
মোঃ মুজাহিদুল ইসলাম, রাজশাহী কলেজ প্রতিনিধিঃ রাজশাহী কলেজ হোস্টেলের অতিরিক্ত সিট ভাড়া কমানোর দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন।
বুধবার (১৪ মে) সকাল ১১টায় কলেজ প্রশাসন ভবনের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা সরাসরি কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মু. যহুর আলীর সামনে তাদের ক্ষোভ ও দাবি তুলে ধরেন।
মানববন্ধনে বক্তৃতাকালে শিক্ষার্থীরা বলেন, “একসময় হোস্টেলের সিট ভাড়া ছিল ৫০০ টাকা। কিন্তু ৫ আগস্টের পর তা বাড়িয়ে ৭০০ টাকা করা হয়। একটি সরকারি কলেজে অতিরিক্ত এই ভাড়া আদায় কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়। এটি শিক্ষার্থী স্বার্থবিরোধী এবং অযৌক্তিক সিন্ডিকেট সিদ্ধান্ত।”
তারা অভিযোগ করে বলেন, “বিগত সময়ে ছাত্রলীগের সিট বাণিজ্যের সময়কালে হোস্টেলের বিদ্যুৎ বিলসহ বিভিন্ন খাতে অনেক টাকা বকেয়া পড়ে। বর্তমান হোস্টেল প্রশাসন সেই বকেয়া টাকা মেটাতে আবাসিক শিক্ষার্থীদের ঘাড়ে অতিরিক্ত ভাড়ার বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে। প্রিপেইড মিটার চালু করার পর প্রতিমাসে একজন শিক্ষার্থীকে ১ হাজার টাকার ওপরে খরচ করতে হচ্ছে, যা মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীদের জন্য বড় চাপ।”
এসময় ঢাকা কলেজের উদাহরণ টেনে শিক্ষার্থীরা বলেন, “ঢাকা কলেজে সর্বোচ্চ সুবিধা থাকা সত্ত্বেও সেখানে সিট ভাড়া ৪০০ টাকা। অথচ রাজশাহী কলেজে সেই ভাড়া ৭০০ টাকা! দেশের সেরা কলেজের শিক্ষার্থীদের এভাবে শোষণ করা কাম্য নয়।”
শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দেন, “আমরা আগামী ২২ মে পর্যন্ত সময় দিচ্ছি। এর মধ্যে সিট ভাড়া যৌক্তিক পর্যায়ে না নামালে আমরা আরও বৃহত্তর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।”
রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক খালিদ বিন ওয়ালিদ (আবির) বলেন, “৫ আগস্টের পর যখন আমরা হোস্টেল সংস্কারে সহযোগিতা করেছিলাম, তখন প্রশাসন বলেছিল এক বছরের মধ্যে ভাড়া কমানো হবে। কিন্তু এখন এক বছর পেরিয়ে গেছে, তবুও তারা কথা রাখেনি। আমরা জানতে চাই, কেন এই প্রতারণা?”
তিনি দ্রুততম সময়ে একটি ন্যায্য ভাড়া নির্ধারণের দাবি জানান।
আরও পড়ুনঃ ইবির খালেদা জিয়া হল ডিবেটিং সোসাইটির নতুন নেতৃত্বে তাজমিন ও মুমতাহিনা
এছাড়াও কলেজ শাখা ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, “এই বাড়তি ভাড়া শিক্ষার্থীদের জন্য চরম বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি কোনো ব্যবসার জায়গা নয়— এটি সাধারণ শিক্ষার্থীদের আবাসস্থল। তাই হোস্টেল প্রশাসনকে দ্রুত এই বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে।”
শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রাজশাহী কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মু. যহুর আলী আশ্বাস দিয়ে বলেন, “আগামী ২২ মে আমরা আবাসিক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসবো। শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে একটি যৌক্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।”
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, তারা চান প্রশাসন যেন শিক্ষার্থীদের দৃষ্টিভঙ্গি ও বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে একটি সমাধানে পৌঁছায়।