খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) কমিশনার মোজাম্মেল হকের পদত্যাগ দাবি করেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের পরিণতি দেখে বিএনপি নেতাদের শিক্ষা নিয়ে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
পুলিশ যখন আন্দোলনকারীদের আটক করে নিয়ে গেছে তখন আওয়ামী লীগের অনেক নেতা আশপাশ দিয়ে ঘুরেছেন উল্লেখ করে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, ‘ওই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদ করতে পারেনি পুলিশ। আমরা আপনার মতো পুলিশ কমিশনার এই খুলনায় চাই না। আমরা আপনার পদত্যাগ চাই। শুধু আপনি নন, ওই দিন যেসব প্রশাসনিক কর্মকর্তা ছিলেন তাদের সবাইকে বদলি করতে হবে।’
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) বিকেল পৌনে ৬টার দিকে কেএমপি সদর দপ্তরে স্থানীয় রাজনীতিবিদ ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তারা।
শিক্ষার্থীরা পুলিশ কমিশনারকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘১৬ বছর ধরে জনগণকে একত্র করে বিএনপি আন্দোলন করতে পারেনি। আমরা যখন অরাজনৈতিকভাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে আন্দোলন শুরু করেছি তখন জনগণও আমাদের সঙ্গে আসছে। আমরা আপনাদের (পুলিশের) আওয়ামী লীগের স্বৈরাচার সরকারের পা চাটা রূপ দেখেছি। আমরা যখন অরাজনৈতিকভাবে দেশটি সংস্কার করছি, আপনারা তখন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে এখানে কী সভা করছেন?’
তারা আরও বলেন, ‘আপনার প্রশাসন লেজুড়বৃত্তিক প্রশাসন। এ প্রশাসন যদি ভবিষ্যতে থাকে, আমরা আশঙ্কা করছি সাধারণ ছাত্রসমাজ একই ঘটনার সম্মুখীন হব। শহিদের রক্ত এখনো শুকাতে পারেনি আর একটি দল এরই মধ্যে সমাবেশ শুরু করে দিয়েছে। আপনারা তাদের সঙ্গে বসেন।’
আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম আলেম উপদেষ্টা মাওলানা খালিদ হোসেন
সভায় পুলিশ কমিশনারের এক পাশে খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম (মনা), অন্য পাশে সদস্যসচিব শফিকুল আলম (তুহিন)সহ বিএনপি ও জামায়াতের নেতারা বসেছিলেন। এটা নিয়ে পুলিশ প্রশাসনের ওপর ক্ষোভ ঝাড়েন শিক্ষার্থীরা।
খুবি শিক্ষার্থী জহুরুল তানভীর বলেন, ‘আপনারা এত দিন একটি রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করেছেন। এখন আরেকটা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বসে আমাদের সঙ্গে সভা করার জন্য ডেকেছেন। আপনাদের চাটুকারিতা কমেনি। আমরা চাটুকার পুলিশ কর্মকর্তাদের বদলি চাই। আপনারা নিজ বিভাগের মধ্যে সংস্কার করেন। চাটুকারিতা বাদ দেন।’
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে খুবি শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘শহরে যত অরাজকতা হচ্ছে, এর সঙ্গে আপনাদের নাম আসছে। আওয়ামী লীগের পরিণতি দেখে আপনারা শিক্ষা নিচ্ছেন না কেন? আপনারা যদি ইতিহাস থেকে শিক্ষা না নেন, তাহলে ভবিষ্যতে আপনাদেরই ক্ষতি হবে।’
শিক্ষার্থীদের এসব কথার জবাবে নগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম বলেন, ‘সাম্প্রতিক যেসব সহিংসতা ঘটেছে, এতে যদি বিএনপির কোনো কর্মী জড়িত থাকে, তাহলে তাদের বিচার করা হবে।’