শিক্ষার্থী নিয়ে শুরু হয় শিক্ষা কার্যক্রম। এর পর থেকে গুটিগুটি পায়ে এগোতে থাকে শিক্ষা কার্যক্রম। বর্তমানে ৮টি অনুষদের অধীনে ৩৬টি বিভাগ নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

স্থাপত্য ও নন্দন শৈলীতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় অনন্য। সবুজে ঘেরা ১৭৫ একরে রয়েছে সুবিশাল স্মৃতিসৌধ, শহীদ মিনার, সততার ফোয়ারা , মুক্ত বাংলা ভাস্কর্যসহ আরও অনেক দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা। আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে ৮টি হল। যার মধ্যে ছেলেদের ৫টি ও মেয়েদের ৩ টি। এছাড়াও নতুন কয়েকটি হলের নির্মাণ কাজ চলমান। রয়েছে চিকিৎসা কেন্দ্র, ব্যায়ামাগার ও কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার। রয়েছে ক্যাম্পাস ভিত্তিক সর্ববৃহৎ মসজিদ ও দৃষ্টিনন্দন মফিজ লেক। শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার জন্য রয়েছে সুবর্ণ সুযোগ। বর্তমানে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীতে বই রয়েছে প্রায় এক লক্ষ ২৩ হাজার।

এছাড়াও জার্নাল, ম্যাগাজিন এবং নিউজ পেপার এর সংখ্যা ১৯ হাজার (প্রায়)। এদিকে শিক্ষা ও গবেষণা ক্ষেত্রে সহযোগিতা বিনিময়ের লক্ষ্যে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সমঝোতা স্মারক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। শিক্ষা ও গবেষণার পাশাপাশি ক্রীড়াক্ষেত্রেও বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে ঈর্ষণীয় সাফল্য। আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ভলিবল, ফুটবল, ক্রিকেট, হ্যান্ডবল, বাস্কেটবল, অ্যাথলেটিকস ও ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। সহশিক্ষা কার্যক্রম এর অংশ হিসেবে রয়েছে বিভিন্ন সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। বিশ্ববিদ্যালয় এর সাংস্কৃতিক ও সামাজিক উন্নয়নে সংগঠন গুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

আরও পড়ুনঃ ইবিতে সমাবর্তন শূণ্য অর্ধযুগ; আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির অপেক্ষায় বারো হাজার শিক্ষার্থী

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় তার দীর্ঘ পথ চলায় কালের অবিচল সাক্ষী হয়ে সগৌরবে উচ্চ শিক্ষার প্রদীপ্ত মশাল নিয়ে ছুটে চলেছে দেশের প্রতিটি প্রান্তরে। এই পথ চলার মাঝে রয়েছে অনেক প্রাপ্তি, অপ্রাপ্তি ও গৌরব। সকল অপ্রাপ্তি গুলোকে পাশ কাটিয়ে প্রত্যাশার জায়গা পরিস্ফুটিত হোক। শিক্ষা গবেষণা ও আদর্শিক রাজনৈতিক চর্চায় এগিয়ে যাক প্রাণের বিদ্যাপীঠ । নিরসন হোক আবাসন সংকট , শ্রেণিকক্ষ, যানবাহন ও সেশনজট নামক অভিশাপ এবং প্রশাসনিক জটিলতাসহ যাবতীয় প্রতিবন্ধকতা। প্রতিটি ক্ষেত্রে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় পদচারণা করুক অপ্রতিরোধ্য গতিতে। হাজারো স্বপ্নসারথীর স্বপ্নের সোপান হয়ে এগিয়ে যাক প্রাণের এই বিদ্যাপীঠ।

লিখেছেনঃ মো: রবিউস সানি জোহা
শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।