মোঃ মুজাহিদুল ইসলাম, রাজশাহী কলেজ প্রতিনিধিঃ রাজশাহী কলেজের মুসলিম ছাত্রাবাসে সাতটি বিল্ডিংয়ের নাম সাতজন বীরশ্রেষ্ঠের নামে রাখা হলেও সেগুলোর পরিচিতি মূলত ইংরেজি বর্ণমালার ভিত্তিতে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে বীরশ্রেষ্ঠদের নাম সম্পর্কে অসচেতনতা ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। ছাত্রাবাসে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা বিল্ডিংগুলো সাধারণত এ, বি, সি, ডি, ই, এফ, এবং জি নামে চিনেন, যা তাদের আসল নামের ঐতিহাসিক তাৎপর্য ম্লান করে দিচ্ছে।
ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থী মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, “বীরশ্রেষ্ঠদের নামের মাধ্যমে বিল্ডিংগুলো পরিচিত হওয়া উচিত। কিন্তু আমরা সাধারণত ইংরেজি বর্ণমালার নাম ব্যবহার করি। এটি আমাদের দায়িত্বশীলতার অভাবকেই প্রমাণ করে।”
এক শিক্ষার্থী, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, অভিযোগ করে বলেন, “হোস্টেলের স্যাররাই নোটিশে বিল্ডিংগুলোর নাম ইংরেজি বর্ণমালায় উল্লেখ করেন। তাদের কাছ থেকেই শিক্ষার্থীরা এ অভ্যাস রপ্ত করে।”
রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. যহুর আলী জানান, “ছাত্রাবাসের শুরুর দিকে বিল্ডিংগুলোর নাম ইংরেজি বর্ণমালার ভিত্তিতে রাখা হয়েছিল। পরবর্তীতে সাতজন বীরশ্রেষ্ঠের নামে নামকরণ করা হয়। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে সেগুলো ব্যবহারে কিছুটা শিথিলতা আছে, যা পরিবর্তন করা প্রয়োজন।”
সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর মহা. হাবিবুর রহমান বলেন, “বীরশ্রেষ্ঠদের নামে বিল্ডিংগুলোর নামকরণ একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। অফিসিয়াল কাজকর্মে এই নামগুলো ব্যবহার করা না হলে এটি তাদের প্রতি অসম্মান হবে। কলেজ প্রশাসন যেন সব নোটিশ ও নথিপত্রে বীরশ্রেষ্ঠদের নাম ব্যবহার নিশ্চিত করে।”
আরও পড়ুনঃ চকবাজারে ঐতিহ্যবাহী অলি খাঁ মসজিদের সম্মুখে ইসলামিক মন্যুমেন্ট উদ্বোধন
বীরশ্রেষ্ঠদের নামে বিল্ডিংগুলো: বীরশ্রেষ্ঠ মোহাম্মদ মোস্তাফা কামাল ভবন, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ ভবন, বীরশ্রেষ্ঠ মোহাম্মদ রুহুল আমিন ভবন, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুর রউফ ভবন, বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ভবন, বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান ভবন, বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর ভবন।
ছাত্রাবাসের বর্তমান অবস্থা বীরশ্রেষ্ঠদের প্রতি শ্রদ্ধার ঘাটতির ইঙ্গিত দেয়। প্রশাসনের উদ্যোগ ও শিক্ষার্থীদের সচেতনতা ছাড়া বীরশ্রেষ্ঠদের স্মৃতি সংরক্ষণ অসম্ভব হয়ে পড়বে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত এ বিষয়ে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া।