
মোঃ সাকিবুল ইসলাম স্বাধীন, রাজশাহী প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় ইউএনও কার্যালয়ের উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান নারীসহ হাতেনাতে আটক হয়েছেন। উপজেলা আবাসিক ভবনে ইউএনওর কাজের মেয়ের সঙ্গে অসামাজিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকার সময় জনতার হাতে ধরা পড়েন তিনি।
২৭ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যা ৬টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়।
বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছাড়া পেলেও ভাইরাল ভিডিওতে ক্ষুব্ধ হাফিজুর
স্থানীয়রা জানান, ঘটনাস্থলে উপস্থিত জনগণের সম্মানের দোহাই দিয়ে বিবস্ত্র অবস্থায় আটক হওয়া নারীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেন হাফিজুর রহমান। এ মুচলেকা দেওয়ার পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
তবে পরবর্তীতে ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে ক্ষুব্ধ হন তিনি। এরপর তিনি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা ও বিভিন্নভাবে হয়রানি করার হুমকি দিতে থাকেন।
মামলার ভয় দেখিয়ে চাপ সৃষ্টি
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভাইরাল ভিডিও ফুটেজ অপসারণ না করলে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা করার হুমকি দিচ্ছেন হাফিজুর রহমান। এমনকি সাবেক ও বর্তমান ইউএনওকে ব্যবহার করে সবাইকে ফাঁসানোরও হুমকি দেন তিনি।
এ বিষয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান বলেন, “আমি মামলা করবো। আমি ওসিকে বিষয়টি জানালাম। ইউএনও স্যারকেও জানালাম। তাঁরা আমাকে মামলা করার পরামর্শ দিয়েছেন।”
এ প্রসঙ্গে গোদাগাড়ী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রুহুল আমিন বলেন, “আমার কাছে কারও কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ আসলে সঠিক তদন্ত হবে। প্রকৃত দোষী যেই হবে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আরও পড়ুনঃ নগরীতে ৪৭২টি সড়ক উন্নয়নের ঘোষণা চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত
তবে এ বিষয়ে গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল আহমেদ এর মতামত জানতে ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।
প্রশাসনিক কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান গোদাগাড়ী ইউএনও অফিসের অনিয়ম ও দুর্নীতির মূলহোতা বলে পরিচিত। এর আগেও ২০২৪ সালের ১৮ আগস্ট বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের কাছে তার নানা অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে অভিযোগ করা হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, তবে প্রভাবশালী মহলের ছত্রচ্ছায়ায় থাকায় তিনি স্বপদে বহাল আছেন। সেই অভিযোগেও নারী কেলেঙ্কারির ঘটনা উল্লেখ করা হয়। চারজন ব্যক্তির স্বাক্ষরিত অভিযোগটি এখনও কোনো তদন্তের মুখ দেখেনি।
এ বিষয়ে হাফিজুর রহমান দাবি করেন, “সেই অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।”
তবে সাম্প্রতিক ঘটনায় নতুন করে আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে এবং এলাকার জনগণের দাবি, তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।