
তানিম তানভীর, ইবি প্রতিনিধিঃ আসন্ন অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হতে যাচ্ছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০২১-২২ বর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসানের প্রথম উপন্যাস ‘ইতি’। সাগরিকা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত এ উপন্যাসটি শীঘ্রই প্রি-অর্ডার ও রকমারিসহ অন্যান্য অনলাইন বুকশপে পাওয়া যাবে। বরগুনার আমতলীর এই শিক্ষার্থী তার লেখালেখির যাত্রা, বই প্রকাশের অনুভূতি ও তরুণ প্রজন্মের প্রতি বার্তা নিয়ে কথা বলেছেন আলোকিত দর্পণের ইবি প্রতিনিধি তানিম তানভীরের সঙ্গে। এসময় তাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করা হলে তিনি যা জানান…
বই বইমেলায় উপন্যাস প্রকাশিত হওয়ার অনুভূতি কেমন?
নাজমুল হাসান বলেন, “নিজের লেখা বই বইমেলায় প্রকাশিত হওয়া যে কোনো লেখকের জন্যই এক বিশেষ আনন্দের অনুভূতি। এটি আমার জন্য স্বপ্নপূরণের মুহূর্ত। এতদিনের ভাবনা, লেখা ও পরিশ্রম শেষে যখন বইটি পাঠকের হাতে পৌঁছাবে, তখন সেই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন।”
বই প্রকাশের সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন কীভাবে?
সমাজের অসঙ্গতি ও বাস্তব জীবনের জটিলতা আমাকে ভাবায়, মনকে গভীরভাবে নাড়া দেয়। এই অস্থিরতা ও অসঙ্গতি আমাকে প্রতিনিয়ত পীড়া দেয়। এগুলো নিয়ে নিরন্তর লিখতে চেয়েছি। একসময় অনুভব করলাম, আমার লেখাগুলো কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ না থেকে পাঠকের কাছে পৌঁছানো উচিত। তাই কলমই আমার একমাত্র আশ্রয়, লেখাই আমার সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিবাদ।
তখনই সিদ্ধান্ত নেই উপন্যাসটি প্রকাশ করার, যেন পাঠকরাও আমার ভাবনা, অনুভূতি ও বাস্তবতার চিত্র উপলব্ধি করতে পারেন।
বইটি প্রকাশ করতে কোনো বাঁধার সম্মুখীন হয়েছেন?
প্রথম বই প্রকাশের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ থাকবেই। পাণ্ডুলিপি প্রস্তুত করা থেকে শুরু করে প্রকাশক খোঁজা, মানসম্মত সম্পাদনা ও কাভার ডিজাইনের মতো বিষয়গুলোতে অনেক সময় ও পরিশ্রম করতে হয়েছে। কখনো মনে হয়েছে হয়তো পেরে উঠবো না, তবে নিজের উপর বিশ্বাস ছিল।
উপন্যাসটির ‘ইতি’ নামকরণের কারণ কি ও এর সার্থকতা কোথায়?
‘ইতি’ নামকরণের বিষয়ে নাজমুল বলেন, “ইতি মানে শেষ। তবে শেষ মানেই সবকিছুর শেষ নয়। বরং এটি নতুন শুরুর ইঙ্গিত দেয়। আমার উপন্যাসেও জীবনের কিছু অধ্যায়ের শেষ এবং সেখান থেকে নতুন কিছু শুরু হওয়ার গল্প তুলে ধরা হয়েছে।”
আরও পড়ুনঃ বেক্সিমকোর কারখানা পুনরায় চালুর দাবিতে আশুলিয়ায় শ্রমিকদের গণসমাবেশ
তরুণ লেখকদের কিসে গুরুত্ব দিতে পরামর্শ দিবেন?
তরুণ লেখকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “লেখালেখির প্রতি ভালোবাসা এবং সমাজের বাস্তবতাকে উপলব্ধি করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত পড়া এবং চর্চার মাধ্যমে আত্মবিশ্বাস বাড়ানো উচিত। পাশাপাশি সমালোচনাকে গ্রহণ করে তা থেকে শেখার মানসিকতা রাখতে হবে।”
উপন্যাসের গুরুত্বপূর্ণ কোনো ঘটনা বলা যাবে?
উপন্যাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত সম্পর্কে তিনি বলেন, “এক পর্যায়ে প্রধান চরিত্র বুঝতে পারে, যার উপর সে সবসময় নির্ভর করত, সেই ব্যক্তি আসলে তার জীবনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই উপলব্ধি তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। সে সিদ্ধান্ত নেয় পুরোনো সম্পর্কের ইতি টেনে নতুনভাবে জীবন শুরু করার।”
লেখক নাজমুল হাসান তার বক্তব্যে তরুণ প্রজন্মের প্রতি আত্মবিশ্বাসী থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আমরা সবাই মিলে লেখালেখির মাধ্যমে সমাজের অসঙ্গতি তুলে ধরে তা পরিবর্তনের পথ দেখাতে পারি।”
এবারের একুশে বইমেলায় ‘ইতি’ পাঠকদের নতুন কিছু ভাবনার খোরাক জোগাবে বলে আশা করছেন লেখক।